সবজির দামের লাগাম যেন কোনোভাবেই টানা যাচ্ছে না। রমজানের বাজারে এখন সবচেয়ে দামি সবজির তালিকায় রয়েছে সজিনা, বরবটি ও করলা। এগুলো ১০০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য সবজি ৪০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। অন্যদিকে গরু-খাসি-মুরগিসহ সব ধরনের মাংসের দামই বাড়তি যাচ্ছে।

ক্রেতাদের অভিযোগ, দুয়েকটি সবজির দাম কমলেও বেশিরভাগ সবজিরই মৌসুম অনুযায়ী দাম বাড়তি রয়ে গেছে। সেইসঙ্গে গরু-খাসি-মুরগিসহ সব ধরনের মাংস বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজারে আমরা যেমন দামে কিনতে পারি, সেই হিসাবেই খুচরা বাজারে বিক্রি করি। যে পণ্য আমাদের কিনতে বেশি দাম লাগে তা বাজারে বেশি দামে বিক্রি করি।

শুক্রবার (২২ মার্চ) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সজিনা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়, বরবটি প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া করলা প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, পটল কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া বাজারে অন্য সবজির মধ্যে‌ মুলার কেজি ৪০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, ঝিঙা ৫০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি, কাঁচাকলা প্রতি হালি ৪০ টাকা, জালি প্রতি পিস ৫০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৪০ থেকে ৬০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৭০ টাকা, শিম প্রতি কেজি ৪০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৩০ টাকা, টমেটো ৬০ টাকা, গাজর ৪০ টা এবং কাঁচামরিচ মানভেদে প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে বাজারে সব ধরনের মাংসের দামই বাড়তি যাচ্ছে। কিছুদিন রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে গরুর মাংস ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৭৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া খাসি প্রতি কেজি ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পাশাপাশি বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দামও, এটির এখন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ টাকা দরে। যা কিছুদিন আগেও ১৯০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে ছিল। এছাড়া সোনালী মুরগির দামও বেড়ে প্রতি কেজি এখন ৩৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে কক মুরগি প্রতি কেজি ৩৬০ টাকা, লেয়ার মুরগি প্রতি কেজি ৩০০ টাকা এবং দেশি মুরগি প্রতি কেজি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর মহাখালী বাজারে বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী মনিরুল ইসলাম বলেন, বাজারে দুই এক ধরনের সবজির দাম কম থাকলেও বেশিরভাগ সবজির দামই বাড়তি। সজনে-বরবটি, করলা, পটলের দাম অনেক বেশি। এগুলো আমাদের সাধারণ মানুষের পক্ষে কিনে খাওয়া সম্ভব না। সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে সব ধরনের পণ্য আনতে হলে অবশ্যই বাজার মনিটরিং বাড়াতে হবে।

অন্যদিকে রাজধানীর বনানী কাঁচাবাজারে আসা ক্রেতা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বাজারে ব্রয়লার থেকে শুরু করে মুরগিসহ সব ধরনের মাংস বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। বলতে গেলে নিয়মিত এসবের দাম বাড়ছে, দাম নিয়ন্ত্রণে থাকছে না কখনোই। রমজান মাস শুরু হওয়ার পর থেকে দশ টাকা পাঁচ টাকা বাড়তে বাড়তে ব্রয়লার মুরগির দাম এখন প্রতি কেজি ২৩০ টাকা। যা কয়েকদিন আগে ও ১৮০/ ১৯০ টাকা ছিল। এসব দেখার বা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কেউ নেই। বাজার মনিটরিং থাকলে এসব অসৎ ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের পকেট এভাবে কাটতে পারত না।

মুরগির দাম বাড়তির বিষয়ে গুলশান সংলগ্ন লেকপাড় বাজারের মুরগি বিক্রেতা আক্কাস আলী বলেন, আজকে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা বেড়ে ২৩০ টাকায়‌ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে। সোনালী, কক, লেয়ার মুরগির দামও আজকের বাজারে কিছুটা বেড়েছে। আসলে এগুলো আমাদের যখন যেরকম দামে কেনা হয় সেরকমই বিক্রি করতে হয়। বড় বড় যেসব ব্যবসায়ী আছে আড়ত আছে, অথবা যারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করে তারাই দাম বাড়ায়। আমাদের মতো ছোট ব্যবসায়ীরা শুধু পাইকারি নিয়ে এসে এখানে খুচরা বিক্রি করি। রমজানে মুরগির চাহিদা বেড়েছে, চাহিদার তুলনায় বাজারের সরবরাহ কিছুটা কম থাকার কারণে এর দাম বাড়তে পারে। পাশাপাশি মুরগির বাচ্চা ও খাবারের দাম বৃদ্ধিও দাম বাড়তি হওয়ার আরেকটি কারণ।

এএসএস/এমএ