সেফটি কাউন্সিল ইতোমধ্যে ৫ হাজার ২০৬টি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছে। তার মধ্যে ১০০ টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আছে বলে জানিয়েছেন দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

বৃহস্পতিবার (৮ জুন) এফবিসিসিআই সেইফটি কাউন্সিল আয়োজিত ’লিভারেজিং লেসনস লার্নড টু মুভ ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক এক কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, এফবিসিসিআই দেশের প্রধান বাণিজ্য সংগঠন। কলকারখানার নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের কাজ করার কথা নয়। কিন্তু বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আগুনের ঘটনায় কর্মীদের প্রাণহানীসহ ব্যবসায়ীদের যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় সেগুলো কাটিয়ে উঠতে এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে আমরা এফবিসিসিআই সেফটি কাউন্সিল গঠনের সিদ্ধান্ত নেই। ইতোমধ্যে এই সেফটি কাউন্সিল ৫ হাজার ২০৬টি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছে। তার মধ্যে আমরা ১০০ টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান পেয়েছি যেগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। তাদের সাথে আমরা আলোচনায় বসে পরবর্তী করণীয় ঠিক করব। 

এসময় তিনি অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি কমাতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং শিল্প মালিকদের কমপ্লায়েন্স মেনে চলার আহ্বান জানান।

শুধু বিদেশি গ্রাহক নয়, দেশি গ্রাহকদের জন্যও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে কোনো প্রতিষ্ঠান কমপ্লায়েন্স না মানলে বিদেশি গ্রাহকরা সহজে সেই পণ্য কিনতে চায় না। বিদেশি গ্রাহকদের কথা মাথায় রেখে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো যেভাবে কমপ্লায়েন্স মেনে চলছে, ঠিক দেশি গ্রাহকদের জন্য ফায়ার সেইফটি নানা কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা জরুরি।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। তিনি পাঁচ হাজারের বেশি কারখানা পরিদর্শনের জন্য এফবিসিসিআই সেফটি কাউন্সিলের প্রতি ধন্যবাদ জানান। 

তবে পরিদর্শনের সাথে সাথে অতি ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত কারখানাগুলোকে সংস্কারের ব্যবস্থা এমনকি বন্ধ করার বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। 

পাশাপাশি সরকারি সংস্থাগুলোতে এনফোর্সমেন্ট আরও জোরদার করা প্রয়োজন বলে মনে করেন বাণিজ্য সচিব।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক মাইন উদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যবসায়ীরা সুন্দরভাবে ব্যবসা করে আসছে দেখেই দেশ আজ এগোচ্ছে। ব্যবসায়ীদের হাত ধরেই ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হবে বলে আমি আশা করি। 

তবে কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তায় পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেল তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করেন তিনি।

এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, এফবিসিসিআই সেইফটি কাউন্সিলের প্রশিক্ষকরা নিজ নিজ চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য কারখানায় এফবিসিসিআই সেইফটি কাউন্সিলের তত্ত্বাবধানে অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ে ৭৯ কারখানায় প্রায় ৩ হাজার কর্মী এবং ১২৪ টি কারখানায় সেইফটি কমিটি গঠন ও তাদের দায়িত্ব বিষয়ে ৩০টি কর্মশালায় ১ হাজার জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

এর আগে কর্মশালায় সেইফটি কাউন্সিলের কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন এফবিসিসিআই সেইফটি কাউন্সিলের উপদেষ্টা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবু নাঈম মো. শহিদুল্লাহ। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী।

এসময় উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর পরিচালক, ব্যবসায়ী নেতা ও কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি প্রমুখ।

এসআই/এমএ