বাংলাদেশে বিনিয়োগ অনেক বেশি নিরাপদ, আকর্ষণীয় এবং সাশ্রয়ী জানিয়ে বিদেশি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ চলছে। সেগুলোতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগও আসছে। অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে শিল্প স্থাপনে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এসব দিক বিবেচনায় বিদেশি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানান মন্ত্রী।

রোববার (১২ মার্চ) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এফবিসিসিআই আয়োজিত বাংলাদেশ বিজনেস সামিটের ‘১০০ বিলিয়ন ডলার ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিস ইন কি সেক্টর’ শীর্ষক প্লেনারি সেশনে এসব কথা বলেন টিপু মুনশি।

সেশনে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সরকার অবকাঠামো উন্নয়ন করছে। ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে ভবিষ্যতেও সরকারের কৌশল ও নীতি সহায়তা অব্যাহত থাকবে।

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, আমাদের দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ বিশ্বের অন্যান্য দেশের চেয়ে বেশি নিরাপদ।

এই সেশন ছাড়াও এ দিন ‘ডেভেলপিং লংটার্ম ফাইনান্স মার্কেটস টু সাপোর্ট নিউ গ্রোথ অপরচুনিটিজ’ এবং ‘হারনেসিং দা ডিজিটাল ইকোনমি টু আনলক নিউ ফ্রন্টিয়ারস ফর এ স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক আরও দুটি প্লেনারি সেশন ও ছয়টি প্যারালাল সেশন অনুষ্ঠিত হয়।

প্যারালাল সেশনগুলো হলো— বিল্ডিং কানেক্টিভিটি অ্যান্ড প্রোডাকশন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফর দা নেক্সট ফেস অব গ্রোথ : ইনভেস্টিং ইন লজিস্টিকস অ্যান্ড ইকোনমিক জোনস, টুওয়ার্ডস হান্ড্রেড বিলিয়ন অ্যাপারেল অ্যান্ড টেক্সটাইল সেক্টর : লেভারেজিং সাস্টেইনাবিলিটি, কম্পিটিটিভনেস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট অপুরচুনিটিজ, লেভারেজিং গ্রোয়িং মিডল অ্যান্ড এফ্লুএন্ট ক্লাস ফর এ ভাইব্রান্ট কনজ্যুমার গুডস সেক্টর, স্ট্রাটেজিক অ্যাপ্রোচ ফর এনার্জি সিকিউরিটি টু এটেইন সাস্টেইনেবেল গ্রোথ, জাপান-বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট : অপরচুনিটিস অ্যান্ড এ ফরওয়ার্ড, টুয়ারডস এ গ্লোবাল্লি কম্পিটিটিভ এগ্রিবিজনেস সেক্টর : ইমার্জিং অপরচুনিটিজ ইন অ্যাগ্রো ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট।

‘লেভারেজিং গ্রোয়িং মিডল অ্যান্ড এফ্লুয়েন্ট ক্লাস ফর এ ভাইব্রান্ট কনজ্যুমার গুডস্ সেক্টর’ বিষয়ক প্যারালাল সেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। সেশনটি চেয়ার করেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ। অ্যাপেক্স গ্রুপ, সিঙ্গার বিডি লি ও ইউনিলিভারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ভোগ্যপণ্য খাতে খরচ কমিয়ে টেকসই মানোন্নয়নের জন্য সরবরাহ শৃঙ্খল ঠিক রাখা, রিসাইক্লিং ও জয়েন্ট ভেঞ্চারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা।

স্ট্রাটেজিক অ্যাপ্রোচ ফর এনার্জি সিকিউরিটি টু এটেইন সাস্টেইনেবেল গ্রোথ বিষয়ক প্যারালাল সেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি চলমান বৈশ্বিক সংকটে জ্বালানি খাতকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে আখ্যা দেন। এই খাতে নতুন করে আর ভর্তুকি না দিয়ে ক্রমান্বয়ে সমন্বয়ে যাওয়া হবে বলে জানান।

‘জাপান বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট : অপরচুনিটি অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড’ বিষয়ক প্যারালাল সেশনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া, জাপানের রাষ্ট্রদূত কিমিনরি ইয়ামাসহ জেট্রো, জেবিসিসিইসি, এফবিসিসিআই, বিজেআইটি, জেসিআইএডির প্রতিনিধিরা। সেশনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন ও জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প বিষয়ক মন্ত্রী ইয়াসুতসি নিশিমুরার পক্ষ থেকে ভিডিও বার্তা পাঠানো হয়।

আলোচনায় দুই দেশের প্রতিনিধিরা পরস্পরের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে সহযোগিতা আরও জোরদার করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

এসআই/এসএসএইচ/