শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বলেছেন, সরকারি নিয়ম অনুসারে তৈরি পোশাকসহ সব কারখানা শ্রমিকের ঈদের ছুটি তিন দিনই থাকবে। কারখানা শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস আগামী সোমবারের (১৯ জুলাই) মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।

তিনি বলেন, ঈদের ছুটি তিন দিনই থাকবে। এ ক্ষেত্রে কারখানা মালিকরা ইচ্ছা করলে আরও বেশি দিন ছুটি দিতে পারেন। এটা মালিক ও শ্রমিকদের ব্যাপার। তবে ঈদের ছুটির আগের দিন অর্থাৎ ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস পরিশোধ করতে হবে। বেতন-বোনাস পরিশোধে ব্যর্থ হলে আইনের আশ্রয় নেওয়া হবে।

মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর শ্রম ভবনের সভাকক্ষ আরএমজি বিষয়ক পরামর্শক পরিষদের ১০ম সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের সভাপতিত্বে সভায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহজাহান খান, তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহসভাপতি নাসির উদ্দিন ও পরিচালক হারুন উর রশিদ, বিকেএমইএর প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, শ্রমিক নেতা সিরাজুল ইসলাম রনি, কামরুল হাসান ও নাজমা আকতার উপস্থিত ছিলেন।

বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান বলেন, এর আগে মন্ত্রণালয় নিজ উদ্যোগে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস আদায় করেছে। ইতোমধ্যে বেতন দেওয়া শুরু হয়েছে। অধিকাংশ কারখানাই শ্রমিকদের বেতন দিয়েছে। কিছু কারখানা বাকি আছে। তারা একই সঙ্গে বেতন-বোনাস দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সব কারখানাকে ছুটির আগেই শ্রমিকের বোনাস পরিশোধ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে বোনাস পরিশোধ করেই কারখানা ছুটি দেবেন মালিকপক্ষ।

ঈদের পর কারখানা ছুটির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এবারের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আগের চেয়ে ভয়াবহ। আগে মৃত্যু ও আক্রান্ত কম ছিল, এবার তা ভয়াবহ আকার নিয়েছে। এ অবস্থায় ঈদে কারখানার শ্রমিকরা বাড়িতে যাবেন বলে মনে হচ্ছে না।

সভায় শ্রমিক নেতা নাজমা আক্তার বলেন, বড় কারখানাগুলোতে বেতন হলেও ছোট-মাঝারি কারখানাতে এখনো হয়নি। এভাবে দুই ধরনের নিয়ম হলে মানা যায় না। তাছাড়া এখন মালিকদের অর্ডার ভালো আসছে, মুনাফা হচ্ছে বেশি। এ ক্ষেত্রে বেতন-বোনাসের পাশাপাশি চলতি মাসের ১৫ দিনের বেতন দেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। একইসঙ্গে শ্রমিকদের টিকা নিশ্চিতে মালিকপক্ষ ও সরকারের মধ্যে সমন্বয়ের কথা বলেন এ নেতা।

শিল্প পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি শফিকুল ইসলাম বলেন, মালিক-শ্রমিক মিলেই আজকের এ শিল্পকে অনেক দূরে নেওয়া সম্ভব হয়েছে। আপনারা একে অপরের অংশ। অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে যায় মালিকের অজান্তেই। এ ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার পরই সব ত্রুটি উঠে আসে। আমাদের পরামর্শ থাকবে আপনারা সরকারের নির্দেশনা মেনে কারখানা গড়ে তুলুন। শ্রমিকদের সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের পাওনা বুঝিয়ে দিন।

বিজিএমইএর সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, আমাদের অনেক ছোট ও মাঝারি কারখানা আছে, সবার অবস্থা একই রকম না। অনেকেই বেতন দিতে পারবেন কিন্তু বোনাস দিতে কষ্ট হয়। এরপরও তারা বোনাস পরিশোধ করেন। এখন অর্ডার বেশি আসছে যেমন ঠিক, তেমনি টেকসই সুতার দাম আকাশ ছোঁয়া। কীভাবে আমরা কারখানায় উৎপাদন টিকিয়ে রাখব।

বিকেএমইএর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আমরা অনেক কষ্ট করে মহামারির মধ্যে বেতন-বোনাস দিচ্ছি। এ অবস্থায় অতিরিক্ত বেতন কীভাবে হবে। ছুটির বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা সরকারের যেকোনো সিদ্ধান্ত মেনে নিতে চাই। সরকার যা চাইবে আমরা তা মেনে নেব।

এমআই/ওএফ/জেএস/এমএইচএস