করোনাভাইরাস মহামারিতে গত বছরের এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যে অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতায় স্বল্প আয় ও অনানুষ্ঠানিক খাতে সম্পৃক্তরা উপার্জনের সুযোগ হারিয়েছেন। ৭৭ শতাংশ পরিবারের গড় মাসিক আয় কমেছে এবং ৩৪ শতাংশ পরিবারের কেউ না কেউ চাকরি অথবা আয়ের সক্ষমতা হারিয়েছেন।

এছাড়া, এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যে দৈনন্দিন খরচ মেটাতে পরিবারগুলো সঞ্চয় ও ধারদেনার ওপর নির্ভরশীল ছিল। পরিবারগুলোর গড় মাসিক সঞ্চয় ৬২ ভাগ কমে ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ৩১ শতাংশ। 

ব্র্যাক, ইউএন উইমেন বাংলাদেশ এবং নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির যৌথ গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে। করোনাকালে বিপরীতমুখী অভিবাসনের প্রভাবে বাংলাদেশের মধ্যম মানের শহর, উপজেলা এবং গ্রামীণ অঞ্চলে জনমিতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক পরিবেশের ওপর পরিবর্তনগুলো গবেষণায় তুলে ধরা হয়।

‘কোভিড-১৯-এর কারণে জনমিতিক ও আর্থসামাজিক পরিবর্তনসমূহ : নতুন পরিস্থিতির চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এ গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য ও ফল বুধবার (২৩ জুন) রাতে ভার্চুয়াল আন্তর্জাতিক সংলাপের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।

নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির সেন্টার অন ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন-এর প্রোগ্রাম লিড লিয়া জেমোর এ অনলাইন সংলাপ সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানে গবেষণা ফল উপস্থাপন করেন ব্র্যাক বাংলাদেশ-এর ঊর্ধ্বতন পরিচালক কেএএম মোর্শেদ। 

উপস্থাপনা শেষে আলোচনায় অংশ নেন ইউএন উইমেন বাংলাদেশ-এর আবাসিক প্রতিনিধি শোকো ইশিকাওয়া, কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. ডেনিয়েল নাওজোকস এবং ব্র্যাক ইউএসএ- এর পরিচালক (স্বাস্থ্য) ড. এডাম সোয়ার্টজ।

গবেষণার তথ্য ও ফলাফল উপস্থাপনের পর নীতিবিষয়ক আলোচনায় শোকো ইশিকাওয়া বলেন, বাংলাদেশে দেড় বছরের উপরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে ডিজিটাল পদ্ধতিতে শেখার সুযোগও অত্যন্ত সীমিত। দীর্ঘসময় স্কুল বন্ধ থাকার কারণে বাল্যবিবাহ বেড়ে গেছে।

সংখ্যাবাচক ও পরিমাণবাচক উভয় পদ্ধতি প্রয়োগে পরিচালিত গবেষণাটির সময়কাল ২০২০ সালের ১০-২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত, ছয় হাজার ৩৭০টি খানা তাতে অংশ নেয়। গত বছরের এপ্রিল-অক্টোবর সময়কালকে ভিত্তিকাল (রেফারেন্স পিরিয়ড) হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

পিএসডি/আরএইচ