দেশে শারীরিক এবং মানসিক ত্রুটি নিয়ে জন্ম হওয়া শিশুদের বিকাশজনিত সমস্যায় সেবা দিতে ১৫টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ৯টি জেলা হাসপাতালসহ মোট আরও ২৪টি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে শিশু বিকাশকেন্দ্র চালু হচ্ছে। এর আগে ১৬টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ মোট ২৩টি শিশু বিকাশকেন্দ্র চালু ছিল।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন শুরু করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
 
বাজেট বক্তব্যে তিনি বলেন, সরকার অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রায় ১.৩৩ লাখ অটিস্টিক শিশুকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ঢাকা শিশু হাসপাতালসহ ১৬টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু বিকাশ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে এবং আরও ১৫টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ৯টি জেলা হাসপাতালে তা স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, কোভিডকালীন অটিস্টিক শিশুদের নিরাপত্তা ও উন্নয়নের জন্য ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং আগামী অর্থবছরেও আমরা প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রাখব।

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে থেরাপিউটিক সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে বিদ্যমান ১০৩টি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের বাইরে আরও ২১১টি কেন্দ্র স্থাপনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়া দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী এবং প্রতিবন্ধিতার ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের ৪০টি মোবাইলথেরাপি ভ্যানের মাধ্যমে বিনামূল্যে থেরাপিউটিক সেবা দেওয়া হচ্ছে।

‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ স্লোগান নিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট জাতীয় সংসদে পেশ করা হয়েছে। নতুন এ বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এতে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে রাখার কথা বলা হচ্ছে। প্রস্তাবিত বাজেটের আকার চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেশি। আর সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৮৪ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা বেশি। নতুন বাজেটে সরকারের আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হতে যাচ্ছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। আর অনুদানসহ ঘাটতি ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা।

আয়ের লক্ষ্যমাত্রা চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের তুলনায় ৪৪ হাজার ৭৯ কোটি টাকা বেশি। কর বাবদ ৩ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা আয় করার পরিকল্পনা করছে সরকার। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে এনবিআরকে আগের বছরের তুলনায় ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দিচ্ছে সরকার। এনবিআর বহির্ভূত কর থেকে আয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। আর কর ছাড়া আয় ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি। বৈদেশিক অনুদান থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা।

টিআই/এসএম