চাহিদা অনুযায়ী গাড়ির বাজার সম্প্রসারণের জন্য নতুন ও রিকন্ডিশন্ড গাড়ির শুল্ক-কর বৈষম্য যৌক্তিকীকরণ করা জরুরি বলে মনে করে বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা)।

বুধবার (২৮ এপ্রিল) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আবদুল হকসহ একাধিক বক্তা এ দাবি তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, নতুন ও রিকন্ডিশন্ড গাড়ির শুল্ক-কর বৈষম্যের কারণে গত কয়েক বছর ধরে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির আমদানি উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। ফলে সরকারের রাজস্ব আয়ও হোঁচট খেয়েছে। এদিকে ১ বছর ধরে চলমান করোনা মহামারিতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে সরকারের দেওয়া প্রণোদনা প্যাকেজে একটি ট্রেডিং সংগঠন হিসেবে বারভিডা কোনো ঋণ সুবিধা পায়নি। চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার পরিবহনে বন্দর ভাড়ায় ছাড় দেওয়া হলেও বারভিডা বারবার আবেদন করেও করোনার সাধারণ ছুটিকালীন সময়ের জন্য পোর্ট চার্জ মওকুফ পায়নি। বিপর্যস্ত অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে তাই ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে বারভিডা তাদের প্রস্তাবসমূহের বাস্তবায়ন দেখতে চায়।

বারভিডা প্রেসিডেন্ট আবদুল হক বলেন, বারভিডা সরকারের ‘অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা ২০২০’ প্রণয়নের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। বারভিডা সবসময় দেশে খাতভিত্তিক নতুন শিল্প স্থাপনের পক্ষে এবং ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ডের মোটরকার বা বাংলাদেশের ‘ন্যাশনাল কার’ বারভিডার জন্যও অনেক গর্বের বিষয় হবে। তবে যে কোনো শিল্প স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণের আগে সংশ্লিষ্ট খাতের বিদ্যমান শিল্পগুলোর অবস্থান, বিশ্বের অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা এবং দেশের বাস্তবতাকে বিবেচনায় নেওয়া জরুরি। এক্ষেত্রে দীর্ঘ ৪ দশকের প্রতিষ্ঠিত রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি খাত যাতে কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখার আহ্বান জানাই।

বারভিডার আমদানি করা জাপানের পরিবেশবান্ধব এবং রি-সেল ভ্যালু সম্পন্ন গাড়িগুলো এদেশের ক্রেতাদেরও প্রথম পছন্দ। ক্রেতার পছন্দ উপেক্ষা করে দেশীয় গাড়ি নির্মাণের নামে দেশে যাতে কোনো ‘স্ক্রু ড্রাইভিং শিল্প’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ না নেওয়া হয় সে বিষয়ে বারভিডা আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।

আবদুল হক আরও বলেন, জাইকার মতো অনুযায়ী গাড়ির অভ্যন্তরীণ বাজার ১ লাখ ইউনিট হলে নতুন গাড়ির শিল্প প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। অথচ বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার ইউনিট গাড়ি বিক্রি হয়। সুতরাং স্থানীয় উৎপাদন এবং রফতানির পূর্বে দেশের গাড়ির বাজার সম্প্রসারণে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে নতুন এবং পুরনো গাড়ির শুল্ক-কর যৌক্তিকীকরণ অত্যন্ত জরুরি।

বারভিডা প্রেসিডেন্ট রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি ও বিপণন খাতের প্রস্তাব উপস্থাপন করে বলেন, গাড়ি আমদানিতে অবচয় সুবিধা বৃদ্ধি, হাইব্রিড ও ফসিল ফুয়েল চালিত গাড়ির সম্পূরক শুল্ক পুনর্বিন্যাস এবং মাইক্রোবাসের সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের আবেদন করছি। আমদানি নীতি অনুযায়ী পুরো ৫ বছরের অবচয় সুবিধারও দাবি জানায় বারভিডা।

সংবাদ সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহা. সাইফুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

আরএম/এসকেডি