বাজারে চিনির দাম স্থিতিশীল রাখতে আগামী বছর রোজার আগেই বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনকে (বিএসএফআইসি) চিনি আমদানি করতে বলেছে শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। 

রোববার (৩১ অক্টোবর) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে চিনি শিল্প নিয়ে আলোচনায় এ সুপারিশ করা হয়।

বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে বাজারে চিনির দাম একটু বেশি। কমিটি এ বিষয়টি আমলে নিয়ে মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা নিতে বলেছে। বিভিন্ন কারণে আমাদের চিনি শিল্প সংকটে আছে। কিন্তু আগামী রমজানের আগে যেন বাজার স্থিতিশীল থাকে সেজন্য আমরা বিএসএফআইসির অধীনে চিনি আমদানি করতে বলেছি।

তিনি আরও বলেন, সরকার চিনি শিল্পে সবসময় ভর্তুকি দেয়। কারণ বাজার যাতে স্থিতিশীল থাকে। সেজন্য আমরা সরাসরি বিএসএফআইসির অধীনে চিনি আমদানি করতে বলেছি। অন্য কোনো মাধ্যমে নয়।

বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের বরাত দিয়ে মন্ত্রণালয় সংসদীয় কমিটিকে জানায়, রোজার সময় দেশে সম্ভাব্য চিনির চাহিদা তিন লাখ মেট্রিক টন। এই চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বিএসএফআইসি, বেসরকারি সুগার রিফাইনারি প্রতিষ্ঠান এবং টিসিবির কাছে মুজদ করা চিনি দিয়ে গত রোজার মাসে চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। বিএসএফআইসির আর্থিক সংকটের কারণে চিনি আমদানির কোনো পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়নি বলে জানায় মন্ত্রণালয়।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বাজারে তেল-চিনিসহ নিত্যপণ্যের দাম চড়া। এক সপ্তাহ আগে খোলা বাজারে চিনি সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে প্রতিকেজি তিন টাকা বেশি ৭৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

গত ফেব্রুয়ারিতে সংসদীয় কমিটিতে মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিএসএফআইসি গত পাঁচ বছরে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা লোকসান গুনেছে। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির আয় হয়েছে ৩ হাজার ১৪৭ কোটি ২২ লাখ টাকা। আর ব্যয় হয়েছে ৭ হাজার ৮৬ কোটি ২ লাখ টাকা। লোকসান দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৯৩৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আসন্ন মৌসুমে নিরবচ্ছিন্নভাবে যাতে সার বিতরণ করা যায় সে লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কারখানা মালিক ও বাফার ইনচার্জদের সঙ্গে সমন্বয় সভা করে সার্বিক কাজ ত্বরান্বিত করা হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় কমিটিকে জানিয়েছে।

বৈঠকে ঢাকা স্টিল এবং ব্লেড ফ্যাক্টরি (সোর্ড ব্লেড) জরুরি ভিত্তিতে উৎপাদনে যাওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।

কমিটির সভাপতি আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন কমিটির সদস্য শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, একেএম ফজলুল হক, মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান, কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ, পারভীন হক সিকদার।

এইউএ/জেডএস