এটা (পুঁজিবাজার) তো সবজি বা মাছের বাজার নয়। সবজি পচে যাচ্ছে, তাই আপনাকে বিক্রি করে দিতে হবে! মাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, তাই আজই লাভ বা লস যা-ই হোক না কেন বিক্রি করে দিতে হবে! এটা তো বিনিয়োগ। বিনিয়োগ কেন সবজি বা মাছের বাজারের মতো হবে— শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম; পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান। এর আগে তিনি সাধারণ বীমা করপোরেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একাধিকবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সিনেট সদস্য এবং কোষাধ্যক্ষ হন, পাশাপাশি বাণিজ্য অনুষদের ডিন হিসেবে চারবার দায়িত্ব পালন করেন।

টানা দরপতন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে টালমাটাল অর্থনৈতিক অবস্থার মধ্যে আস্থার সংকটে ভুগছে দেশের পুঁজিবাজার। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের পরও গত দুই মাসে পুঁজিবাজার ছেড়েছেন প্রায় আড়াই লাখ বিনিয়োগকারী। এমন পরিস্থিতিতে বাজারের স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখতে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে করণীয় সম্পর্কে সম্প্রতি ঢাকা পোস্টের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেন তিনি। দুই পর্বের সাক্ষাৎকারের প্রথমটি থাকছে আজ।

আরও পড়ুন >> ‘গুজবে’ বাড়ছে জুট স্পিনার্সের শেয়ারের দাম, খতিয়ে দেখছে বিএসইসি

টানা দরপতন ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে টালমাটাল অর্থনৈতিক অবস্থার মধ্যে আস্থার সংকটে ভুগছে দেশের পুঁজিবাজার / ফাইল ছবি

ঢাকা পোস্ট : বিএসইসি চেয়ারম্যান হিসেবে দুই বছর পার করলেন। আপনার দৃষ্টিতে পুঁজিবাজারের সার্বিক অবস্থা এখন কেমন?

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম : চিন্তা ও পরিকল্পনা অনুসারে পুঁজিবাজার অনেক ভালো থাকার কথা ছিল। কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী বিনিয়োগকরীরা বিনিয়োগ করতে পারছেন না। কারণ, প্রথমে করোনার আক্রমণ । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠে একটু সাহসী মনোভাব নিয়ে অগ্রসর হতে চেয়েছিলাম। ঠিক তখনই শুরু হলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ।

যুদ্ধের ধাক্কাটা বিশ্ব অর্থনীতির স্থিতিশীলতার ওপর বেশ প্রভাব ফেলেছে। এ প্রভাব আমাদের ওপরও বিস্তার লাভ করেছে। যেটা আগেভাগে কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে ঠিক করা যায়নি। শুধু আমরা নই, কোনো দেশই এটা করতে পারেনি। কারণ, বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সরবরাহে সংকট দেখা দিয়েছে। খাদ্যশস্যের অভাবে সাপ্লাই চেইনে সমস্যা হচ্ছে, বাড়ছে মুদ্রাস্ফীতি। সবকিছু মিলিয়ে একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে বৈশ্বিক অর্থনীতি।

বাংলাদেশেও এর প্রভাব ব্যাপক। দেশের রপ্তানি বাণিজ্য ও রেমিট্যান্সে হাত পড়েছে। এসব দেশের পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

আরও পড়ুন >> ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি
 
ঢাকা পোস্ট : পুঁজিবাজারে অস্থিরতা দূর করা এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে নতুন কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন কি-না?

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম : বাস্তবতার ওপর ভর করে পুঁজিবাজারের জন্য যেখানে ছাড় দেওয়া প্রয়োজন, সেখানে দেওয়া হচ্ছে। যেখানে কঠোর হওয়া বা অনুরোধ করা দরকার, সবই করা হচ্ছে। এ বিষয়ে সরকারও আমাদের সহযোগিতা করছে। যখন যেটা বলা হচ্ছে, সরকার সেটা করে দিচ্ছে। তারপরও এ মুহূর্তে পুঁজিবাজারের ভালোর জন্য যদি কোনো পরামর্শ কিংবা উপদেশ থাকে, আমরা তা সাদরে গ্রহণ করব।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতির স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাব ফেলেছে। এ প্রভাব আমাদের ওপরও বিস্তার লাভ করেছে— শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম / ফাইল ছবি

ঢাকা পোস্ট : পুঁজিবাজারে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব সম্পর্কে যদি বলতেন, এটা কত দিন থাকতে পারে বলে আপনি মনে করেন?

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম : ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের ফলে পুঁজিবাজার ওঠানামা করছে। আমাদের অভ্যন্তরীণ কোনো সমস্যার কারণে এটা হচ্ছে না। যুদ্ধের বিষয়ে আমাদের কোনো হাত নেই। এটা অন্যদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সমস্যা হচ্ছে, আমরা যুদ্ধ কিংবা জ্বালানি সরবরাহ, এমনকি ডলারের সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না। ফলে পুঁজিবাজারে এ যুদ্ধের প্রভাব কত দিন থাকবে তা বলা মুশকিল।

আরও পড়ুন >> আশার আলো দেখালো বিমা খাত
 
ঢাকা পোস্ট : প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান প্রত্যাশা করছেন, এ বছরের শেষে কিংবা আগামী বছরের শুরুতে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হবে। আপনি কী মনে করেন?

