দেশে উচ্চশিক্ষিত আছে, অভাব দক্ষতার
দেশে উচ্চশিক্ষিত তরুণদের অভাব না থাকলেও শিল্পের প্রয়োজনীয় দক্ষতার অভাব রয়েছে। সরকার ঘোষিত বিভিন্ন অর্থনৈতিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষ্যে শিল্পায়নের নানা কার্যক্রম হাতে নিচ্ছে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা। কিন্তু এক্ষেত্রে দক্ষ জনশক্তির অভাব বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রোববার (৩০ জানুয়ারি) জাতীয় অর্থনৈতিক নীতি ও পরিকল্পনা, ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, এসডিজি ও ভিশন ২০৪১ অর্জন বিষয়ক এফবিসিসিআই’র স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম বৈঠকে এসব কথা বলেন এফবিসিসিআই’র সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, পোশাক কারখানাগুলো ১৫ থেকে ২০ শতাংশ দক্ষ জনশক্তি ঘাটতিতে রয়েছে। ব্যবস্থাপনার নানা পদে বিদেশিদের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে উদ্যোক্তাদের।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, সরকারের অনেকগুলো কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকলেও সেসব প্রতিষ্ঠান থেকে কাঙ্ক্ষিত মানের শিক্ষার্থী পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারের বিভিন্ন অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অবশ্যই দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে মনোযোগ দিতে হবে। তাই প্রাতিষ্ঠানিক কারিকুলামকে শিল্পের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে আরও গতিশীল করার আহ্বান জানান তিনি।
বিজ্ঞাপন
এলডিসি পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারি সংস্থাগুলোতেও দক্ষ জনবল নিয়োগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মো. জসিম উদ্দিন সভাপতি বলেন, ভবিষ্যতে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে হবে। উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পর স্থানীয় শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য নতুন নতুন কৌশল হাতে নিতে হবে। কিন্তু সেজন্য সরকারি সংস্থাগুলোতে প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল নেই।
সরকারি সংস্থাগুলোকে নীতি প্রণয়নের আগে বেসরকারি খাতের সঙ্গে আলোচনা করার আহ্বান জানিয়ে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ এ নেতা বলেন, কোনো প্রকার আলোচনা ছাড়াই সরকারি সংস্থাগুলো নানা ধরনের নীতি প্রণয়ন করে। মাঠ পর্যায়ের বাস্তবতার প্রতিফলন না থাকায় নীতিগুলো বাস্তবায়ন কঠিন বা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
এর আগে বৈঠকের আলোচনায় বাংলাদেশে শিল্পায়নের নানা চ্যালেঞ্জ উঠে আসে। বক্তারা বলেন, দেশের শিল্পায়ন মূলত ঢাকা ও চট্টগ্রামে আটকে আছে। শিল্প বিকেন্দ্রীকরণ করতে দেশব্যাপী অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে এ উদ্যোগ সফল করতে হলে টাউনশিপ গড়তে হবে।
বৈঠক অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বৈষম্য হ্রাস, শিক্ষার মানোন্নয়ন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শিল্পের যোগসূত্র স্থাপন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ওপর জাতীয় কৌশলপত্র প্রণয়ন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে লৈঙ্গিক সমতা বিধান ও নারী ক্ষমতায়ন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানো নিয়ে কথা বলেন স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা।
এতে কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ ড. নাদিয়া বিনতে আমিন বলেন, উন্নত রাষ্ট্রগুলোর অর্থনীতিতে এসএমই খাতের অবদান ৮০ শতাংশ পর্যন্ত হয়ে থাকে। বাংলাদেশে এ হার মাত্র ৬০ শতাংশ। এসএমই খাতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সরকারি নীতি সহযোগিতা আরও বাড়াতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কমিটির চেয়ারম্যান এ কে এম শামসুদ্দোহা। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন— এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, পরিচালক বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, মো. নাসের, সৈয়দ আলমাস কবির, মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, উপদেষ্টা মঞ্জুর আহমেদ, স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য শামীম আহমেদ, তাসফিয়া জসিম, এএসএম মাইনুদ্দীন মোনেম, সৈয়দ হাবীব আলী, মুনীর আহমেদ, আয়েশা সিদ্দিক, শামীমা শিরিন, ড. মো. নাজমুল ইসলাম প্রমুখ।
এসআই/এসএসএইচ