রাজধানীর উত্তরার ননী সুইটসে অভিযান চালিয়েছে ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। অভিযানে ইএফডি মেশিন থাকলেও তা ব্যবহার না করে কাঁচা চালান ইস্যু করে ভ্যাট ফাঁকির মহোৎসব দেখতে পান ভ্যাট গোয়েন্দা দল। যে কারণে প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাজধানীর উত্তরার ‘ননী’ সুইটসে ভ্যাট গোয়েন্দার অভিযান চালানো হয়। ইএফডি চালানের পরিবর্তে কাঁচা চালান ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। ৪০টি কাঁচা চালানের বই উদ্ধার করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক কার্যক্রম অনুসন্ধানে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের কর্পোরেট শাখা এবং ডাচ বাংলা ব্যাংকের উত্তরা সোনারগাঁও জনপথ রোড শাখার হিসাব বিবরণী তলব করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শিগগির মামলা দায়েরসহ অন্যান্য আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। 

প্রতিষ্ঠানটির ঢাকা শহরে পাঁচটি শো-রুম আছে। রাজধানীর টঙ্গীর ধউরে এর ফ্যাক্টরি অবস্থিত।

ভ্যাট গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ক্রেতা উত্তরার ননীর দোকানে গিয়ে মিষ্টি কিনলে মূসক-৬.৩ চাওয়া সত্ত্বেও তাকে কাঁচা চালান দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ইএফডি মেশিন বসানো থাকলেও ইএফডিতে চালান না কর্তন করে কাঁচা চালানে পণ্য বিক্রয় করায় ঐ ক্রেতা ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরে অভিযোগ করেন। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অনুসন্ধানের পরে সংস্থার উপ-পরিচালক মুনাওয়ার মুরসালীন গত ৫ ডিসেম্বর বিকেলে দোকানে অভিযান পরিচালনা করেন।

অভিযানে গোয়েন্দার দল উক্ত ক্রেতার অভিযোগের সত্যতা পায়। অভিযানকালে প্রতিষ্ঠানটির উত্তরার শো-রুমে ক্রেতা দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটিতে ইএফডি মেশিন থাকলেও কাঁচা চালানে মিষ্টি বিক্রি করছে বলে গোয়েন্দা দল সরেজমিনে দেখতে পায়। অভিযানে প্রতিষ্ঠান থেকে ৪০টি অবৈধ কাঁচা চালানের বই জব্দ করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির টঙ্গীর ধউর এ অবস্থিত ফ্যাক্টরিতে গিয়েও একই ধরণের অনিয়ম পাওয়া যায়। সেখানেও মূসক-৬.৩ ব্যতিরেকে পণ্য সরবরাহ করা হয় বলে অনুসন্ধানে দেখা যায়। 

অনুসন্ধান সূত্রে আরও জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটির ঢাকা শহরে ৫টি শো-রুম আছে এবং ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটের আওতায় কেন্দ্রিয়ভাবে নিবন্ধিত। প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক কার্যক্রম অনুসন্ধানের স্বার্থে প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাব বিবরণী তলব করা হয়েছে। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটকে এই দোকানকে নিয়মিত মনিটরিংয়ের মাধ্যমে ভ্যাট আদায়ের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। 

আরএম/ওএফ