ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবহার করে যেসব ই-কমার্স লেনদেন হয় তার ওপর সব ধরনের কর ও ভ্যাট  মওকুফ চায় ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)। এছাড়া যেসব ই-কমার্স কোম্পানি দেশি পণ্য বিক্রি করে তাদের ক্যাশ ইনসেনটিভ দাবি করেছে সংগঠনটি।

বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) জাতীয় রাজস্ব ভবনের সম্মেলন কক্ষে প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় এসব দাবি উপস্থাপন করেন ই-ক্যাবের প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার। 

তিনি বলেন, অনলাইন লেনদেনে ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার ই-কমার্স একটি উদীয়মান খাত। প্রায় সব প্রতিষ্ঠানই স্টার্টআপ। স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে দেখা যায় তারা তারা লোকসান দিয়ে প্রমোশন করে ব্র্যান্ড উন্নয়ন করে। তাই তাদের প্রবৃদ্ধি অর্জনের সুযোগ দেওয়া উচিত। এ কারণে ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবহার করে যেসব ই-কমার্স লেনদেন হয় তার ওপর সব ধরনের কর ও ভ্যাট প্রত্যাহারের প্রস্তাব করছি।

ই-ক্যাবের দাবির মধ্যে আরও রয়েছে; ই-কমার্সকে আইটিইস এর অন্তর্ভুক্ত করা, আয়কর আইনের ১৯৮৪ এর ধারা অনুযায়ী ই-কমার্সকে সংজ্ঞায়িত করা, ই-সিগেরেট নিষিদ্ধ করা, পণ্য ডেলিভারি চার্জে ভ্যাট প্রত্যাহার, ই ও এফ কমার্স অফিসের ভাড়ার ভ্যাট প্রত্যাহার করা, বুদ্ধিভিত্তিক পণ্যের ক্ষেত্রে ভ্যাট-ট্যাক্স অব্যাহতি, বছরে ৫০ লাখ টাকার কম বিক্রি হলে ভ্যাট অব্যাহতি, ই- কমার্সে ৫ শতাংশ ভ্যাট নির্ধারণের পরিবর্তে নির্দিষ্ট পরিমাণ ভ্যাট দেওয়ার সুবিধা ইত্যাদি। 

শমী কায়সার বলেন,  কোভিডের সময় ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রি নতুন করে ফোকাসে এসেছে।  এসময় প্রায় ৭০-৮০ শতাংশ নতুন কোম্পানি হয়েছে। ৩০০ এর বেশি নতুন ডেলিভারি কোম্পানি তৈরি হয়েছে। ই-ক্যাবের প্রায় ১৫০০ সদস্য। আমরা সরকারকে রাজস্ব দিতে চাই।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। তিনি বলেন, ই-কমার্সে দোকান ভাড়া লাগে না,  কর্মচারী ভাড়া লাগে না। এতে তাদের খরচ কমার কথা। খরচ কমার কারণে সহজে ও কম দামে পণ্য পাওয়া যাবে। ই-কমার্সের প্রভাবে এক সময় ফিজিক্যাল দোকানপাট এক সময় বন্ধ হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, ই কমার্সের পরিধি বাড়ছে কিন্তু আপনারা বলছেন লস করছে। ই-কমার্স বিজনেসকে একটা শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে হবে। এই বিজনেসের সঙ্গে যারা আছে তাদের চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। একেকজন ফেসবুক দিয়ে, সাইট খুলে এটা করছে। তাদের ভ্যাটের আওতায় আনা যাচ্ছে না। ৯০ শতাংশই  আপনাদের সংগঠনের সদস্য না। ডিসিপ্লিনের মধ্যে আসতে পারছেন না বলেই অনেক কিছু আপনাদের দিতে পারছি না। আপনারা আইসিটি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসেন। সব ই; কমার্সকে একটা প্লাটুফর্মে আনার ব্যবস্থা করেন। ডিজিটাল পেমেন্টকে বাধ্যতামূলক করেন।

এ বিষয়ে ই-ক্যাবের প্রতিনিধিরা বলেন, আমরা ও সরকারকে ভ্যাট ট্যাক্স দিতে চাই। আমরাও সিস্টেমে আসতে চাই। এ লক্ষে আমরা বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছি। 

সভায় এনবিআরের আয়কর নীতির সদস্য  আলমগীর হোসেন, শুল্ক ও ভ্যাট প্রশাসন বিভাগের সদস্য সাইফুল ইসলাম, ভ্যাট নীতির সদস্য মাসুদ সাদিকসহ বাজেট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

আরএম/এসএম