২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেটে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সুনির্দিষ্ট স্বল্প ও মধ্য মেয়াদি পরিকল্পনা দেখতে চান দেশের অর্থনীতিবিদরা। পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারিভাবে বিনিয়োগ বাড়াতে পরিকল্পনা গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন তারা।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, করোনার কারণে দেশে নতুন করে কয়েক লাখ মানুষ মধ্যবিত্ত থেকে দরিদ্র হয়েছে। তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। পাশাপাশি বাড়াতে হবে সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগও।

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, এবার সম্প্রসারণমূলক বাজেট হচ্ছে। এ বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। নজর দিতে হবে স্বাস্থ্য খাতের দিকেও। এসব খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, করোনার কারণে চাকরি হারানোর পাশাপাশি নতুন করে দরিদ্র হওয়া ব্যক্তিদের কর্মসংস্থান বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ রাখতে হবে। ভারত-পাকিস্তানসহ বেশির ভাগ দেশের মানুষের ওপর ৭-৮ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে। অথচ আমাদের দেশের ১৫ শতাংশ করে ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। এগুলো আরও কমানো উচিত।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ঢাকা পোস্টকে বলেন, এবারের বাজেটে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিতে হবে। এ অভিজ্ঞতার আলোকে নতুন বছরে বাজেট প্রণয়ন প্রয়োজন। বাজেটে করোনা মোকাবিলায় স্বল্প ও মধ্য মেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে। বর্তমান বাজেট বাস্তবায়নে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করে তা কাটিয়ে উঠতে হবে। কৃষি ও স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। বড় বড় প্রকল্পগুলো যথাসময়ে শেষ করতে হবে। তাতে করোনায় চাকরি হারানো ব্যক্তিদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে।

এবারে বাজেট জনবান্ধব হওয়া উচিত বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, করোনায় মানুষের আয় কমেছে। লাখ লাখ মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। এদের সংখ্যা বিশাল। সুতরাং এই জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান এবং আয়ের পথ চিন্তা করেই বাস্তবসম্মত বাজেট প্রণয়ন উচিত। যেন বাজেটটা বাস্তবায়ন যোগ্য হয়।

ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাজেটে করোনা মহামারি রোধের অবশ্যই বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে। এ জন্য স্বাস্থ্য খাতের বিশেষ নজর দিতে হবে। সবার জন্য ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করতে হবে।

উল্লেখ্য,২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার হচ্ছে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা যা মোট জিডিপির ১৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ। চলতি সংশোধিত বাজেটের তুলনায় নতুন বাজেটের আকার বাড়ছে ৬৪ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের আকার ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৯৪৩ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ছিল ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা।

এমআই/এসকেডি