বিদায়ী বছরে আগের অর্থবছরের তুলনায় বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ৩৪৭ কোটি ৬১ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার। তবুও সরকার রপ্তানি আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল তা পূরণে হোঁচট খেয়েছে।

সোমবার (৪ জুলাই) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ইপিবির তথ্যমতে, জুলাই ২০২২ থেকে ৩০ জুন ২০২৩ পর্যন্ত সময়ে বিশ্ববাজারে ৫ হাজার ৫৫৫ কোটি ৮৭ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার সমপরিমাণ মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। এর আগের অর্থবছর ২০২১-২২ সালে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৫ হাজার ২০৮ কোটি ২৬ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। অর্থাৎ আগের অর্থবছরের তুলনায় রপ্তানি আয় বেড়েছে ৩৪৭ কোটি ৬১ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার।

শতাংশের হিসেবে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এটা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়ের রেকর্ড।

আগের বছরের তুলনায় রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বাড়লেও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। চলতি বিদায়ী অর্থবছরে সরকারের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৮০০ কোটি ইউএস ডলার। সেই হিসেবে ২৪৪ কোটি ১২ লাখ ৩০ হাজার ইউএস ডলার কম রপ্তানি আয় হয়েছে। যা শতাংশের হিসেবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ দশমিক ২১ শতাংশ কম আয় হয়েছে।

মাসওয়ারি হিসাবে দেখা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুন মাসে রপ্তানি আয় হয়েছে ৫০৩ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার ইউএস ডলার। আগের বছরের একই সময় আয় হয়েছিল ৪৯০ কোটি ৮০ লাখ ৩০ হাজার ডলার। সেই হিসেবে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ৫১ শতাংশ।

আগের বছরের তুলনায় ১২ কোটি ৩৫ লাখ ইউএস ডলার পরিমাণ বা ২ দশমিক ৫১ শতাংশ রপ্তানি বাড়লেও সরকারের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি।

জুন মাসে সরকারের পরিকল্পনা ছিল ৫৫৬ কোটি ৬০ লাখ ইউএস ডলার পরিমাণ পণ্য রপ্তানির। সে মোতাবেক একক মাস হিসেবে জুনে সরকারের রপ্তানি আয় কমেছে ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ।

তার আগে মে মাসে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৪৮৪ কোটি ৯৬ লাখ ২০ হাজার ইউএস ডলার। সে মাসেও তার আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২৬ দশমিক ৬১ শতাংশ রপ্তানি আয় বেশি হয়েছিল। ২০২১-২০২২ অর্থবছরের মে মাসে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৩৮৩ কোটি ২ লাখ ৯০ হাজার ডলার।

তবে সরকার বিদায়ী বছরের মে মাসে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা যা নিয়েছিল তা পূরণ করতে পারেনি। সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫১২ কোটি ডলার সমপরিমাণ পণ্য রপ্তানির।

৫৫৫৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের মধ্যে বরাবরের মতোই খাতভিত্তিক শীর্ষে রয়েছে দেশের তৈরি পোশাক খাত। এ খাত থেকে সরকারের রপ্তানি আয় এসেছে ৪৬ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ। পোশাক ছাড়াও প্লাস্টিক পণ্য ও চামড়াবিহীন জুতার রপ্তানি বেড়েছে।

খাতওয়ারি চিত্রে দেখা গেছে, ফুটওয়্যারে ৬ দশমিক ৬১ শতাংশ, ক্যাপে ২২ দশমিক ৭১ শতাংশ, ম্যান মেইড ফিলমেন্ট ও স্ট্যাপল ফাইবারে ৪২ দশমিক ৯৮ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্যে ২৬ দশমিক ২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

অন্যদিকে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, হিমায়িত খাদ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, হোমটেক্সটাইল ও প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি কমেছে। এর মধ্যে পাটজাত পণ্যে ১৯ দশমিক ১ শতাংশ, কৃষি পণ্যে ২৭ দশমিক ৪৭ ও হিমায়িত মাছে ২০ দশমিক ৭৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি কমেছে।

এমআই/এমজে