পি কে হালদারের নেতৃত্বে চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় হাজার কোটি টাকা, বিষয়টি তদন্ত করছে দুদক

এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার (পিকে হালদার) কেলেঙ্কারিতে এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের শীর্ষ ৮ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের যোগসাজশে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ও এফএএস ফাইন্যান্স থেকে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা লুটপাটের যে অভিযোগ রয়েছে তা খতিয়ে দেখতেই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

আজ সোমবার (১৬ আগস্ট) সাড়ে ১০টা থেকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন দুদক উপপরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে একটি টিম। আর এ জিজ্ঞাসাবাদ বিকেল পর্যন্ত চলবে। দুদকের জনসংযোগ দফতর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

আজ এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের মোট ১১ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা রয়েছে। তারা হলেন- এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সহকারী ব্যবস্থাপক নিয়াজ আহমেদ ফারুকী, দিপক কুমার চক্রবর্তী, প্রতিষ্ঠানটির সাবেক এসভিপি ও কর্পোরেট ফিনান্স অ্যান্ড রিকভারি এবং আইন বিভাগের প্রধান জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া, প্রিন্সিপাল শাখার ব্যবস্থাপক তানভির আহমেদ কমল, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ফাইস প্রেসিডেন্ট মীর ইমাদুল হক, ভিপি মো. মনির হোসেন, সিনিয়র অফিসার মিসেস মৌসুমী পাল, ম্যানেজার আহসান রাকিব, সাবেক সিনিয়র অফিসার মিসেস তাসনিয়া তাহসিন রোজালিন, সাবেক ভিপি মো. মনিরুজ্জামান আকন্দ, সাবেক এসভিপিও এসএমই ফিনান্সের প্রধান মো. আজিমুল হক এবং এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক এসইভিপি ও সিএডির প্রধান প্রাণ গৌরাঙ্গ দে।

গত ৮ আগস্ট এফএএস ফাইন্যান্সের শীর্ষ ২৬ কর্মকর্তা ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ৪ জনসহ মোট ৩০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে দুদক।

অভিযোগ রয়েছে, আলোচিত প্রশান্ত কুমার হালদার ও তার সহযোগীদের যোগসাজশে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ও এফএএস ফাইন্যান্স থেকে লুটপাট হয় দুই হাজার কোটি টাকা। শুধুমাত্র একটি কম্পিউটার ব্যবহার করে ৩০টি কাগুজে প্রতিষ্ঠান তৈরি করে মর্টগেজ ছাড়াই ঋণ নিয়ে এমন আত্মসাতের ঘটনা ঘটে। আরবি এন্টারপ্রাইজ, জিঅ্যান্ডজি এন্টারপ্রাইজ, তামিম অ্যান্ড তালহা এন্টারপ্রাইজ, ক্রসরোড কর্পোরেশন, মেরিন ট্রাস্ট, নিউটেক, এমএসটি মেরিন, গ্রিন লাইন ডেভেলপমেন্ট, মেসার্স বর্ণসহ প্রায় ৩০টির মতো অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করা হয়েছে। যার রেকর্ডপত্র সংস্থাটির অনুসন্ধান টিমের কাছে রয়েছে। 

দুদক উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে একটি টিম পিকে হালদারসহ সংশ্লিষ্টদের আর্থিক কেলেঙ্কারির বিষয়টি অনুসন্ধান করছে। ওই টিম এরই মধ্যে ১৫টি মামলা করেছে।

ক্যাসিনো অভিযানের ধারাবাহিকতায় প্রায় ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে প্রথম মামলা করে দুদক। চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি দুদকের অনুরোধে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা দিয়ে রেড অ্যালার্ট জারি করে ইন্টারপোল। 

পিকে হালদার কেলেঙ্কারিতে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন ১১ জন। যাদের মধ্যে উজ্জ্বল কুমার নন্দী ছাড়াও পিকে হালদারের সহযোগী শংখ বেপারী, রাশেদুল হক এবং সর্বশেষ অবন্তিকা বড়াল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

আরএম/এইচকে