সুপারশপগুলোতে ক্রেতা উপস্থিতি কম, অনলাইনে বিক্রি বেড়েছে
ক্রেতা উপস্থিতি কমেছে সুপারশপগুলোতে
সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধে রাজধানীর সুপারশপগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতি কমেছে। রাস্তায় বের হলেই পুলিশের বাধা এবং অনলাইনে পার্সেল ডেলিভারির কারণে ক্রেতারা সশরীরে কম আসছেন বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
রোববার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় স্বপ্ন, আগোরা এবং মিনাবাজারের আউটলেটগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, ক্রেতারা মাস্ক পরে, সামাজিক দূরত্ব মেনে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে ক্রেতারা শপগুলোতে প্রবেশ করছেন। ভেতরে সামাজিক দূরত্ব মেনে পণ্য দেখছেন ও কিনছেন। তবে ক্রেতা ছিল হাতে গোনা কয়েকজন। হঠাৎ কমে যাওয়া ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে ছাড়ও দিচ্ছে সুপারশপগুলো।
বিজ্ঞাপন
সবচেয়ে জনপ্রিয় সুপারশপ স্বপ্নের গুলশানের আউটলেটে গিয়ে দেখা যায়, গেটের বাইরে লোকজন নেই। প্রবেশপথে মেশিনে ক্রেতাদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এরপর হাতে স্যানিটাইজার দিয়ে দিচ্ছেন কর্মচারীরা। ট্রলিগুলোতে স্প্রে করে দেওয়া হচ্ছে। শপে ক্রেতাদের বেশির ভাগই সামাজিক দূরত্ব মেনে পণ্যাদি ট্রলিতে রাখছেন। এরপর দূরত্ব মেনে পেমেন্ট করছেন।
প্রায় একই দৃশ্য দেখা গেছে, রাজধানীর খিলগাঁওয়ের আউটলেটে এখানে ক্রেতা-বিক্রেতারা সবাই মাস্ক ব্যবহার করছেন। ক্রেতারা তাদের পছন্দমতো পণ্য কিনছেন। এই আউটলেটে পেঁয়াজ, ডাল, ছোলা-মুড়িসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বেশি কিনছেন ক্রেতারা। তবে এখানেও ক্রেতাদের উপস্থিত কম।
বিজ্ঞাপন
খিলগাঁওয়ের স্বপ্ন সুপারশপের আউটলেটের একাধিক কর্মচারী ঢাকা পোস্টকে বলেন, রমজানের আগে ক্রেতাদের উপস্থিতি একটু বেশি ছিল। বিধিনিষেধ ও রোজার কারণে মঙ্গলবার পর্যন্ত ক্রেতা ছিল অনেক। তবে তারপর থেকে কম।
নাম না প্রকাশের শর্তে রাজধানীর গুলশানের স্বপ্নের এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, অন্যান্য দিনের তুলনায় আজকে ক্রেতা একটু কম। লকডাউনের দিন থেকেই ক্রেতারা কম আসছেন। ক্রেতা কম হওয়ার আর একটি কারণ হলো এখন অনেকেই অনলাইনে অর্ডার দিচ্ছেন। তারা ঘরে বসেই পার্সেল নিচ্ছেন।
গুলশান আউটলেটে বাজার করতে আসা মিশুক রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাজার করতে এসে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছি। কারণ লোকজন কম। এখন মার্কেটে যারা আসছেন তাদের বেশির ভাগই স্বাস্থ্য সচেতন। গা ঘেঁষাঘেঁষি করতে হচ্ছে না।
তিনি বলেন, ছুটির দিনে বাজার করতে এসেছিলাম, সেসময় অনেক ভিড় ছিল। সে কি অবস্থা! করোনার ভয়ে সেদিন বাধ্য হয়ে অল্প জিনিস নিয়ে বাসায় চলে গেছি।
স্বপ্ন সুপারশপের হেড অব কাস্টমার অ্যানালিটিকস অ্যান্ড কাস্টমার রিলেশন ম্যানেজার মেহজাবিন বাঁধন বলেন, করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে সারাদেশে লকডাউন জারি করা হয়েছে। ফলে সরকারি নিয়ম মেনে সকাল ৯টা থেকে ৩টা পর্যন্ত সময়ে কেনাকাটার জন্য ক্রেতাদের পাশে রয়েছে স্বপ্ন।
তিনি বলেন, গ্রাহকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিকে সামনে রেখে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার নিশ্চিত করা হচ্ছে। এগুলো ছাড়া কেউ সুপারশপের ভেতরে যেন প্রবেশ না করে সেটি খেয়াল রাখা হচ্ছে।
আউটলেটগুলোতে জীবাণুনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, ক্রেতাদের স্পর্শ বেশি থাকে এমন সব স্থান যেমন, আউটলেটের দরজা, সেলফ, ফ্রিজ ইত্যাদি জায়গাতে জীবাণুনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি স্বপ্নের আউটলেটে কর্মরত কর্মকর্তা ও বিক্রয়কর্মীদের জীবাণুমুক্ত থাকার বিষয়টিও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
দু-তিন দিন হলো ক্রেতা কম জানিয়ে ম্যানেজার মেহজাবিন বলেন, গত ১৫ দিনে অনলাইন অর্ডার আগের চেয়ে ৩৫ ভাগ বেড়েছে। হোম ডেলিভারি এবং ই-কমার্স মিলে ১৪ ভাগ, আর বাকিটা আমাদের স্টোরে বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর সেগুনবাগিচার আগোরায় কেনাকাটা করতে আসা মতিউর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইফতারের জন্য কিছু ফল কিনলাম। লোকজন কম থাকায় করোনা নিয়ে ভয়ও কম লাগছে।
আগোরার মার্কেটিং বিভাগের কর্মকর্তা আরাফাত ঢাকা পোস্টকে বলেন, করোনা প্রতিরোধে আমাদের আউটলেটগুলোতে জীবাণুনাশক ব্যবহার করছি। তিনি বলেন, আউটলেটে কর্মরত কর্মকর্তা ও বিক্রয়কর্মীদের জীবাণুমুক্ত থাকার বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে কামস্টমারদের সেবা দেওয়া হচ্ছে।
মিনাবাজারের মালিক ও পরিচালক এনাম আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সব ধরনের স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিয়ে আমরা পণ্য বিক্রি করছি।
এমআই/আরএইচ