বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু, একটি থেকে আরেকটি আলাদা করা যায় না। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মেধাসম্পদ ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি বাংলাদেশের ডিজাইন করেছেন, দিয়েছেন পেটেন্ট। বঙ্গবন্ধুর চেয়ে বড় ডিজাইনার আর কেউ নেই বলে মন্তব্য করেছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে ‘জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে মেধাসম্পদ’ শীর্ষক সেমিনার এবং বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস ২০২১ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন, ডিজাইন ও নির্দেশনা দিয়েই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। তারই কারণে বাংলাদেশ হলো, একটি জাতি হলো এবং একটি মানচিত্রের জন্ম নিল। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরাধিকার প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা ‌এই জায়গায় এসে পৌঁছেছি। কোভিডকালীন সময় প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে জীবন ও জীবিকা নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদফতরের (ডিপিডিটি) উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন ডিপিডিটির ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. ওবায়দুর রহমান। এ সময় শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব লুৎফুন নাহার বেগম এবং মো. সানোয়ার হোসেন ও ডিপিডিটি’র রেজিস্ট্রার মো. আবদুস সাত্তার উপস্থিত ছিলেন।

শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, বিশ্ব সৃজনশীলতার প্রতিযোগীতায় এগিয়ে যেতে হলে দেশের সফল গবেষক, প্রযুক্তিবিদ, শিল্পপতি, ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে মেধাসম্পদ সংরক্ষণ এবং এর যথাযথ ব্যবহারে এগিয়ে আসতে হবে।

শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের মাধ্যমেই সীমিত সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব। আর এ লক্ষ্যে মেধাসম্পদ সংরক্ষণে অগ্রণী প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদফতর তথা শিল্প মন্ত্রণালয় এক সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।

ডিপিডিটির ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে আমরা ৬ হাজার ২১টি পেটেন্ট সনদ, ১৮ হাজার ৪৯৮টি ডিজাইন সনদ এবং ৬২ হাজার ৬০৯টি ট্রেডমার্কস নিবন্ধন সনদ দিয়েছি। আমরা বাংলাদেশের ইলিশ, জামদানি, ঢাকাই মসলিম, খিরসাপাত আম, চিনিগুড়া ও কাটারীভোগ চাল, শতরঞ্জি, রাজশাহী সিল্ক এর ভৌগোলিক পণ্যের নিবন্ধন সনদ দিয়েছি। এছাড়াও আমরা অনলাইন সেবা চালু করেছি, যার মাধ্যমে সেবাগ্রহীতা এখন ঘরে বসে নিবন্ধন সেবা নিতে পারছেন।

পরে মন্ত্রী পেটেন্ট, ডিজাইন, ট্রেডমার্কস এবং ভৌগোরিক নির্দেশক পণ্যের (জিআই) সনদ প্রদান করেন। ‘পেটেন্ট’-এ বিজয় ডিজিটালের মোস্তফা জাব্বার ও হিসাব লিমিটেডকে; ‘ডিজাইন’-এ বিডি ফুড লি., জিহান প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ, আমান প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজকে; ও ‘ট্রেডমার্কস’-এ মোহনা টেলিভিশন লি., এসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রাম, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লি., স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল লি., গোল্ডেন ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল বিডি, প্রাণ আরএফএল গ্রুপ লি. এবং ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডকে শিল্পমন্ত্রী সনদ প্রদান করেন।

এছাড়া, ভৌগোরিক নির্দেশক পণ্য (জিআই) হিসেবে ঢাকাই মসলিন বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম, রংপুরের শতরঞ্জি বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশশের (বিসিক) চেয়ারম্যান মো. মোশতাক হাসান, রাজশাহী সিল্ক বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মু. আবদুল হাকিম, বিজয়পুরের সাদামাটি নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান, দিনাজপুরের কাটারীভোগ ও বাংলাদেশ কালিজিরা বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউশনের (ব্রি) মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীরকে সনদ প্রদান করেন।

এসআই/এমএইচএস