বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে সরকারি সিকিউরিটিজ পুঁজিবাজারের অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নতুন প্ল্যাটফর্মে প্রথমবারের মতো আগামী ১০ অক্টোবর (সোমবার) সরকারি সিকিউরিটিজ পরীক্ষামূলক লেনদেন শুরু হ‌বে।

মার্কেট ইনফ্রাস্ট্রাকচার (এমআই) মডিউলে (পদ্ধতিতে) ট্রেজারি বন্ড ও বিলসমূহ ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে লেন‌দেন সম্পন্ন হবে। এ বিষয়ে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য বিএসইসিকে আলাদাভাবে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর বিএসইসির পক্ষ থেকে ঢাকা ও চিটাগাং স্টক এক্সচেঞ্জকে প্রস্তুতি সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের উপ-মহাব্যবস্থাপক ও মুখপাত্র শফিকুর রহমান বলেন, ‘সরকারি সিকিউরিটিজ আগামী ১০ অক্টোবর থেকে শুরু হবে। বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী প্রস্তুতি শেষ করেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএসইসি, ডিএসই, সিএসই, সিডিবিএল, স্টক ব্রোকারসহ সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগেই লেনদেন শুরু হবে।’

গত ৩ অক্টোবর এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, পুঁজিবাজারের দুটি পার্ট। এর মধ্যে একটি ইক্যুইটি মার্কেট, আরেকটি ডেপথ মার্কেট। ইক্যুইটি মার্কেটই হলো শেয়ার মার্কেট। বাংলাদেশে এই শেয়ার মার্কেটই উন্নয়ন করেছে। শেয়ার মার্কেটের আরেকটা অংশ যেটা আসলে বড় হওয়া উচিত সেটা হলো বন্ড মার্কেট। সেটা কিন্তু খুব বেশি গড়ে ওঠেনি। সেকারণে সেকেন্ডারি মার্কেট আসলে ততটা ভালো কাজ করছে না। বন্ড মার্কেটকে বড় করতে যে সাপোর্ট দরকার সেটা গভর্নর হওয়ার পর বেশি অনুভব করলাম।

গভর্নর বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ যেমন- ভারত, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় উদ্যোক্তা ক্যাপিটাল মার্কেট থেকে পুঁজি তোলে। অন্যান্য প্রয়োজনে ব্যাংক থেকে লোন নেয়। আর আমাদের দেশে হচ্ছে ঠিক এর উল্টো। সবাই ব্যাংক থেকেই লোন নিচ্ছে। কাজেই এখানে যদি লোন পরিশোধে কোয়ার্টার মিস করেন তাহলেই তিনি ডিফল্টর হয়ে যাচ্ছেন। কাজেই আমি মনে করে বন্ড মার্কেটকে যদি ডেভলপ করতে পারি, আরও ভালো করতে পারি, তাহলে সবাই বন্ড মার্কেটে যাবে। সেখান থেকে তারা টাকা তুলবে। আর ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে ব্যবসা করবে।

গভর্নর আরও বলেন, আমাদের অনেক ব্যাংক টায়ার-২ বন্ড ইস্যু করছে। সাবঅর্ডিনেটেড বন্ড। আমি যোগ দেওয়ার আগ পর্যন্ত ট্রেন্ড ছিল এক ব্যাংক বন্ড ইস্যু করলে আরেক ব্যাংককে তা নিতে হতো। আমি যোগ দেওয়ার পর নিয়ম করে দিয়েছি ফিফটি পার্সেন্ট বন্ড বাইরে বিক্রি করতে হবে। ব্যাংকের বন্ড তো সব সিকিউরড বন্ড। বাংলাদেশে আজ পর্যন্ত কোনো ব্যাংক ফল্ট করেনি। আগামী ৫০ বছরেও ফল্ট করবে না বলে আমি মনে করি। তাহলে সব বন্ড সিকিউরড। তারা কেন মার্কেটে আসবে না। সেটা কেন সাধারণ মানুষ কিনবে না। আমার কাছে এখন পর্যন্ত ৫ থেকে ৬টি ব্যাংক এসেছে। সবাইকে বাধ্যতামূলক করে দিয়েছি যে ফিফটি পার্সেন্ট বন্ড ক্যাপিটাল মার্কেটে ইস্যু করতে হবে। আমরা পুঁজিবাজারে বন্ডগুলোকে বড় করার চেষ্টা করছি।

এসআই/এমএ