নতুন শিল্পনীতিতে রফতানির সম্ভাবনাময় দেশগুলোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকারের দাবি জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) ডিসিসিআই আয়োজিত ‘প্রস্তাবিত জাতীয় শিল্পনীতি : ব্যক্তিখাতের প্রত্যাশা’ শীর্ষক ওয়েবিনার এ দাবি জানানো হয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহাকারী সচিব (নীতি) মো. সলিম উল্লাহ ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

ওয়েবিনারে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার যথাক্রমে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেন।

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, জিডিপিতে শিল্পখাতের অবদান ৫ শতাংশ বৃদ্ধি, সরকারি-বেসারকারি খাতের যৌথ সমন্বয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানো, দক্ষ ব্যাকওয়ার্ড ও ফরওয়ার্ড লিংকেজ শিল্প প্রতিষ্ঠা, গবেষণার মাধ্যমে শিল্পখাতের দেশীয় প্রযুক্তির প্রসার এবং সিএমএসএমই খাতের দক্ষতা উন্নয়ন প্রভৃতি বিষয়গুলো নতুন শিল্পনীতিতে প্রাধান্য পাবে।

তিনি জানান, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধা গ্রহণের জন্য তথ্য-প্রযুক্তি খাতে দক্ষ মানবসম্পদের উন্নয়ন, সম্ভাবনাময় খাতগুলোর পণ্য বহুমুখীকরণের পাশাপাশি ভৌত অবকাঠমো সুবিধা পাওয়ার বিষয়ের উপর নতুন শিল্পনীতিতে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, দেশীয় শিল্পের সুরক্ষা, পণ্যের গুণগত মান সংরক্ষণ ও মেধাসম্পদ ব্যবস্থাপনা, এসএমইর সঠিক সংজ্ঞায়ন, সারাদেশে শিল্পায়ন কার্যক্রমের সম্প্রসারণ, ক্লাস্টার ভিত্তিক শিল্প পার্ক গড়ে তোলা, পরিবেশবান্ধব শিল্পায়ন এবং দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকে আকর্ষণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আইনগত ও অবকাঠামোগত সুবিধা দেওয়াই জাতীয় শিল্পনীতি ২০২১-এর মূল লক্ষ্য।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান দেশের সিএমএসএমই খাতের যথাযথ উন্নয়নে বিদ্যমান সংজ্ঞার সংশোধনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, শিল্পনীতি তৈরিতে ভিয়েতনামের গৃহীত শিল্পনীতির অনুসরণের পাশাপাশি গবেষণা ও উন্নয়ন, উদ্ভাবন এবং ই-কমার্স শিল্পের অগ্রযাত্রাকে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। এলডিসি উত্তর সময়ে দেশের রফতানি খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় রফতানি সম্ভাবনাময় দেশগুলোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার উপর জোরারোপ করেন।

তিনি বলেন, নতুন শিল্পনীতিতে জাতীয় আয়ে শিল্পখাতের বিদ্যমান অবদান ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশে উন্নীতকরণ, তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সর্বোচ্চ সুফল অর্জন, দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির মাধ্যম দারিদ্র্যতা ও বেকারত্ব হ্রাস, সম্ভাবনাময় রফতানিমুখী শিল্পখাতগুলোর প্রসার ও প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে শিল্প খাতে সক্ষমতা বাড়ানো প্রভৃতি বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।

ওয়েবিনারের নির্ধারিত আলোচনায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (নীতি, আইন ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা) শেখ ফয়েজুল আমীন, বাংলাদেশ ব্যাংক-এর মহাব্যবস্থাপক (এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস্ ডিপার্টমেন্ট) হোসনে আরা শিখা, আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ার হোসেন এবং আব্দুল মোমেন লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এস এম মঈনউদ্দিন মোনেম প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন।

আরএম/জেডএস