বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি) ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) মূলধন ঘাটতি ও খেলাপি ঋণ আদায়ে তাগিদ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই পর্যালোচনা বৈঠকে এ তাগিদ দেন গভর্নর ফজলে কবির। বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট ডেপুটি গভর্নর, নির্বাহী পরিচালক, মহাব্যবস্থাপনা ও বিকেবি এবং রাকাববের চেয়ারম্যান-ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা (এমডি) উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে ব্যাংক দুটির আয়-ব্যয়, লোকসানি শাখা, ঋণ বিতরণ কার্যক্রম ও খেলাপি ঋণ আদায়, মূলধন ঘাটতিসহ বিভিন্ন আর্থিক সূচক পর্যালোচনা করা হয়।    

ব্যাংকের আর্থিক সূচক ও ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করে সরকারি ব্যাংকগুলো। এমওইউতে খেলাপি ঋণ আদায়, আয় বাড়ানোসহ নানা প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে বাস্তবে এর কোনো অগ্রগতি দেখা যায় না। তারপরও গতানুগতিক নিয়মে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে এমওইউ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বিকেবির আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সারাদেশে তাদের শাখা রয়েছে ১ হাজার ৩৮টি। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিকেবি ঋণ বিতরণ করেছে ২৫ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২ হাজার ৪০৫ কোটি ১২ লাখ টাকা বা ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ খেলাপি ঋণ। ব্যাংকটির নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে ২১ কোটি টাকা।

অপর এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিকেবির মূলধন ঘাটতি দেশের ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি। জুন প্রান্তিকে বেশ কিছু ব্যাংক প্রয়োজনের তুলনায় বেশি মূলধন রাখায় ব্যাংক খাতে ১৫ হাজার ৩৫ কোটি টাকার উদ্বৃত্ত দেখা দিয়েছে। ওই সময়ে বিকেবির মূলধন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৮৪৪ কোটি টাকা।

এদিকে রাকাবের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশেষায়িত ব্যাংকটির শাখা আছে ৩৮৩টি। এর মধ্যে শহরে ৫০টি আর পল্লী শাখা ৩৩৩টি। এসবের মধ্যে ১৫১টি শাখাই লোকসানে পড়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা লাভের পর টানা চার বছর লোকসান গুনছে রাকাব। গেল ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫৮১ কোটি ৪১ লাখ টাকা আয় করে। এর বিপরীতে ব্যয় করে ৫৮৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা। ফলে লোকসান গুনতে হয় ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাকাব ঋণ বিতরণ করেছে ৬ হাজার ২৮২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৯ দশমিক ২৯ শতাংশ বা এক হাজার ২১২ কোটি টাকা খেলাপি হয়ে পড়েছে। এছাড়া ব্যাংকটির জুন প্রান্তিক শেষে মূলধন ঘাটতি ছিল ১ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা।

এসআই/জেডএস