চেক শার্ট পরিহিত রাশেদুল হক

৫৫ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আলোচিত প্রশান্ত কুমার হালদারের (পিকে হালদার) অন্যতম সহযোগী ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদুল হকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মো. রুহুল আমিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, রাশেদুল হকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় ২০১১ সালের ৭ জুলাই সম্পদ বিবরণী নোটিশ ইস্যু করা হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে তার দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে কোনো স্থাবর সম্পদের তথ্য প্রদর্শন করেননি। তিনি সম্পদ বিবরণীতে শুধুমাত্র ২ কোটি ৫৭ লাখ ১৯ হাজার ৬৪৯ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য প্রদর্শন করেছেন। সম্পদের মধ্যে শেয়ার ব্যবসায় বিনিয়োগ ৯২ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯১ টাকা, ডিপিএস বিনিয়োগ ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, সাড়ে ৮ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে।

অন্যদিকে, রাশেদুল হক ২০১২-২০১৩ থেকে ২০২০-২০২১ করবর্ষ পর্যন্ত বেতন, বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাত করে অ্যালাউন্স, ডোনার্স, উৎসব ভাতা, আপ্যায়ন, মেইনটেনেন্স, প্রভিডেন্ড ফান্ড, সম্মানী ভাতা, অন্যান্য ভাতা ইত্যাদি উৎস বিবেচনা করলে মোট ৫ কোটি ৭৭ লাখ ৭১ হাজার ৩৮৩ টাকার সন্ধান পেয়েছেন দুদক কর্মকর্তা। যার মধ্যে ৫ কোটি ২২ লাখ ৬৯ হাজার ৩৫১ টাকার বৈধ উৎস পাওয়া গেলেও ৫৫ লাখ ২ হাজার টাকার সম্পদ অর্জনের কোনো উৎস পাওয়া যায়নি। যে কারণে তার বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের অর্থ আত্মসাতে ২২টি ও এফএএস ফাইন্যান্সের অর্থ আত্মসাতে ১২টিসহ সর্বমোট ৩৪টি মামলা হয়েছে। বিভিন্ন পর্যায়ের মোট ১২ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া ১০ আসামি আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

২০২১ সালে ২ ফেব্রুয়ারি আদালতে দেওয়া রাশেদুল হকের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। সেই জবানবন্দিতে তিনি জানান, রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের নির্দেশেই প্রতিষ্ঠানটিতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স থেকে অর্থ লোপাটের তথ্য ধামাচাপা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক এক ডেপুটি গভর্নরকে মাসিক দুই লাখ টাকা করে মাসোহারা দিতেন। জবানবন্দিতে সবচেয়ে বেশি উঠে এসেছে সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর (এস কে) চৌধুরীর নাম। বাংলাদেশ ব্যাংকের অডিট টিমকে ম্যানেজ করতে লাখ লাখ টাকা ঢেলেছেন পি কে হালদার এমনটা দাবি করেছেন জবানবন্দিতে।

আরএম/জেডএস