চলনবিল রক্ষা করতে এডিবিকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। একইসঙ্গে ডেল্টাপ্ল্যান বাস্তবায়নেও এডিবিকে বলা হয়েছে বলে জানান তিনি।  

সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর শেরে বাংলানগরে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর দফতরে বৈঠক করেন বাংলাদেশ কার্যালয়ে নিযুক্ত এডিবির নতুন কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং। বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী চলনবিলের কৃষি উন্নয়ন ও ডেল্টাপ্ল্যান বাস্তবায়নের জন্য বিনিয়োগের আহ্বান জানান। এ সময় প্রতিমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে এসব খাতে বিনিয়োগের জন্য পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান গিনটিং।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, চলনবিলকে রক্ষা করতে এডিবিকে বিনিয়োগের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। চলনবিলে নদী ও খাল খননের মাধ্যমে কৃষি কাজ আরও এগিয়ে যাবে। বিশাল বিল কীভাবে কৃষির আরও উন্নয়ন করা যায় সে বিষয়ে এডিবি অর্থায়নের আহ্বান করা হয়েছে।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে ড. শামসুল আলম বলেন, প্রতিটি শহরে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করা হবে। এ বিষয়ে বিনিয়োগের কথা বলেছি। দেশে ৩১২টি সিটি রয়েছে। এডিবির সঙ্গে নীতিগত আলাপ হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বিনিয়োগে নতুন নতুন খাতে ফোকাস করা দরকার। হর্টিকালচার সেন্টার ও গ্রিন হাউজ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কৃষির কীভাবে বিকেন্দ্রীকরণ করা যায় এ বিষয়ে বলা হয়েছে। আমাদের ভূমি স্বল্পতা আছে। স্বল্প ভূমিতে কীভাবে বেশি ফসল ফলানো যায়, কীভাবে একই জমিতে চার স্তরের টমেটো চাষ করা যায় এই বিষয়ে অর্থায়ন চাওয়া হয়েছে।

ডেল্টপ্ল্যান বাস্তবায়নে এডিবির অর্থায়ন চাওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি এডিবিকে ডেল্টাপ্ল্যান কেন্দ্রীক বিনিয়োগে গাইড লাইন করতে বলেছি। এই প্ল্যানে অনেক প্রকল্প আছে কিন্তু আমরা বাস্তবায়নের জন্য টাকা পাচ্ছি না। এসব প্রকল্প বাছাই করে বাস্তবায়নের জন্য বলা হয়েছে। 

জানা গেছে, শত বছরের বিবর্তনে উত্তর জনপদের মৎস্যভাণ্ডার খ্যাত চলনবিল মরা খালে পরিণত হতে যাচ্ছে। হারিয়ে ফেলেছে তার চিরচেনা রূপ, যৌবন আর ঐতিহ্য। চলনবিলের নদী-খাল খননের মাধ্যমে কৃষি কাজ বেগবান হবে। এজন্যই মূলত বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হয়। চলনবিলে রসুন, পেঁয়াজ, সরিষা, মিষ্টি কুমড়া, গাজর, লাউ, সিমসহ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজির আবাদ হচ্ছে। এ অঞ্চলে উৎপাদিত শাকসবজি, মধু, কাঁকড়া, শুঁটকি ও কুচিয়া চাষ হচ্ছে।

নেদারল্যান্ডসের আদলে গ্রহণ করা শতবর্ষী ডেল্টাপ্ল্যান তথা ‘ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০’কে দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের চাবিকাঠি হিসেবে দেখছে সরকার। এটি বাস্তবায়নে ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন। প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ লাখ ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

এসআর/জেডএস