স্ত্রী সন্তানসম্ভবা। এমন সময় চাকরি চলে গেছে যুবকের। এর কিছুদিন আগে তিনি শেয়ার মার্কেটে লোকসানের মুখে পড়েছেন। করোনাকালে এমন পরিস্থিতিতে মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মাহত্যার সিদ্ধান্ত নেন যুবক। তারপর আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে খেয়ে নেন ঘুমের ওষুধ। 

পরে নিজের ভুল বুঝতে পেরে বাঁচার জন্য জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) কল দেন ওই যুবক। সঙ্গে সঙ্গে বাসায় ছুটে আসে পুলিশ। রাজধানীর সবুজবাগের বাসা থেকে তাকে অর্ধচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। দ্রুত নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসায় রক্ষা পায় যুবকের প্রাণ। 

সোমবার (১১ জানুয়ারি) ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে। ‘জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯’র পরিদর্শক আনোয়ার সাত্তার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

সম্প্রতি তার চাকরি চলে যাওয়ায় তিনি অর্থসংকটে পড়েন। এর আগে শেয়ার মার্কেটে তিনি লোকসানের মুখে পড়েন। কয়েক মাস আগে তিনি বিয়ে করেছেন এবং তার স্ত্রী সন্তানসম্ভবা।

পরিদর্শক আনোয়ার সাত্তার বলেন, ‘সোমবার ভোররাত পৌনে ৩টায় ‘জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯’ নম্বরে কল করে ওই যুবক জানান তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। আত্মহত্যা করার জন্য তিনি অনেকগুলো ঘুমের ওষুধ খেয়েছেন।

যুবক ফোনে জানান, তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ’র ছাত্র। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। সম্প্রতি তার চাকরি চলে যাওয়ায় তিনি অর্থসংকটে পড়েন। এছাড়া এর আগে শেয়ার মার্কেটে তিনি লোকসানের মুখে পড়েন। কয়েক মাস আগে তিনি বিয়ে করেছেন এবং তার স্ত্রী সন্তানসম্ভবা।

পরিবারে নানা রকম সমস্যার কথা উল্লেখ করে আত্মহত্যার চেষ্টা করা ওই যুবক জানান, তিনি আর মানসিক চাপ নিতে না পেরে ঘুমের ওষুধ খেয়েছেন। কিন্তু এখন তিনি ভুল বুঝতে পেরেছেন। তিনি এখন বাঁচতে চান। তাই তিনি ৯৯৯ এ কল দিয়েছেন।

৯৯৯ নম্বরে কল করে যুবক জানান, তিনি অনেকগুলো ঘুমের ওষুধ খেয়েছেন।

যুবক ফোনে আরও জানান, তার শরীর খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।

আনোয়ার সাত্তার বলেন, যুবক রাজধানীর সবুজবাগ থানা এলাকায় মধ্য বাসাবোর একটি বাসায় থাকেন। ৯৯৯ তাৎক্ষণিকভাবে যুবকের সঙ্গে সবুজবাগ থানার ডিউটি অফিসারকে কথা বলিয়ে দেয়। সংবাদ পেয়ে সবুজবাগ থানার একটি দল দ্রুত যুবকের বাসায় যান।

পরে সোমবার ভোর সাড়ে চারটায় সবুজবাগ থানার এএসআই মনির ৯৯৯ নম্বরে কল করে জানান, তিনি ওই যুবককে অর্ধচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশের টহল গাড়িতে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান। সেখানে দ্রুত তার পাকস্থলী পরিষ্কার করে চিকিৎসা করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ওই যুবক এখন আশঙ্কামুক্ত। 

পরে ওই যুবককে ভোরে পুলিশের টহল গাড়িতে করে তার বাসায় পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

এমএসি/এইচকে