বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি করে কম দামে শেয়ার কিনতে পরিকল্পিতভাবে দরপতন ঘটাচ্ছে একটি চক্র। চক্রটি বাজারে শেয়ার ফোর্সসেল করছে। পাশাপাশি সার্কিট ব্রেকারে সর্বনিন্ম দামে শেয়ার কেনার অর্ডার দিচ্ছে। তাতে ২০১০ সালের মতো ধস হওয়ার শঙ্কায় ‘প্যানিক’ হয়ে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

এ কারণে গত দুই দিনে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বিনিয়োগকারীদের পুঁজি উধাও হয়েছে ৬ হাজার ৪৮ কোটি ৪৬ লাখ ৩৩ হাজার টাকা।

ডিএসইর তথ্য মতে, রোববার (১৭ এপ্রিল) বিনিয়োগকারীদের পুঁজি উধাও হয়েছে ১ হাজার ২৬৩ কোটি ৩২ লাখ ৮২ হাজার টাকা। আর সোমবার ৪ হাজার ৭৮৫ কোটি ২৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা। পাশাপাশি বাজারে লেনদেন কমে ৩শ কোটি টাকার ঘরে অবস্থান করছে। 

বাজারের এ অবস্থা উত্তরণে যারা পরিকল্পিতভাবে দরপতন ঘটাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, পুঁজিবাজারের নিয়ম হচ্ছে শেয়ার কেনা-বেচা করা। একজন শেয়ার বিক্রি করবে আরেকজন শেয়ার কিনবে। কিন্তু সম্প্রতি সময়ে দেখা গেছে পুঁজিবাজারে ক্রেতা সংকট, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাজার নিয়ে আস্থা সংকট তৈরি করতে বিভিন্ন চক্র কাজ করছে। 

গতকাল ও আজ কয়েকটি ব্রোকার হাউজে রং ডুয়িং করতে দেখেছি। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনের মধ্য থেকে প্রয়োজন হলে তাদের অথরাইজেশন স্থগিত করা হবে, বলেন তিনি। 

এই ব্রোকার হাউজগুলো কিছু শেয়ারের দাম শূন্য টাকায় অর্ডার দিয়েছে। পাশাপাশি ফোর্সসেল করছে বলেও জানান বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, মার্কেট রুল (সঠিকভাবে চলছে না) করছে না। এ কারণে কম দামে শেয়ার বিক্রির অর্ডার থাকলেও শেয়ার কেনার মানুষ নেই। তিনি বলেন, এখন নতুন ফান্ড প্রয়োজন। শেয়ারের দামও কম, যারাই শেয়ার কিনবেন তারাই লাভবান হবেন।

ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাজার নিয়ে সবাই কনফিউজড। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শঙ্কা কাটিয়ে ওঠার পর শ্রীলঙ্কার দেউলিয়া হওয়ার ইস্যু। এরপর নেপালের কথা পত্রপত্রিকায় প্রচার হচ্ছে। যার একটা প্রভাব আমাদের অর্থনীতিতে পড়তে শুরু করেছে।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাজারে আস্থা ও তারল্য সংকটের কারণে দরপতন হচ্ছে।

এমআই/জেডএস