১৫৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগে ইউনিভার্সাল ফাইন্যান্সিয়াল সলিউশন (ইউএফএস) ও তাদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ হামজা আলমগীরসহ ১৫ ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্থগিত বা জব্দ করা হয়েছে।

মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) দেশের সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে এ কথা জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন বন্ধে দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সংস্থা হচ্ছে বিএফআইইউ।

মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) বিএফআইইউর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পাঠানো চিঠিতে ইউনিভার্সাল ফাইন্যান্সিয়াল সলিউশনসহ ১৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সব ধরনের অ্যাকাউন্ট স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে বিএফআইইউ। চিঠিতে প্রতিষ্ঠানের নাম ঠিকানা ও টিআইএন নম্বর (ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর) দেওয়া হয়েছে।

এগুলো হলো— ইউনিভার্সাল ফাইন্যান্সিয়াল সলিউশনস লিমিটেড। চিঠিতে তাদের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে প্যারামাউন্ট হাইটস, লেভেল-১১, ৬৫/২/১, বক্স কালভার্ট রোড, পুরানা পল্টন, ঢাকা।

আরও পড়ুন : ১৫৮ কোটি টাকা লোপাট, এমডির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা জানতে চান হাইকোর্ট

এছাড়া নাম রয়েছে ইশরাত আলমগীর ও সৈয়দা মেহরীন রহমানের, তাদের ঠিকানা দেওয়া আছে— এপার্টমেন্ট-৩০১, বাড়ি-১৬, রোড-১০১, গুলশান-২, ঢাকা। একই ঠিকানায় নাম রয়েছে সৈয়দ আলমগীর ফারুক চৌধুরী ও সৈয়দা শেহরীন হুসাইনের— এপার্টমেন্ট-ডি ৫, বাড়ি ৩২, রোড-৫, ধানমন্ডি, ঢাকা। ইউএফএসের এমডি সৈয়দ হামজা আলমগীর, আলিয়া হক আলমগীর ও মাহিদ হক। তাদের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে— এপার্টমেন্ট-১০৩, বাড়ি ১৮, রোড-১০১, গুলশান-২, ঢাকা।

চিঠিতে নাম রয়েছে তারেক মাসুদ খানের, তার ঠিকানা— বাড়ি-৩০১, রোড-১৯/বি, নতুন ডিওএইচএস, মহাখালী, ঢাকা। মোহাম্মাদ জাকির হোসেনের ঠিকানা— ৫৩৫, পশ্চিম নাখালপাড়া, তেজগাঁও, ঢাকা। মোসা. উম্মে ইসলাম সোহানার ঠিকানা— বাড়ি-১৩, রোড-১, ব্লক-আই, বনানী, ঢাকা।

অ্যাকাউন্ট স্থগিত রাখার তালিকায় আরও আছে ইউএফএস-আইবিবিএল শরিয়াহ ইউনিট ফান্ড, ইউএফএস-পপুলার লাইফ ইউনিট ফান্ড ৩৮, ইউএফএস-ব্যাংক এশিয়া ইউনিট ফান্ড এবং ইউএফএস-পদ্মা লাইফ ইসলামিক ফান্ড।

এর আগে বিভিন্ন মাধ্যমে খবর আসে শেয়ারবাজারে চার মিউচুয়াল ফান্ডের ১৫৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছে ইউনিভার্সাল ফাইন্যান্সিয়াল সলিউশন (ইউএফএস) নামের একটি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি। এই টাকা নিয়ে ১৩ অক্টোবর দুবাই পাড়ি দেন প্রতিষ্ঠানটির এমডি সৈয়দ হামজা আলমগীর। বর্তমানে তিনি সিঙ্গাপুরে রয়েছেন। ২০১৮ সাল থেকে তহবিল সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করে চক্রটি।

এরপর সোমবার (২ জানুয়ারি) এমডির বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চান হাইকোর্ট। পাশাপাশি সৈয়দ আলমগীরের দুবাই পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ ঘটনায় কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও আইসিবিকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দাখিল করতে বলা হয়।

এসআই/এসএসএইচ/