বাংলাদেশ ও ভারতের ব্যবসায়ীদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রম আরও জোরদারের তাগিদ দিয়েছে দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) ও ভারত চেম্বার অব কমার্স (বিসিসি)।

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) এফবিসিসিআই কার্যালয়ে বিসিসি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এই বিষয়ে আলোকপাত করেন দুই প্রতিষ্ঠানের নেতা।

বৈঠকে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, উত্তর আমেরিকা ও আশিয়ানভুক্ত দেশগু‌লোসহ অন্যান্য জোটগুলো আঞ্চলিক বাণিজ্য শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটিয়েছে। সেখানে সার্কভুক্ত দেশগুলো এখনও বেশ পিছিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে গভার্নমেন্ট টু গভার্নমেন্ট (জিটুজি)  সম্পর্ক অনেক দূর অগ্রসর হয়েছে। আমাদের এখন বিজনেস টু বিজনেস (বিটুবি) কার্যক্রম আরও এগিয়ে নিতে হবে।

এফবিসিসিআই সভাপতি জানান, পদ্মাসেতু রেল সংযোগ এবং বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর মাধ্যমে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে ভারতের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, আধুনিকায়ন ও যান্ত্রিকীকরণে জোর দিয়েছে। ভারত বিশ্বের অন্যতম একটি কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদনকারী দেশ। বাংলাদেশের বাজার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ভারতের কৃষি যন্ত্রাংশ উৎপাদনকারীরা এদেশে কারখানা স্থাপন করতে পারে।

এসময় ভারত চেম্বারের প্রেসিডেন্ট এন.জি. খইতান বাংলাদেশের প্রশংসা করে বলেন, ভারত বাংলাদেশ বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র। গত দশ বছরে বাংলাদেশের উন্নয়ন চোখে পড়ার মতো। ভারতীয় বিনীয়গকারীরা সর্বদা বাংলাদেশের এই উন্নয়নের সহযোগী হতে আগ্রহী।

তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল শক্তি হলো গ্রামীণ অর্থনীতি। প্রতিবেশী দেশ দু’টির ভোক্তা বাজার, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে যখন এত মিল রয়েছে যে, আমাদের উচিত নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও জোরদার করা।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর সহ-সভাপতি এম এ মোমেন, মো. আমিন হেলালী, পরিচালক প্রীতি চক্রবর্তী, এফবিসিসিআই পরিচালক ও বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী, বিসিসির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নরেশ পাচিশিয়া ও ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজকুমার আগারওয়ালসহ অন্যান্যরা।

সৌজন্য সাক্ষাতের পর বিসিসির ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বিটুবি মিটিংয়ের আয়োজন করে এফবিসিসিআই। যেখানে অংশ নেন উভয় দেশের বস্ত্র, ওষুধ, চামড়া, পাট, প্লাস্টিক ও প্যাকেজিং, ফার্মাসিউটিক্যাল, লেদার, সিমেন্ট, ইস্পাত, সিরামিক, কয়লা, জ্বালানি, কাগজ, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রেল যন্ত্রাংশ শিল্পের ব্যবসায়ীরা।

বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক সহজ করতে ব্যবসায়ীদের নিজ নিজ দেশের সরকারের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী।

বিটুবি মিটিংয়ের মাধ্যমে দু’দেশের বাণিজ্য নতুন মাত্রায় পৌঁছাবে বলে আশাবাদী এফবিসিসিআই ও বিসিসি।

এসআই/কেএ