করোনা মহামারি মানুষের আয়েও আঘাত করেছে। করোনায় অনেকে কর্মহীন হয়ে পড়েছে, অনেকের বেতন কমিয়ে দেওয়া হয়েছে, আবার অনেকের কর্ম থাকলেও বেতন অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। কিন্তু করোনায় ছাটাই কিংবা বেতন কমানো দূরে থাক, উল্টো করোনার মধ্যেও এ বছর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১১টি বোনাস দিয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী পিএইচপি গ্রুপ। কর্মীদের মূল বেতনের সমান এ বোনাস দেওয়া হয়েছে।

পিএইচপি ফ্যামিলির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মহসিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে পিএইচপি পরিবারের পক্ষ থেকে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গ্রুপের চেয়ারম্যান সুফী মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েই মূলত এটা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, করোনাকালে আমাদের অফিসের অন্যান্য যে খরচ আছে, তা অনেক কমিয়ে দিয়েছি। সবাই মিলে আমরা তা করেছি। অন্যান্য খরচ কমিয়ে কর্মকর্তা কর্মচারীদের বোনাস দেওয়ার চেষ্টা করেছি। মূলত আমাদের কোম্পানির যে প্রফিট হয়েছে তা শেয়ার করেছি কর্মচারীদের সঙ্গে, যাতে তারা সচ্ছল থাকতে পারে।

মহসিন বলেন, আমাদের কাছে কর্মচারীদের গুরুত্ব অনেক। তারা যদি ভালো থাকে তাহলে তারাই কোম্পানিকে ভালো রাখবে। এটাতে আমরা বিশ্বাস করি। আমাদের প্রতিষ্ঠানের উচ্চস্তরের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে কর্মচারী যারা আছেন, সবাই এ বোনাস পেয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা মূলত আমাদের লভ্যাংশ শেয়ার করি। বলতে পারেন ১১টি ঈদ বোনাস আমাদের পক্ষ থেকে। যারা কম বেতনের চাকরি করেন, তাদের সবাইকে বোনাস দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর যাদের বেতন বেশি তাদের দুই ঈদে ভাগ করে বোনাস দিচ্ছি।

পিএইচপি গ্রুপ সূত্রে জানা গেছে, এই গ্রুপে ১০ হাজার কর্মী কাজ করছেন। এতে প্রতিমাসে বেতন আসে ১১ কোটি টাকার মতো। ২০২০ সালে করোনাভাইরাস শুরু হওয়ার পর থেকে পিএইচপি পরিবার কোনো কর্মীর বেতন কাটেনি। বরং পিএইচপি ২০২০ সালে কর্মীদের ছয়টি বোনাস দিয়েছিল।

এ বছর সব কর্মচারীরা ৫ মের মধ্যে বোনাস পেয়েছেন। এতে খুশি পিএইচপি কর্মীরাও। মালিকপক্ষের এমন উদ্যোগ কাজের প্রতি তাদের আগ্রহ অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে।

পিএইচপি অটোমোবাইলস লিমিটেডের বিপণন বিভাগের প্রধান মেসবাহ উদ্দিন আতিক বলেন, আমি ৪ মে বোনাস পেয়েছি। আমরা পিএইচপিতে কাজ করতে পেরে গর্বিত। পিএইচপির মালিকপক্ষ কর্মচারীদের কথা চিন্তা করে ও তাদের মূল্যায়ন করে।

পিএইচপি পরিবারের ডেপুটি ম্যানেজার (হিউম্যান রিসোর্স) আবদুল মোমেন বলেন, গত বছর করোনা মহামারি চলাকালেও আমরা ইনক্রিমেন্ট পেয়েছি। কারও বেতন-ভাতা কাটা হয়নি।

১৯৯৯ সালে যাত্রা শুরু করে পিএইচপি গ্রুপ। এতে স্টিল, ফ্লোট গ্লাস, অ্যালুমিনিয়াম, টেক্সটাইল, বিদ্যুৎ, পেট্রো শোধনাগার, আর্থিক পরিষেবা, কৃষি, অটোমোবাইল ইত্যাদির মতো বিভিন্ন খাতে কাজ করছে এমন ৩০টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। গ্রুপটির বার্ষিক টার্নওভার পাঁচ হাজার কোটি টাকা।

কেএম/এসএসএইচ