আড়তের সামনে ফেলে রাখা হয়েছে পচে যাওয়া রসুনের বস্তা

চট্টগ্রামের বৃহত্তম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের আড়তে পচে গেছে আমদানি করা বিপুল পরিমাণ আদা ও রসুন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রায় এক হাজার বস্তার মতো আদা-রসুন পচে গেছে। বিধিনিষেধের কারণে দোকানপাট বন্ধ থাকায় পণ্য বিক্রি না হওয়ায় এমনটি হয়েছে বলে দাবি তাদের।

মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিঞা মার্কেট কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঈদ উপলক্ষে ব্যবসায়ীরা প্রচুর মালামাল এনেছিল। ঈদের পরপরই আবার লকডাউন শুরু হয়ে গেছে। ফলে বাজারে ক্রেতা আসতে পারেনি। কাঁচামাল হওয়ায় আদা, রসুন পচে যাচ্ছে। এতে বিশাল ক্ষতির মুখে পড়েছেন খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা। প্রত্যেক আড়ৎ ও গুদামে একই অবস্থা। অনেকে পচে যাওয়া আদা রসুন ফেলে দিচ্ছেন।

মঙ্গলবার দুপুরে খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজ, আদা, রসুনের মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, বেশ কয়েকটি আড়তের সামনে পচা আদার বস্তা ফেলে রাখা হয়েছে। এছাড়া আড়তের ভেতরেও বস্তায় বস্তায় পচা আদা ও রসুন দেখা গেছে। 

মেসার্স মো. ইদ্রিছ সওদাগর আড়তে দেখা যায়, চীন থেকে আনা রসুনের বস্তায় রসুন পচে গেছে। আড়তের মালিক মো. ইদ্রিছ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঈদের আগে রসুনগুলো এনেছিলাম। ঈদের ছুটি ও লকডাউনের কারণে মালগুলো বিক্রি করতে পারিনি। ফলে অনেক রসুন ফেলে দিতে হয়েছে। আমার কাছ থেকে যারা রসুন নিয়েছিলেন তাদেরও রসুন নষ্ট হওয়ায় ফেলে দিতে হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গোডাউনে এখনো যেসব বস্তায় রসুন আছে সেগুলোর কেউ দাম বলছে না। এগুলোও ফেলে দিতে হবে। যার থেকে মাল ক্রয় করেছিলাম তাকে দেখানোর জন্য রসুনের বস্তা রেখেছি। ১৪০০ বস্তা রসুনের মধ্যে ৭০০ বস্তা ফেলে দিতে হয়েছে বলে জানান এ ব্যবসায়ী।


 
আল মারুফা বাণিজ্যালয়ের মালিক মোহাম্মদ জাকির ঢাকা পোস্টকে বলেন, গোডাউনে আদা ছিল, কিন্তু কেনার মতো কেউ ছিল না, তাই আদা পচে গেছে। আদা প্রায় ১০০ বস্তার মতো পচে গেছে। কিছু ফেলে দিয়েছি, বাকিগুলোও ফেলে দিতে হবে।

মেসার্স ইবতেহাজ ট্রেডার্সের পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল আজিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, লকডাউন ও কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে খাতুনগঞ্জে ক্রেতা নেই। সে কারণে ১০ বস্তার মতো আদা নষ্ট হয়ে গেছে। এগুলো ফেলে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।

এদিকে খাতুনগঞ্জে কমেছে আদা ও রসুনের দাম। চীনের ভালোমানের রসুন কেজি প্রতি ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, আদা বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। আর মিয়ানমার থেকে আনা আদা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। খাতুনগঞ্জে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজিতে।

মেসার্স আলীম ট্রেডাসের মালিক মো. জসিম উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, লকডাউনের কারণে খাতুনগঞ্জে ক্রেতা নেই বললেই চলে। গোডাউনে রাখা পণ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ঈদের আগে যে আদা বিক্রি হয়েছিল ১৬০ টাকা কেজিতে, এখন সেই আদা ৭৫ থেকে ৮০ টাকা। তারপরও ক্রেতা নেই। মিয়ানমারের আদা বিক্রি হয়েছিল ৬৫ টাকা করে। আজকে তা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। রসুনও কেজিপ্রতি এখন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮২ টাকায়। যা ঈদের আগে বিক্রি হয়েছিল ১৭০ টাকায়। পেঁয়াজ আজকে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। 

কেএম/জেডএস/জেএস