রুগ্নশিল্পের পুনর্বাসন ও দায়দেনা নিষ্পত্তির জন্য ২০০৯ সালে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু এখনো অনেক রুগ্ন প্রতিষ্ঠান কোনো সহায়তা পায়নি। তাই ব্যবসা বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চান রুগ্নশিল্পের মালিকরা।  

রোববার (২ জানুয়ারি) রুগ্নশিল্পের পুনর্বাসন সংক্রান্ত এফবিসিসিআই স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম সভায় এ কথা জানান রুগ্নশিল্পের মালিকরা।

সভায় জানানো হয়, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর রুগ্নশিল্পের পুনর্বাসন ও দায়দেনা নিষ্পত্তির জন্য ২০০৯ সালে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠন করেছিল। তারা রুগ্নশিল্পগুলোকে গার্মেন্টস, টেক্সটাইল ও নন-টেক্সটাইল- এই তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করে। 

পরবর্তীতে টাস্কফোর্সের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সার্কুলার জারি করে গার্মেন্টসের ২৭৯টি ও টেক্সটাইলের ১০০টি কারখানার দায়দেনা অবসায়ন করেছিল সরকার। কিন্তু নন-টেক্সটাইলখাতের কোনো কারখানা এখনো এ সুবিধা পায়নি। এসব শিল্প রুগ্ন হলেও ব্যাংকগুলোর মালিকদের খেলাপি দেখিয়ে অর্থঋণ আদালতে মামলা করেছে। সে কারণে নতুন ব্যবসায়ীক উদ্যোগও গ্রহণ করতে পারছেন না তারা। টাস্কফোর্সের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সার্কুলার জারির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থমন্ত্রণালয় নানা সময়ে বৈঠক করলেও এ বিষয়ে সুরাহা হয়নি। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চাচ্ছেন রুগ্নশিল্পের মালিকরা।

এফবিসিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় কমিটির চেয়ারম্যান ছাদেক উল্ল্যাহ চৌধুরী জানান, রুগ্নশিল্পের পুনর্বাসনের জন্য ১৯৯৮ সালে মুন্সেফ কমিটি গঠিত হয়েছিল। রুগ্নশিল্প পুনর্বাসনে একশ কোটি টাকার তহবিল গঠন করেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। পরে এ সংক্রান্ত কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। তবে ২০০৮ সালে এফবিসিসিআই’র উদ্যোগে নতুন করে রুগ্নশিল্পের ডাটাবেজ তৈরি হয়।  

স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। তিনি জানান, রুগ্নশিল্পকে সহায়তা ও পুনর্বাসনের জন্য এফবিসিসিআইতে একটি আলাদা ডেস্ক গঠন করা হবে। একই সঙ্গে প্রত্যেকটি চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনকে তাদের আওতাভুক্ত শিল্পের রুগ্নপ্রতিষ্ঠানের তালিকা তৈরির জন্য চিঠি দেওয়া হবে। তালিকা পাওয়ার পর অর্থমন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নতুন করে রুগ্ন হওয়া শিল্পকে পুনর্বাসনের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এফবিসিসিআই। এছাড়া রুগ্নশিল্পকে বাঁচাতে এফবিসিসিআই’র পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহায়তা করার আশ্বাস দেন এফবিসিসিআই’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট।

কমিটির ডিরেক্টর-ইন-চার্জ তাহমিন আহমেদ বলেন, রুগ্নশিল্পের মালিকদের বাঁচাতে সহায়তা কামনা এবং পোশাক ও বস্ত্রখাতের বাইরে থাকা রুগ্ন কারখানার ঋণ দায়মুক্তির অনুরোধ করে শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠানো হবে।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্ট্যান্ডিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন এ. ফেরদৌস, এম নজরুল ইসলাম, সরকার মো. সালাউদ্দিন, এ কে এম খোরশেদ আলম খানসহ অন্যান্য সদস্যরা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক।

এসআই/এইচকে