বিজিএমইএ নির্বাচনে ভোট শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন সালমান এফ রহমান | ছবি- ঢাকা পোস্ট  

‘টিকা দিলে করোনা চলে যাবে’— এমনটি ভেবেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। রোববার (৪ এপ্রিল) তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন- বিজিএমইএ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার পর সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

সালমান এফ রহমান বলেন, ‘ভেবেছিলাম টিকায় করোনা শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু ইউরোপ-আমেরিকাসহ সারাবিশ্বে দেখছি দ্বিতীয় দফায় করোনার প্রভাব বেড়েছে। এটি বাড়ায় পোশাক খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘চমৎকার পরিবেশে বিজিএমইএ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নতুন কমিটির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে করোনা মোকাবিলা করা।’

প্রসঙ্গত, সালমান এফ রহমানের কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের ‘এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটর’ হিসেবে বাংলাদেশে টিকা সরবরাহের কাজ করছে। বাংলাদেশ সরকার সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে যে তিন কোটি ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কিনছে, তা বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মাধ্যমেই সরবরাহ হচ্ছে। ওই তিন কোটি ডোজের মধ্যে প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ হাতে পেয়ে সারাদেশে টিকাদান শুরু করে বাংলাদেশ।

সরকার, সেরাম ইনস্টিটিউট ও বেক্সিমকোর করা ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে আগামী পাঁচ মাসে আরও আড়াই কোটি ডোজ টিকা দেশে আসার কথা। তবে ভারত সরকার কর্তৃক বিভিন্ন দেশে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা রফতানিতে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে বাংলাদেশে টিকার চালান আসা এবং দ্বিতীয় ডোজের প্রয়োগ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। যদিও বাংলাদেশ সরকার বলছে, আপাতত টিকা না এলেও দ্বিতীয় ডোজের টিকার প্রয়োগ নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। আগামী ৮ এপ্রিল থেকে সারাদেশে দ্বিতীয় ডোজের টিকা প্রয়োগ শুরু হবে।

করোনা মহামারির মধ্যেই রোববার (৪ এপ্রিল) সকাল ৯টায় তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিকেল ৬টা পর্যন্ত ৮৪ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে বলে জানান নির্বাচন কমিশনার। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হবে।

বিজিএমইএ নির্বাচনে ভোট শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন সালমান এফ রহমান | ছবি- ঢাকা পোস্ট  

নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা জানান, ঢাকার এক হাজার ৮১২ ভোটারের মধ্যে এক হাজার ৫০৭টি ভোট কাস্ট হয়েছে। চট্টগ্রামের ৪১৩টি ভোটের মধ্যে ৩৯০টি কাস্ট হয়েছে। ৩৫ পরিচালক পদে এবার দুটি প্যানেল অংশ নিয়েছে। একটি হলো- ‘সম্মিলিত পরিষদ’, অপরটি- ‘ফোরাম’।

ভোটগ্রহণের শুরু থেকেই সম্মিলিত পরিষদ বহিরাগতদের ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেন ফোরামপ্রধান এ বি এম সামছুদ্দিন। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে বিজিএমইএ নির্বাচনের প্রবেশ পথে হাজার হাজার লোকের সমাগম ঘটিয়েছে প্রতিপক্ষ। এরা বিজিএমইএর সদস্য না, ভাড়া করা লোক। তাদের কারণে রাস্তা ব্লক হয়ে গেছে। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসতে পারছেন না।

সামছুদ্দিন আরও বলেন, নির্বাচনের আগেই যারা নির্বাচন ও সরকারের বিধিনিষেধ মানেন না তারা কী করে বিজিএমইএ পরিচালনা করবেন? তবে করোনার প্রকোপের মধ্যেও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হচ্ছে, এজন্য সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।

এমআই/এমএআর/