চলমান করোনা পরিস্থিতিতে এবারও আয়কর মেলা আয়োজন করবে না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে করদাতাদের সুবিধার্থে সব কর অঞ্চলে নভেম্বর মাস জুড়ে আয়কর মেলার সুবিধা দেওয়া হবে। 

করদাতাদের সেবা নিশ্চিত করতে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিমের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের কেন্দ্রীয় স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। সোমবার (১১ অক্টোবর) এনবিআরের জনসংযোগ দফতর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এর আগে ২০২০ সালেও করোনা সংক্রামণের কারণে মেলা আয়োজন থেকে বিরত ছিল প্রতিষ্ঠানটি।

এ বিষয়ে এনবিআরের কর বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, চলতি মাসের ৭ অক্টোবর সার্বিক বিষয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। এরপর রোববার (১০ অক্টোবর) এনবিআর চেয়ারম্যানের সম্মতিক্রমে ১৭টির মতো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়েছে। সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় স্টিয়ারিং কমিটি ও মনিটরিং কমিটিসহ বেশ কয়েকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এনবিআরের নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো 

>> করোনা পরিস্থিতিতে আয়কর মেলা আয়োজনের পরিবর্তে কর কমিশনার অঞ্চলগুলোতে গত বছরের মতো জাঁকজমকপূর্ণভাবে ও উৎসবমুখর পরিবেশে ১ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন গ্রহণের জন্য করদাতাদের সেবা প্রদান করবে।

>> প্রতিটি অফিসে উন্মুক্ত স্থান, কার পার্কিং এরিয়া প্রভৃতিতে রিটার্ন গ্রহণ বুথ ও হেল্প ডেস্ক স্থাপন করে রিটার্ন গ্রহণের পরিবেশকে আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে। একইসঙ্গে রিটার্ন দাখিলকারী করদাতাদেরকে তাৎক্ষণিক প্রাপ্তি স্বীকারপত্রের সঙ্গে রিটার্ন দাখিলের জন্য উৎসাহ প্রদানে উপহার সামগ্রী প্রদান করতে হবে।

>> সব কর কমিশনার সেবা কেন্দ্রে ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন ও রি-রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

>> প্রতিটি কর অঞ্চলের নিজস্ব ওয়েবসাইট তথ্যসহ হালনাগাদ করতে হবে। উক্ত ওয়েবসাইটে আয়কর সংক্রান্ত বিভিন্ন ফর্ম, পরিপত্র, রিটার্ন পূরণের নির্দেশিকা, ভিডিও টিউটোরিয়ালসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য সন্নিবেশ করতে হবে।

>> কর অঞ্চলগুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রাখবে। অন্যান্য মাধ্যমের পাশাপাশি ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে।

>> কর অঞ্চল-৪ এর ব্যবস্থাপনায় সচিবালয়ের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সচিবালয় ও অফিসার্স ক্লাবের সদস্যদের জন্য অফিসার্স ক্লাবে রিটার্ন গ্রহণ বুথ ও হেল্প ডেস্ক স্থাপনের মাধ্যমে নভেম্বর মাসের প্রথম দুই সপ্তাহ কর তথ্য সেবা প্রদান করা হবে।

>> সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে ২ নভেম্বর করদাতাদের রিটার্ন গ্রহণ ও কর তথ্য সেবা প্রদান করতে হবে।

>> নভেম্বর মাসব্যাপী করদাতাদের আয়কর রিটার্ন দাখিল সহজীকরণ ও কর তথ্য সেবা প্রদানের বিষয়টি নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে নভেম্বরের আগে প্রেস ব্রিফিং করা হবে।

>> সব কর অঞ্চলের কমিশনাররা তাদের নিজ নিজ কর অঞ্চলের পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে সরকারের নির্দেশনাবলী অনুসরণ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

>> নভেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল অথবা প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে জাতীয় ট্যাক্স কার্ড ও ঢাকার কর অঞ্চলগুলোর সেরা করদাতাদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।

>> ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামের ৪টি কর অঞ্চলে কেন্দ্রীয়ভাবে ও অন্য সব কর অঞ্চল নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় যথাযথ আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে জেলা ও সিটি করপোরেশনভিত্তিক সেরা করদাতা সম্মাননা প্রদান করবে।

>> আগামী ৩০ নভেম্বর জাতীয় আয়কর দিবস ২০১১ উদযাপন করা হবে। এ সময় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।

২০১০ সাল থেকে প্রতিবছর কর মেলা আয়োজন করে আসছে এনবিআর। এরই মধ্যে এই কর মেলা সাধারণ করদাতাদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। তবে গত বছরও করোনা বিবেচনায় নিয়ে মেলা অনুষ্ঠিত হয়নি। এনবিআরের আওতাধীন সারাদেশে ৩১টি কর অঞ্চল রয়েছে।

আরএম/ওএফ