আরেক দফা হালিপ্রতি মুরগির ডিমের দাম বেড়েছে ২ টাকা। ডিমের পাশাপাশি আটা ও তেলের দাম বেড়েছে। রাজধানীতে লিটারপ্রতি সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ৪ টাকা আর আটার দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ২ টাকা। এছাড়া চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে চাল, ডাল এবং চিনিও।

নতুন করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ায় ক্রেতারা চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, করোনার কারণে আয় নেই। আর এ সময়ে একের পর এক জিনিসিপত্রের দাম পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। মাছ-মাংস, চাল-ডালের পর এখন ডিমের দাম বাড়ছে। আমাদের এখন না খেয়ে থাকতে হবে।

রাজধানীর মতিঝিল এজিবি কলোনিতে বাজার করতে আসা মানসুর আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, মুরগি কিনতে গিয়েছি, দেখি ১২০ টাকা কেজির মুরগি ১৫০ টাকা চাইছে, মনের দুঃখে কিছু না বলে চলে এলাম।

তিনি বলেন, মাছ কিনতে গিয়েছি, রুই মাছের কেজি ৩০০ টাকা, দাম শুনে আর দাঁড়াইনি। এখন ডিম কিনতে চাইলাম, হালি চাইছে ৪০ টাকা। আপনিই বলেন, এটা কি সহ্য করা যায়। আমরা মধ্যম আয়ের মানুষরা কই যাব।

সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারে আসা ক্রেতা মহিন হাওলাদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনো পণ্য যৌক্তিক মূল্যে বিক্রি হচ্ছে না। প্রতিটি পণ্যের দাম কয়েকগুণ বেড়েছে।

তিনি বলেন, করোনার কারণে চাকরি হারিয়ে মানুষ যখন দিশেহারা, তখন ব্যবসায়ীরা পরিকল্পিতভাবে জিনিসপত্রে দাম বাড়াচ্ছে। আমরা তার শিকার হচ্ছি। সরকারের উচিত বাজার নিয়ন্ত্রণ করা।

সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী আরিফুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, মুরগির ডিম ও মাংস দুটোরই দাম বেড়েছে। করোনার কারণে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ তুলে দেওয়ার পর থেকে সরকারি-বেসরকারি সব অফিস-আদালত খুলেছে। হোটেল রেস্তোরাঁগুলোও খুলেছে। তাই ডিম ও মুরগির মাংসের চাহিদা বেড়েছে। আর তাতে দামও বেড়েছে।

রাজধানীর বাজারগুলোতে দেখা গেছে, হালিপ্রতি লেয়ার মুরগির লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৯-৪০ টাকায়। আর ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকায়। আর হাঁস কিংবা দেশি মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫৮-৬০ টাকা হালিতে। তবে ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৬৫-১৭৫ টাকায়।

বাজারে খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ৩৩-৩৫ টাকা কেজিতে। আগের সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৩০-৩২ টাকা কেজিতে। আর প্যাকেট জাত আটা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪০ টাকা করে।

বোতলের লিটারপ্রতি সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৫২-১৫৩ টাকায়, যা আগের সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ১৪৮-১৪৯ টাকায়। আর প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১২৮-১৩০ টাকায়। আগের সপ্তাহে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছিল ১২৫ টাকায়।

অন্যদিকে লিটারপ্রতি খোলা পাম অয়েল তেল বিক্রি হচ্ছে ১১৮-১১৬ টাকায়। আগে খোলা পাম অয়েল বিক্রি হতো ১০৮ থেকে ১১০ টাকায়।

বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫-১৫০ টাকা কেজি দরে। ব্রয়লার মুরগি ছাড়াও সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকায় দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৪২০ থেকে ৪৪০ টাকা দরে। আর গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজি দরে। আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৮৫০ টাকা কেজিতে। অর্থাৎ আগের সপ্তাহের দরে বিক্রি হচ্ছে গরু ও খাসির মাংস।

পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা কেজিতে। রসুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়। এর মধ্যে দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজিতে। প্রকারভেদে ৯০ টাকা কেজিতেও বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা বড় দানার রসুন বিক্রি হচ্ছে ১২০-১২৫ টাকা কেজিতে। প্রতি কেজি দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। বিদেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ১১০-১১৫ টাকা কেজিতে।

কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা কেজিতে। কেজিপ্রতি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়। বেগুন ৫০ টাকা, কচুর লতি ৪০ টাকা, বরবটি, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, ঢ্যাঁড়স ও ধুন্দল ৫০ টাকা, দেশি শসা ৫০ টাকা, পেঁপে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছের মধ্যে সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে পাঙাশ মাছ। এ মাছ রাজধানীতে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৮০ টাকা কেজিতে। রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৪০-৩০০ টাকা কেজিতে। আর মৃগেল মাছ বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৬০ টাকা কেজিতে। এছাড়া শিং মাছ কেজিপ্রতি ৫৫০-৭০০ টাকা, চিংড়ি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৭৫০ টাকা কেজিতে।

এমআই/এসএসএইচ