দুর্ভোগ আর ভোগান্তি পেরিয়ে কারখানায় উপস্থিত হন শ্রমিকরা

অনুমতি থাকার পরও রোববার (১ আগস্ট) তৈরি পোশাক খাতের ৪৬৩টি অর্থাৎ প্রায় পাঁচশ কারখানার কার্যক্রম বন্ধ রাখে মালিক পক্ষ। এসব প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগই করোনা রোধে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধের পর (অর্থাৎ ৫ আগস্টের পর) থেকে চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। শিল্প পুলিশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

শিল্প পুলিশের তথ্যমতে, তৈরি পোশাক মালিকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন বিজিএমইএ’র সদস্যভুক্ত এক হাজার ৬৪৮টি কারখানার মধ্যে রোববার (১ আগস্ট) খোলা হয়েছে এক হাজার ৫১০টি কারখানা। এ সময় বন্ধ ছিল ১৩৮টি কারখানা।

অপরদিকে নিটওয়্যার মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ’র সদস্যভুক্ত ৭৪৭টি কারখানার মধ্যে রোববার খোলা ছিল ৫৪৯টি কারখানা। বন্ধ ছিল ২৪৮টি কারখানার কার্যক্রম। এছাড়া বিটিএমএ’র ৩৩০টি কারখানার মধ্যে ২৫৩টি কারখানা খোলা ছিল। বিপরীতে বন্ধ ছিল ৭৭টি কারখানা। সব মিলিয়ে পোশাক খাতের দুই হাজার ৭২৫টি কারখানার মধ্যে বন্ধ ছিল ৪৬৩টি কারখানা।

এছাড়া শিল্প পুলিশের আওতাধীন এলাকায় পোশাকসহ সব ধরনের আট হাজার ২৬৬টি কারখানার মধ্যে খোলা ছিল চার হাজার ৮৫৭টি কারখানা। বিপরীতে বন্ধ ছিল তিন হাজার ৩৬৯টি কারখানা। অর্থাৎ ৫৯ শতাংশ কারখানা খোলা ছিল ও ৪১ শতাংশ কারখানা বন্ধ ছিল।

অথচ এ সময়ে চাকরি বাঁচাতে হেঁটে, ট্রাকে কিংবা পিকআপে করে পথে পথে ভোগান্তি সহ্য করে কর্মস্থলে ফিরেছেন পোশাক শ্রমিকরা। কারণ গণপরিবহন বন্ধ রেখে সরকার গার্মেন্টস খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। চাকরি বাঁচাতে করোনাভাইরাসকে তোয়াক্কা না করে গাধাগাধি করে ফেরি কিংবা ট্রাকে করে ঢাকায় ফিরেছেন শ্রমিকরা। এসব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, টুইটার এবং ইন্সটাগ্রামে ভাইরাল হয়েছে।

জানতে চাইলে বিজিএমইএ’র ভাইস প্রেসিডেন্ট শহিদুল্লাহ আজীম ঢাকা পোস্টকে বলেন, পোশাক খাতের ৯২ শতাংশ শ্রমিক কারখানায় হাজির হয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫-৯০ শতাংশ শ্রমিকই কারখানার আশপাশের এলাকায় বসবাস করেন।

তিনি বলেন, শ্রমিকরা যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন, সঠিকভাবে মাস্ক পরেন, সেজন্য বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে ১৫টির বেশি টিম গঠন করা হয়েছে। তারা কারখানাগুলো পরিদর্শন করছেন। বিষয়গুলো দেখভাল করছেন।

নিটওয়্যার ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিকেএমইএ’র পরিচালক ফজলে এহসান শামীম ঢাকা পোস্টকে বলেন, কিছু কারখানায় ৮২ শতাংশ শ্রমিক এসেছেন। আবার কিছু কারখানায় ৯২ শতাংশ শ্রমিক আজ (রোববার) কাজ করেছেন। সব মিলিয়ে ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ শ্রমিক কারখানাগুলোতে কাজ করেছে।

এর আগে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ’র পক্ষ থেকে বলা হয়, ১ আগস্ট থেকে দেশের সব রফতানিমুখী শিল্পকারখানা চালু হচ্ছে। বিধিনিষেধের কারণে বেশিরভাগ শ্রমিক এখনও গ্রামের বাড়িতে রয়েছেন। সব শ্রমিকের পক্ষে তাই রোববার কাজে যোগ দেওয়া সম্ভব হবে না। ফলে কারখানার আশপাশে থাকা শ্রমিকদের দিয়ে কারখানা চালু করা হবে।

এ বিষয়ে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছিলেন, আশপাশে বসবাসকারী শ্রমিকদের দিয়েই রোববার রফতানিমুখী শিল্প-কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম চালু করা হবে। এ সময়ের মধ্যে যেসব শ্রমিক কাজে যোগ দিতে পারবেন না তাদের চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হবে না। কঠোর বিধিনিষেধ শেষ হলে পর্যায়ক্রমে ঈদের ছুটিতে গ্রামে যাওয়া শ্রমিকরা কারখানার কাজে যোগ দেবেন।

এমআই/এসএসএইচ