বাংলাদেশে যেসব ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদিত হয় তা বিদেশ থেকে আমদানিতে নিরুৎসাহিত করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, বাংলাদেশে উৎপাদিত ইলেকট্রনিক্স পণ্য দেশ থেকেই কিনতে হবে।

শুক্রবার (১০ জুন) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অর্থ মন্ত্রণালয় আয়োজিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটোত্তর সাংবাদিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

মুস্তফা কামাল বলেন, দেশের ভেতরে যেসব পণ্য উৎপাদিত হয়, সেগুলো যদি আমাদের ব্যবহারে লাগে তাহলে উৎপাদন আরও বৃদ্ধি করা হোক। এসব পণ্য বিদেশ থেকে আনা আমরা ভালোভাবে দেখছি না। এগুলো দেশ থেকেই কিনতে হবে। বিদেশ থেকে এসব পণ্য আনার চেষ্টা যেন না করা যায়, সে বিষয়ে আমরা নিরুৎসাহিত করছি। আমরা এভাবেই ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ কনসেপ্টটা এগিয়ে নিয়ে যাব।

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, এই অর্থবছরে অনেক চড়াই-উৎরাই আসবে। তবে এবারের বাজেট বাস্তবায়ন হলে দেশের অর্থনীতি আগের তুলনায় অনেক শক্তিশালী হবে।

ট্রুথ কমিশন বিষয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই

ট্রুথ কমিশন যখন গঠন করা হয়েছিল, তখন এটা সংসদে বলা হয়েছিল। এই বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট আইন ছিল না বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ট্রুথ কমিশন যখন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, তখন এটা সংসদে বলা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এটা করার জন্য কোনো আইন প্রণয়ন করা হয়নি। ফলে ট্রুথ কমিশন নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। 

উপস্থিত কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ট্রুথ কমিশনের কথা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শাসনামলে বলা হয়েছিল। তারা তো জনগণের সরকার ছিল না। ওই সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ট্রুথ কমিশনের কথা বললেও তারা কোনো আইন প্রণয়ন করেনি। জনগণের সরকার না হয়ে তারা ওই সিদ্ধান্ত নিতে পারে, কিন্তু আমরা জনগণের সরকার হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। এছাড়া ট্রুথ কমিশনের সুনির্দিষ্ট কোনো আইন না থাকায় এটা নিয়ে আমাদের কিছুই করার নেই। 

মহামারি করোনার কারণে প্রথা ভেঙে ২০২০-২১ অর্থবছরের ভার্চুয়ালি বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে অর্থ মন্ত্রণালয়। এরপর ২০২১-২২ অর্থবছরে সীমিত পরিসরের পাশাপাশি ভার্চুয়ালি বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন করা হয়। অর্থাৎ তিন বছর পর আজ (শুক্রবার) স্বাভাবিক নিয়মে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন হচ্ছে।

এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার দাঁড়িয়েছে ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামালের এটি চতুর্থ বাজেট। আর বাংলাদেশের জন্য ৫১তম। পাশাপাশি রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের ২০তম বাজেট হলেও ২০০৮ সাল থেকে বর্তমান সরকার টানা বাজেট দিয়ে যাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত আছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, মৎস্য ও প্রাণীসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার, নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, এনবিআরের চেয়ারম্যান, অর্থ সচিব, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবগণ।

এমএইচএন/এমএআর/