ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান— এনবিএফআইয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সর্বোচ্চ পদ ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) পদে নিয়োগ বা পুনঃনিয়োগের ক্ষেত্রে কী যোগ্যতা, দক্ষতা ও উপযুক্ততা থাকতে হবে তা ঠিক করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সোমবার (২৫ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ থেকে জারি করা এক সার্কুলারের মাধ্যমে নীতিমালা জারি করা হয়েছে।  

নির্দেশনা অনুযায়ীএমডি হওয়ার জন্য বেশ কিছু উপযুক্ততা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। ফৌজদারি আদালতে দণ্ডিত কিংবা জাল-জালিয়াতি, আর্থিক অপরাধ বা অন্যবিধ অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডি হতে পারবে না। এছাড়া দেওয়ানী বা ফৌজদারি মামলায় আদালতের রায়ে কোনো বিরূপ পর্যবেক্ষণ বা মন্তব্য করে থাকলেও অথবা বাংলাদেশ ব্যাংকের অফসাইট বা অনসাইট পরিদর্শনে তার বিরুদ্ধে কোনো বিরূপ পর্যবেক্ষণ থাকলে এমডি হিসেবে অযোগ্য হবেন। আগে কোনো প্রতিষ্ঠানে থাকাকালীন ওই প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন অথবা লাইসেন্স বাতিল হয়েছে অথবা কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানটি অবসায়িত হয়েছে কিংবা অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতি, জাল-জালিয়াতি ও নৈতিক স্খলনজনিত কারণে কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে অপসারণ, বরখাস্ত, অবনমিত বা অব্যাহতি পেয়েছেন; এমন ব্যক্তি এমডি হতে পারবেন না।  

ঋণখেলাপি, করখেলাপি ও আর্থিক অনিয়মে জড়িত ব্যক্তি এমডি হতে পারবে না।

শিক্ষাগত যোগ্যতা

এমডি হতে হলে কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ন্যূনতম স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী হতে হবে। অর্থনীতি, হিসাববিজ্ঞান, ফাইন্যান্স, ব্যাংকিং, ব্যবস্থাপনা কিংবা ব্যবসায় প্রশাসন বিষয়ে উচ্চতর প্রাতিষ্ঠানিক বা পেশাগত শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অতিরিক্ত যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে। শিক্ষাজীবনের কোনো পর্যায়ে তৃতীয় বিভাগ বা শ্রেণি থাকতে পারবে না। গ্রেডিং পদ্ধতিতে প্রকাশিত ফলাফলের ক্ষেত্রে এসএসসি বা সমমান ও এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষার ক্ষেত্রে জিপিএ ৩-এর কম এবং অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রদত্ত সিজিপিএ-এর ক্ষেত্রে ৪ পয়েন্ট স্কেলে ২.৫০-এর কম ও ৫ পয়েন্ট স্কেলে ৩-এর কম হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।

স্বার্থসংশ্লিষ্টতা এবং ব্যবসায় বা পেশাগত যুক্ততা

এমডি কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক-কোম্পানি বা বীমা কোম্পানি অথবা উক্তরূপ কোম্পানির নিয়ন্ত্রিত কোনো প্রতিষ্ঠানের পরিচালক থাকতে পারবেন না বা প্রতিষ্ঠানসমূহের কোনো লাভজনক পদে নিযুক্ত থাকতে পারবেন না। এছাড়া অন্য কোনো ব্যবসা বা পেশায় থাকতে পারবেন না।

বয়সসীমা

কোনো ব্যক্তির বয়স ৬৫ বছর অতিক্রান্ত হলে তিনি কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে থাকতে পারবেন না। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা হবে ৬২ বছর।

পদের নামকরণ

ফাইন্যান্স কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তার পদনাম “ব্যবস্থাপনা পরিচালক” বা “প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা” হিসেবে অভিহিত হবে।

প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নিয়োগের মেয়াদ হবে সাধারণভাবে ৩ বছর, তবে তিনি পুনঃনিয়োগের যোগ্য হবেন। পুনঃনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীর বয়স যদি ৬২ বছর অতিক্রান্ত হয়, সেক্ষেত্রে বয়স ৬৫ হতে যতদিন বাকি থাকবে ততদিনের জন্য নিয়োগ পাবেন।

পুরো নীতিমালা দেখতে এখানে ক্লিক করুন—

নির্বাচন ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়া

প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে যোগ্য ব্যক্তিদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি কর্তৃক বহুল প্রচারিত কমপক্ষে দুটি বাংলা ও দুটি ইংরেজি পত্রিকা এবং প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে একজন স্বচ্ছ ইমেজের যোগ্য ব্যক্তিকে নিয়োগের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

এসআই/এমজে