পুঁজিবাজারে সকালে পতন বিকেলে উত্থান

সকালে দরপতন আর বিকেলে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক বেড়েছে ৮৯ পয়েন্ট। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক বেড়েছে ২৫৬ পয়েন্ট।

সূচকের পাশাপাশি উভয় বাজারে বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম ও লেনদেন। ফলে মঙ্গলবার দরপতনের পর বুধ ও বৃহস্পতিবার পরপর দুদিন উত্থান হলো পুঁজিবাজারে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বন্ড এক্সপোজার লিমিটের (পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা) বাইরে রাখা হবে। একইসঙ্গে বাজারদরের পরিবর্তে কস্ট প্রাইসের (ক্রয় মূল্য) ভিত্তিতে এক্সপোজার লিমিট গণনা করা হবে বলে মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) সংবাদ মাধ্যমকে জানান বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। একদিন পর বুধবার (১ ডিসেম্বর) রাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে থেকে সংবাদ মাধ্যমে জানানো হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এ রকম কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি। দুই সংস্থার দুই রকম বক্তব্যে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি হয়। বিনিয়োগকারীরা পড়েন দুটানায়।

এ খবরকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) বড় দরপতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শুরু হয়। লেনদেনের মাত্র ১৫ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক কমে ৭০ পয়েন্টের বেশি। ফলে দোটানায় পড়ে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি শুরু করেন। এ ধারা অব্যাহত ছিল সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত। এরপর বাজারে খবর ছড়িয়ে পড়ে অর্থ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসিকে নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসছে। পরবর্তীতে শেয়ারের দাম বাড়তে শুরু করে। যা অব্যাহত ছিল দিনের লেনদেনের বাকি সময় পর্যন্ত।

এ বিষয়ে অধ্যাপক আবু আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির ঘটনায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর অর্থ মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় ঘুরে দাঁড়ায় পুঁজিবাজার।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার বাজারে লেনদেন হওয়া ৩৭৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে দাম বেড়েছে ২০৮টির, কমেছে ১১৮টির। অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম। ডিএসইর প্রধান সূচক ৮৯ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৯৩৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইএক্স সূচক আগের দিনের চেয়ে ২১ পয়েন্ট আর ডিএস-৩০ সূচক ৪৬ পয়েন্ট বেড়েছে।

এদিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ২৪৫ কোটি ১৯ লাখ ৬ হাজার টাকা। বুধবার লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ১০২ কোটি ৬১ লাখ ২৯ হাজার টাকা। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে।

ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, ওয়ান ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ব্যাংক,পাওয়ার গ্রিড, ডেল্টা লাইফ, সোনালী পেপার, সেনা কল্যাণ ইনস্যুরেন্স, আইএফআইসি ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও আইডিএলসি লিমিটেড।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৬৫ পয়েন্ট বেড়ে ২০ হাজার ২৫৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৬৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৫২টির শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ৮৭টির। অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম। এ বাজারে লেনদেন হয়েছে ৫২ কোটি ১৯ লাখ ৩০ হাজার ৬৫৪ টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৫৪ কোটি ২৯ লাখ ৭২ হাজার ২৮২ টাকা।

এমআই/এসকেডি