সাড়ে আট কোটি টাকারও বেশি ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়ায় কাই বাংলাদেশ অ্যালুমিনিয়াম লিমিটেডের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ভ্যাট নিরীক্ষা গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর।

বুধবার ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান। তিনি বলেন, ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতর অ্যালুমিনিয়াম পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রায় আট কোটি ৬৪ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করেছে। ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়ায় এর বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা করা হয়েছে।  

ভ্যাট গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, ভ্যাট গোয়েন্দার সহকারী পরিচালক মো. মাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি দল কাই বাংলাদেশ অ্যালুমিনিয়াম লিমিটেডের ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত সময়কালের কার্যক্রম তদন্ত করে। 

প্রতিষ্ঠান কর্তৃক দাখিল করা বার্ষিক অডিট প্রতিবেদন, দাখিলপত্র (মূসক-১৯) এবং বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক জমা করা ট্রেজারি চালানের কপি ও অন্যান্য দলিল যাচাই করে তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়। 

প্রতিবেদনে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি তদন্ত মেয়াদে বিভিন্ন সেবার বিপরীতে উৎসে মূসক বাবদ ২৩ লাখ ২১ হাজার ৩১৬ টাকা ভ্যাট পরিশোধ করেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির প্রদেয় ভ্যাটের পরিমাণ ছিল এক কোটি কোটি ৪৭ লাখ ৬৪ হাজার ৪৮ টাকা। এখানে অপরিশোধিত ভ্যাট ফাঁকি এক কোটি ২৪ লাখ ৪২ হাজার ৭৩২ টাকা। যেখানে ৮১ লাখ তিন হাজার তিন টাকা সুদ প্রযোজ্য হবে।

এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি তদন্ত মেয়াদে কাঁচামাল ব্যবহারের ওপর এক কোটি ১৯ লাখ ৯৪ হাজার ১৬ টাকার ফাঁকি উৎঘাটন হয়। এখানে এক কোটি ২৯ লাখ ৬২ হাজার ৫৬১ টাকা সুদ প্রযোজ্য।

অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানটি তদন্ত মেয়াদে মিল ফিনিস প্রোফাইলে দুই লাখ ৩৯ হাজার ৭৯৬ কেজি কম দেখিয়ে ৮৫ লাখ ৫৪ হাজার ৫৪৪ টাকার ভ্যাট ফাঁকি ও অতিরিক্ত কেমিক্যাল ব্যবহারের মাধ্যমে ৭৪ লাখ ২৬ হাজার ৮২ টাকার ফাঁকি দিয়েছে। 

এভাবে চার বছরে পাঁচ কোটি ৬৮ লাখ ৮৫ হাজার ৩০০ টাকার ভ্যাট ফাঁকি, অবৈধভাবে গৃহীত রেয়াতবাবদ ২৫ লাখ আট হাজার ৪৩১ টাকা এবং সুদের পরিমাণ দুই কোটি ৭০ লাখ ২৬ হাজার ৯৯৪ টাকাসহ মোট আট কোটি ৬৪ লাখ ২০ হাজার ৭২৪ টাকার ফাঁকি দিয়েছে কাই বাংলাদেশ অ্যালুমিনিয়াম লিমিটেড।

এ বিষয়ে ভ্যাট গোয়েন্দার ডিজি বলেন, তদন্তকালে প্রতিষ্ঠানটিকে আত্মপক্ষ সমর্থনে একাধিকবার পর্যাপ্ত সময় ও সুযোগ দেওয়া হয়। তাদের বক্তব্য আমলে নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়েছে। ভ্যাট আদায়ের আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে তদন্ত প্রতিবেদনটি ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটে পাঠানো করা হয়েছে।

আরএম/আরএইচ