শাকিল রিজভী

এক বছরের বেশি সময় ধরে আটকে থাকা দেড় শতাধিক কোম্পানির মধ্যে ৬৬টি প্রতিষ্ঠানের ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। শিগগিরই আরও ৫০ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করা হবে। পুঁজিবাজার এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য এই সিদ্ধান্ত সঠিক বলে মনে করেন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ‘এটি সঠিক সিদ্ধান্ত’। পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত আরও আগে নেওয়া দরকার ছিল। তাহলে বাজারে লেনদেনও বাড়ত।’ 

বুধবার (৭ এপ্রিল) পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) পিপলস লিজিং, আরএন স্পিনিং এবং বিডি সার্ভিসেস লিমিটেডসহ ৬৬টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে নিয়েছে।

আবু আহমেদ

অধ্যাপক আবু আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, জোর জবরদস্তি করে মার্কেট ওঠানো কিংবা নামানো ঠিক না। তার ফল ভালো হয় না। পুঁজিবাজারকে নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হয়। 

ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত সঠিক। এতে বিনিয়োগকারীরা ইচ্ছামতো শেয়ার লেনদেন করতে পারবেন। দরপতন ঠেকাতে বিশেষ মুহূর্তে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করা হয়েছিল। এখন সেই অবস্থা নেই। ফলে ধীরে ধীরে দিতে হবে।

তিনি বলেন, ফ্লোর প্রাইস তুলে দিলে এখন বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারে আসবেন। তারা পুরাতন শেয়ার বিক্রি করে ওই টাকা দিয়ে নতুন শেয়ার কিনবেন।

ফ্লোর প্রাইস নিয়ে বিএসইসি বলছে, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা ও পুঁজিবাজারের উন্নয়নে প্রাথমিকভাবে ৬৬টি প্রতিষ্ঠানকে ফ্লোর প্রাইস সংক্রান্ত কমিশনের আদেশ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে, যা অবিলম্বে কার্যকর হবে। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে দেওয়া হয়েছে। ফলে বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) থেকে উঠে যাচ্ছে এসব কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস। এছাড়াও শিগগিরই আরও ৫০টি কোম্পানি ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দেওয়া হবে।

২০২০ সালের ১৯ মার্চ পুঁজিবাজারের অব্যাহত দরপতন ঠেকাতে তৎকালীন চেয়ারম্যান ড. অধ্যাপক খায়রুল হোসেন কোম্পানিগুলোতে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করেন। ফ্লোর প্রাইস হলো- কোম্পানির শেয়ারের সর্বনিম্ন দর নির্দিষ্ট করে দেওয়া, যাতে এর চেয়ে নিচে আর নামতে না পারে। ১৯ মার্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি সার্কিট ব্রেকারের নিয়মে পরিবর্তন এনে প্রতিটি কোম্পানির শেয়ারের আগের পাঁচ দিনের ক্লোজিং প্রাইসের গড়কে ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন দাম হিসেবে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়।

ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করা বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- জাহিন স্পিনিং, রিং সাইন, অলিম্পিক এক্সেসরিজ, ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, ফনিক্স ফাইনান্স মিউচুয়াল ফান্ড, নূরানী ডাইং, রিজেন্ট টেক্সটাইল, সিইএমএল গ্রোথ ফান্ড, ইভিন্স টেক্সটাইল, প্যাসিফিক ডেনিম, মেট্রো স্পিনিং, কাট্টালি টেক্সটাইল, ফার কেমিক্যাল, দেশবন্ধু পলিমার, ইয়াকিন পলিমার, সাফকো স্পিনিং, ওয়েস্টার্ন মেরিন, সেন্ট্রাল ফার্মা, বিচ হ্যাচারী, সিমটেক্স, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, হামিদ ফেব্রিক্স, প্রাইম টেক্স, সায়হাম কটন, বিবিএস, গোল্ডেন হার্ভেস্ট, এএফসি অ্যাগ্রো, বেঙ্গল উইন্ডসর, খুলনা প্রিন্টিং, সিলভা ফার্মা, ইন্দোবাংলা ফার্মা, আর্গন ডেনিম, কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, শাশা ডেনিম, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, এস্কোয়ার নিট, ভিএফএস থ্রেড, আইপিডিসি, ফনিক্স ফাইন্যান্স, এডভেন্ট ফার্মা, আরএসআরএম স্টিল, কুইন সাউথ টেক্সটাইল, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড, রূপালী ব্যাংক, সায়হাম টেক্সটাইল,  সোনারগাঁও টেক্সটাইল, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, গ্লোবাল হেভি কেমিক্যাল, নাভানা সিএনজি,  ডেসকো, ইউনিক হোটেল, স্ট্যান্ডার্ড ইনস্যুরেন্স, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ, উসমানিয়া গ্লাস, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি, নাহি অ্যালুমিনিয়াম, দুলামিয়া কটন, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল ও এমএল ডাইং।

এমআই/এইচকে