নতুন অর্থবছরে সারের ক্ষেত্রে সরকার ১৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেবে। যা গত অর্থ বছরের তুলনায় ৪ হাজার কোটি টাকা বেশি ভর্তুকি।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী হিসেবে তার এটি চতুর্থ বাজেট। এবার ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা।

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে সার বাবদ ভর্তুকির পরিমাণ প্রাক্কলন করা হয়েছিল মোট ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। কিন্তু মে ২০২১ এর তুলনায় মে ২০২২ সময়ে অন্যান্য সারের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে- ডিএপি ৪৭ শতাংশ, এমওপি ১৭৭ শতাংশ এবং টিএসপি ৫৭ শতাংশ। এ মূল্য বৃদ্ধির কারণে সব ধরনের সার মিলিয়ে ২০২১-২২ অর্থবছরের ভর্তুকির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকায়। আগামী অর্থবছরেও সারের ক্ষেত্রে সরকার ১৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেবে।

তিনি আরও বলেন, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আমরা এ খাতে ভর্তুকির পাশাপাশি প্রণোদনা ও পুনর্বাসন সহায়তা প্রদান করছি। পাশাপাশি কৃষিজাত সামগ্রী রপ্তানির ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ নগদ প্রণোদনা ও কৃষি ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ চালিত সেচ যন্ত্রের ব্যবহারের জন্য বিদ্যুৎ বিলের ওপর ২০ শতাংশ রিবেট দেওয়া হচ্ছে। ডাল, তেল, মসলা, ভুট্টাসহ ২৪টি ফসল উৎপাদনের জন্য সুদ ভর্তুকির আওতায় বিদ্যমান ৪ শতাংশ সুদে বিশেষ কৃষিঋণ আগামী অর্থবছরেও অব্যাহত রাখা হবে। কৃষিতে বিনিয়োগের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে প্রতিবছরই কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতি ও কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া একাদশ জাতীয় সংসদের অষ্টাদশ অধিবেশনে (বাজেট) উপস্থিত রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা, সংসদ সদস্যরা।

‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ স্লোগান নিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট জাতীয় সংসদে পেশ করা হয়েছে। নতুন এ বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এতে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে রাখার কথা বলা হচ্ছে। প্রস্তাবিত বাজেটের আকার চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেশি। আর সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৮৪ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা বেশি। নতুন বাজেটে সরকারের আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হতে যাচ্ছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। আর অনুদানসহ ঘাটতি ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। 

আয়ের লক্ষ্যমাত্রা চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের তুলনায় ৪৪ হাজার ৭৯ কোটি টাকা বেশি। কর বাবদ ৩ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা আয় করার পরিকল্পনা করছে সরকার। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে এনবিআরকে আগের বছরের তুলনায় ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দিচ্ছে সরকার। এনবিআর বহির্ভূত কর থেকে আয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। আর কর ছাড়া আয় ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি। বৈদেশিক অনুদান থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা।

এএসএস/এসএম