ফাইল ছবি

মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রামণ রোধে দেশজুড়ে সরকার ঘোষিত এক সপ্তাহের লকডাউন চলছে। লকডাউনের আওতামুক্ত রয়েছে ব্যাংকিং সেবা। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। যদিও বাস্তবে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে । রাজধানীর অধিকাংশ এটিএম বুথেই তা সঠিকভাবে মানা হচ্ছে না।

রাজধানীর মালিবাগ, মৌচাক, হাজীপাড়া ও রামপুরাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যাংকগুলোর এটিএম বুথ সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গেছে, কোনো কোনো বুথে জীবাণুনাশকের নামে রাখা হয়েছে ডেটল আর স্যাভলন মিশ্রিত পানি। যা দিয়ে প্রকৃতপক্ষে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না। এমনকি বুথের দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তারক্ষীদের জন্য নেই পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিদিন বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথে অসংখ্য মানুষ আসা যাওয়া করেন। এর মধ্যে একজন করোনা সংক্রমিত ব্যক্তি যদি বুথ ব্যবহার করেন তাহলে অনেকেই আক্রান্তের ঝুঁকিতে পড়বেন। তাই প্রত্যেকটি বুথে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন করা জরুরি। 

এ বিষয়ে নিরাপত্তারক্ষীরা অনেকেই ভয়ে কথা বলতে চান না। তবে পরিচয় গোপন রাখার শর্তে কয়েকজন বলছেন, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর প্রথম পর্যায়ে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনে কঠোর নজরদারি ছিল। কিন্তু এবার তেমনটা নেই। এখনও কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জীবাণুনাশক পাওয়া যায়নি। অধিকাংশ নিরাপত্তাকর্মী নিজের টাকায় কেনা মাস্ক ব্যবহার করছেন।  

দেশে প্রায় ৫ হাজার বুথের মাধ্যমে সর্ববৃহৎ এটিএম বুথের সেবা দিয়ে যাচ্ছে বেসরকারি ব্যাংক ডাচ বাংলা। রামপুরা বাজার সংলগ্ন ব্যাংকটির এটিএম বুথে গিয়ে জীবানুনাশক পাওয়া যায়নি। বোতলে পাওয়া গেলো স্যাভলন মিশ্রিত পানি।

এটিএম বুথের পাশে রাখা হয়নি হ্যান্ড স্যানিটাইজার

ডাচ বাংলা ব্যাংকের গ্রাহক তানভির অভিযোগ করে বলেন, অধিকাংশ এটিএম বুথে গিয়ে জীবাণুনাশক পাইনি। তবে এটাও ঠিক, গ্রাহক হিসেবে আমরাও বুথে গিয়ে কখনো জীবাণুনাশক খুঁজে ব্যবহার করেনি। আমাদেরও সচেতন হওয়া দরকার।

এ বিষয়ে ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের অলটারনেটিভ ডেলিভারি চ্যানেলের ডিভিশন (এডিসি বিভাগ) প্রধান মো. মশিউর রহমান বলেন, করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে বুথগুলোয় পর্যাপ্ত পরিমাণে জীবাণুনাশক সরবরাহ করা হয়েছে। বিষয়টি আমরা নিয়মিত মনিটরিং করছি।

তিনি বলেন, কোনো বুথে জীবাণুনাশক শেষ হয়ে গেলে আমাদের জানালে আমরা পৌঁছে দেই। কিংবা সংশ্লিষ্ট বুথের দায়িত্বপ্রাপ্তরা আমাদের শাখা থেকেও নিতে পারেন। এক্ষেত্রে গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী নেই নিরাপত্তাকর্মীর

একই অভিযোগ করেন হাজীপাড়ার বাসিন্দা নাসির হোসেন। তিনি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবিল) একজন গ্রাহক। তিনি বলেন, বর্তমানে অধিকাংশ বুথে জীবাণুনাশক পাওয়া যায় না। প্রথম দিকে ব্যাংকগুলো এ বিষয়ে যত্নশীল থাকলেও এখন অনেক উদাসীন। অনেক এটিএম বুথে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহার ছাড়াই দায়িত্ব পালন করছেন নিরাপত্তা প্রহরী। ফলে বুথ থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে যাওয়া ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউসিবিএলের জনসংযোগ কর্মকর্তা আশিক মাহমুদ বলেন,আমাদের প্রতিটি বুথে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। কোথাও ব্যতিক্রম থাকলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেবো। আপনার অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।

আরএম/এসকেডি