লিটারে চার টাকা কমানোর ঘোষণা দেওয়ার তিন দিন পরও রাজধানীর খুচরা বাজারে ভোজ্য তেল বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই। তেলের পাশাপাশি চাল-ডাল, আটা-ময়দা এবং চিনিও বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে।

শনিবার (৩ জুলাই) রাজধানীর মালিবাগ, রামপুরা, বাড্ডা এলাকায় দেখে গেছে, এক লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৫৩ টাকায়। অথচ শুক্রবার (১ জুলাই) থেকে এই তেল বিক্রি করার কথা ১৪৯ টাকা লিটার। একইভাবে ৫ লিটার বোতলের তেল বিক্রি করার কথা ৭১২ টাকায়। কিন্তু বিক্রি হচ্ছে ৭৩৫-৭৪০ টাকায়। 

আরও পড়ুন : বেড়েছে মরিচ, বেগুন ও শসার দাম

লিটারপ্রতি খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১২৮-১২৯ টাকা, কোথাও কোথাও বিক্রি হচ্ছে ১৩৫-১৪০ টাকা দরে। একই তেল শুক্রবার থেকে লিটারপ্রতি বিক্রির কথা ১২৫ টাকায়। এছাড়াও পামওয়েল বিক্রি হচ্ছে ১১৫-২১০ টাকা লিটার। বিক্রির কথা ছিল ১০৮ টাকায়। 

গত ৩০ জুন ভোজ্যতেল পরিশোধন ও বিপণনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে তেলের দাম কমানোর ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৪ টাকা কমানোর হয়েছে। যা ১ জুলাই শুক্রবার থেকে খুচরা বাজারে কার্যকর হবে। কিন্তু খুচরা বাজারে আজ শনিবারও গিয়ে দেখা গেছে উল্টো চিত্র।

সংগঠনের সচিব নূরুল ইসলাম মোল্লা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা তো তেলে দাম কমিয়েছি। খুচরা ব্যবসায়ীরা না কমালে বাজার মনিটরিং টিম বিষয়টি দেখভাল করবে।

রামপুরা বাজারে ব্যবসায়ী মিনহাজ আকন্দ ঢাকা পোস্টকে বলেন, এই তেল আগের কেনা। তাই আগের দামেই বিক্রি করছি। বেশি দামে কিনে কম দামে বিক্রি করে আমরা কি লস দিমু?

একই কথা বলেন, মালিবাগ বাজারের ব্যবসায়ী এনায়েত উল্লাহ। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার মাল এক সপ্তাহ আগের, তাই আগের দামেই বিক্রি করছি। 

ক্রেতা হারুন অর রশিদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, খবরে দেখলাম তেলের দাম কমেছে। বাজারে দেখি বাড়তি। একবার কোনো জিনিসের দাম বাড়লে আর কমে না। ব্যবসায়ীদের কথায় কোনো বিশ্বাস নেই। কথা কাজে তাদের কোনো মিল নেই।

এদিকে তেলের পাশাপাশি চাল-ডাল বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। রাজধানীর বাজারগুলোতে সবচেয়ে কম দামের চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। মোটা এই চালের নাম পাইজম। ২৮-২৯ নম্বর চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২-৫৪ টাকা কেজিতে। এর চেয়ে চিকন চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৫৮ টাকা কেজিতে। ভালো মানের নাজির ও মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজিতে। আর একটু নিম্নমানের মিনিকেট ও নাজির বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজিতে। আর বাসমতি চাল বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা কেজিতে।

ডালের মধ্যে বড় দানার মশুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা কেজিতে। মাঝারি দানার ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা আর ভালো ছোট দানার ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২০-১২৫ টাকা কেজি। মুগ ডাল বিক্রি হচ্ছে ১১০-১৩০ টাকা কেজিতে।

খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ৩২-৩৩ টাকা কেজিতে। প্যাকেটজাত আটা বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা কেজি। খোলা ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৩৬-৪০ টাকা কেজি। আর প্যাকেটজাত ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৪২-৪৫ টাকা কেজি। এছাড়া চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকা কেজিতে।

এমআই/এইচকে