রাজধানীর গুলশান সংলগ্ন একটি কাঁচাবাজারে একটি মুদি পণ্যের দোকানে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে হঠাৎ বাকবিতণ্ডা। ক্রেতা আব্দুস সোবহান জানতে চেয়েছিলেন এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম কত? উত্তরে বিক্রেতা মনিরুল ইসলাম জানালেন এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৯২ টাকা।

মূলত সয়াবিন তেলের দাম কামানোর পরও আগের বাড়তি দাম চাওয়া নিয়ে বিক্রেতা ও ক্রেতার মধ্যে বাকবিতণ্ডার শুরু। ক্রেতার যুক্তি, সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ১৪ টাকা কমিয়ে ১৭৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা গত মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। তাহলে কেন দোকানদার আগের দাম ১৯২ টাকা চাইছেন।

অন্যদিকে দোকানদার মনিরুল ইসলামের ভাষ্য, নতুন দাম নির্ধারণ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু আমাদের দোকানে আগের বাড়তি দামে কেনা পণ্য রয়ে গেছে। এছাড়া নতুন দামের পণ্য এখনও এসে পৌঁছায়নি। ফলে আগের দামেই তেল বিক্রি করতে হচ্ছে।

গত সোমবার (৩ অক্টোবর) সয়াবিন তেলের নতুন এ দাম নির্ধারণ করেছে ভোজ্যতেল পরিশোধন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। 

সেখানে সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ১৪ টাকা কমানো হয়েছে। বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭৮ টাকা। যা মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হওয়ার কথা।

শুক্রবার (৭ অক্টোবর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেল ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা, দুই লিটার ৩৮০ টাকা, পাঁচ লিটার ৯৪৫ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল কেজি ১৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে নতুন দাম নির্ধারণের চারদিন পরও ‘মাশুল’ দিতে হচ্ছে ক্রেতাদের। 

রাজধানীর মালিবাগ এলাকায় মুদি পণ্যের বিক্রেতা জাহিদুর রহমান বলেন, প্রতিটি ক্রেতার সঙ্গে এসব বিষয় নিয়ে সবসময় তর্কবিতর্ক চলছেই। তেলের দাম কমেছে এমন খবর জেনে ক্রেতারা এসে দাম নিয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়াচ্ছেন। কিন্তু আসলে আমাদের সবার দোকানে আগের দামে কেনা সয়াবিন তেল রয়েছে। বেশি দামে কিনে আমরা কীভাবে কম দামে বিক্রি করবো? আগের পণ্য শেষ হলেই তো নতুন পণ্য তুলতে পারব। এছাড়া নতুন দামের পণ্য আমরা এখনও পাইনি। যেহেতু বাড়তি দামের তেল এখনও সব দোকানেই আছে তাই প্রত্যেক দোকানদার আগের দামেই তেল বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। 

মগবাজার এলাকায় কাঁচাবাজারে সাপ্তাহিক বাজার করতে আসা ক্রেতা বেসরকারি চাকরিজীবী আফতাব উদ্দিন এখনও বাড়তি দামে তেল বিক্রির বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আজ যদি তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা হতো তাহলে দোকানদাররা সেই তেলের দাম বাড়াতে এক মুহূর্তও দেরি করতো না। আজ চারদিন হলো তেলের দাম কমিয়েছে, কিন্তু আজও বাড়তি দামেই তেল বিক্রি করছে তারা। দোকানিরা বিভিন্ন রকমের অজুহাত দেখিয়ে বলছে, তাদের বাড়তি দামে কেনা আগের তেল, নতুন তেল এখনও আসেনি। সব মিলিয়ে তারা এখনও আগের বাড়তি দামে তেল বিক্রি করে যাচ্ছে। যার মাশুল দিতে হচ্ছে ক্রেতাদের। 

এএসএস/জেডএস