ঢাকার বড় বিপণিবিতান থেকে শুরু করে ফুটপাত—শেষ সময়ে জমজমাট চলছে ঈদের কেনাকাটা। বড় শপিংমল, বিপণি বিতানগুলোতে সাধারণ ক্রেতাদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। 

এদিকে মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) বাংলাদেশের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। তাই পবিত্র ঈদুল ফিতর আগামী বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) উদযাপন হবে। ফলে একদিন বাড়তি কেনাকাটার সুযোগ পাচ্ছেন ক্রেতারা। 

অপরদিকে মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে রাত পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন শপিংমল, বিপণিবিতান ও ফুটপাতে কেনাকাটায় ব্যস্ততা দেখা গেছে। তবে নামীদামী শপিং মলগুলোতে ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের বেশি ভিড় ছিল।

রাজধানীর বসুন্ধরা শপিংমলে কথা হয় পুরান ঢাকা থেকে আশা ক্রেতা বদিউল আলম এবং তার স্ত্রী হেনা খাতুনের সঙ্গে। বদিউল আলম বলেন, কেনাকাটা আগেই প্রায় শেষ করেছি। শেষ সময়ের কিছু কেনাকাটা করতে আজ বসুন্ধরা সিটিতে এসেছি। মনে হয়েছে কিছু কিছু জিনিস কেনা দরকার, সে কারণে স্ত্রীকে সঙ্গে করে আসা। আমরা ভেবেছিলাম আজকে মার্কেট ফাঁকা পাবো। কিন্তু এসে দেখি অনেকে আজও মার্কেটে ভিড় করেছেন। সবারই হয়তো কিছু না কিছু কেনাকাটা বাকি রয়ে গেছে, এ কারণে সবাই আজ ভিড় করেছেন। 

বসুন্ধরা সিটির ছয় তলায় একটু জুতার শো-রুমে গিয়ে দেখা গেল সেখানেও ক্রেতায় ঠাসা। কথা হয় সেখানকার বিক্রয়কর্মী জাহিদ হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, গতকাল পর্যন্ত পর্যাপ্ত ভিড় ছিল। সেই তুলনায় আজ ক্রেতা কম। শেষ দিনেও এত বেশি কাস্টমার হবে তা আমরা বুঝতে পারিনি। আমাদের স্টাফরা কাজ করছে, কাস্টমারদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। মূলত আজ দুপুরের পর থেকে প্রচুর কাস্টমার এসেছেন। একইভাবে অন্যান্য জুতার দোকানেও প্রচুর ক্রেতার ভিড় দেখা গেছে। 

এই শপিংমলে জুতা কিনতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, কেনাকাটা মোটামুটি আগেই করে ফেলেছি। আজ নতুন করে মনে হলো একটি জুতা কেনা দরকার। তাই চলে এলাম।

নাদিরা আক্তার নামে এক ক্রেতা বলেন, বলতে গেলে শেষ দিনে কেনাকাটা করতে এসেছি। আগেও কিনেছি কিন্তু এখন কিছু জিনিস বাদ পড়েছে, তাই আজ ফের এসেছি। ঘুরে ঘুরে দেখছি, তবে শেষ সময় হওয়ার কারণে যেটা পছন্দ হচ্ছে তার কোনো সাইজ পাওয়া যাচ্ছে না। তবুও প্রতিটা ফ্লোরে কাস্টমারদের অতিরিক্ত ভিড়। 

আড়ং আউটলেটের বিক্রয় কর্মী রাজু আহমেদ বলেন, আজও আমাদের আউটলেটে অনেক কাস্টমারের ভিড়। তবে বেশি ভিড় ছেলেদের পাঞ্জাবি, আর মেয়েদের সেলোয়ার কামিজ সেকশন গুলোতে। দুপুরের পর থেকে প্রচুর কাস্টমার আসছেন।

বসুন্ধরা সিটি ছাড়াও নিউ মার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, ধানমন্ডি এলাকার শপিংমল গুলোতেও ক্রেতাদের ব্যাপক উপস্থিত দেখা গেছে। পাশাপাশি ফুটপাত গুলোতেও শেষ সময়ে ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত।

এলিফ্যান্ট রোডের ফুটপাতে পাঞ্জাবির পসরা সাজিয়ে বসে থাকা বিক্রেতা ইব্রাহিম খলিল বলেন, শেষ দিনেও বেচাকেনা ভালো হচ্ছে, ক্রেতাদের উপস্থিতিতে আমরা সন্তুষ্ট। অর্ধেক রমজান পর্যন্ত বলতে গেলে বেচাকেনা তেমন ছিল না, এরপর যা বেচাকেনা হয়েছে তা ১৫ রমজানের পর থেকে আজ পর্যন্ত। তবে শেষ সময়ে আজকের দিনে এত বেশি কাস্টমারদের আনাগোনা থাকবে তা আগে বুঝতে পারিনি, বিকেল থেকে ফুটপাতে প্রচুর পরিমাণে কাস্টমার আছে। পাশাপাশি কালকের আরেকটা দিন অতিরিক্ত পাওয়া গেল বেচাকেনা করার জন্য। আশা করছি কালকেও কাস্টমার থাকবে।

এএসএস/এমএসএ