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম : বিদেশের অনেক সরকার ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে উনার (সালমান এফ রহমান) যোগাযোগ আছে। হয়তো তিনি তাদের কাছ থেকে শুনেছেন, আশ্বাস পেয়েছেন। অবস্থা ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে। এটা হতেও পারে কারণ, এ আঘাত শুধু আমাদের একার ওপর নয়, বেশি লেগেছে ইউরোপ-আমেরিকার অর্থনীতিতে। সেসব দেশেও মুদ্রাস্ফীতি হচ্ছে। তাই তারা নিজেদের স্বার্থে ছাড় দিয়ে হলেও পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি করবে।

ঢাকা পোস্ট : পুঁজিবাজারের সূচক ছয় হাজার পয়েন্টে ঘুরপাক খাচ্ছে। বাজারের আকার অনুসারে ৭-৮ হাজার পয়েন্টে যাওয়ার কথা, যাচ্ছে না কেন?

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম : যুদ্ধের কিছুদিন আগে সূচক সাত হাজার পয়েন্ট ছাড়িয়ে যায়। এটা ধরে রাখতে পারলে এতদিন আট হাজার পয়েন্ট হয়ে যেত। বিনিয়োগকারীরা যদি সক্রিয় হন, সাহস দেখান; তারা যদি আতঙ্কগ্রস্ত না হন, গুজবে কান না দেন তাহলে সূচক আট হাজার কেন আরও বেশি হতো। কারণ, অনেক ভালো ভালো প্রতিষ্ঠানের আইপিও অনুমোদন দিয়েছি। এগুলোর মাধ্যমে মার্কেটের গভীরতা বাড়ছে। মানুষের ভীতি কাটাতে মার্কেটের গভীরতা বাড়ানো হচ্ছে যাতে বড় ধস না হয়।

অন্যের দেওয়া তথ্যের ওপর নির্ভর না করে নিজের বুদ্ধি ও বিবেচনায় শেয়ার কেনাবেচার পরামর্শ বিএসইসি চেয়ারম্যানের / ফাইল ছবি

আরও পড়ুন >> মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে ২৫ কোম্পানির ক্রেতারা

ঢাকা পোস্ট : পুঁজিবাজার নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বেগও বেশ। এ বিষয়ে তিনি কোনো পরামর্শ দিয়েছেন কি-না?

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম : প্রধানমন্ত্রী পুঁজিবাজার নিয়ে খুবই সচেতন। তিনি আমার কাছে জানতে চান, পুঁজিবাজারের জন্য কোনো কিছু লাগবে কি-না। যখনই যা দরকার তা-ই দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। সরকারপ্রধান যেহেতু সেকেন্ডারি মার্কেটের বিনিয়োগকারীদের নিয়ে চিন্তা করেন, আমরাও খোঁজ-খবর রাখি।

এখন ব্যাংকে যদি তারল্য সংকট হয়, তাহলে বাজারে টাকার টান পড়বে। ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ রেট অস্থিতিশীল হবে অর্থাৎ ডলারের দাম বেড়ে যাবে। এ অবস্থা বিরাজ করলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তাদের টাকা তুলে নেবেন। যেটা এখন দেখা যাচ্ছে। এছাড়া জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাবে, মানুষের সংসার চালানোর ব্যয়ও বেড়ে যাবে। বাধ্য হয়ে তারা সঞ্চয়ে হাত দেবেন। সঞ্চয়ে হাত পড়লে শেয়ার বিক্রি করে ঘরে টাকা তুলবেন। এর প্রভাব পুঁজিবাজারে পড়বেঅধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম, চেয়ারম্যান, বিএসইসি

কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে সূচক বাড়ানো বা কমানো আমাদের কাজ নয়। এটা বিনিয়োগকারীদের কাজ। স্টক এক্সচেঞ্জ এগুলো দেখে। যেহেতু আমরা সরকারে অংশ, তাই আমরা একটু অতিরিক্ত করি।

ঢাকা পোস্ট : ডলার-জ্বালানি সংকট, উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং বিশ্বব্যাপী মন্দা পুঁজিবাজারে কোন ধরনের প্রভাব ফেলছে? এর থেকে মুক্তির উপায় কী?

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম : এখানে আমাদের করার কিছু নেই। এখন দরপতন হচ্ছে কেবল ডলার-জ্বালানি সংকট, মূল্যস্ফীতি এবং বিশ্বমন্দার কারণে। পুঁজিবাজার খুবই সংবেদনশীল জায়গা। পৃথিবীর যেখানে যা-ই হোক, সঙ্গে সঙ্গে এর প্রভাব বাজারে পড়ে। সারা পৃথিবীর পুঁজিবাজারই একই রকম।

ধরেন, এখন ব্যাংকে যদি তারল্য সংকট হয়, তাহলে বাজারে টাকার টান পড়বে। ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ রেট অস্থিতিশীল হবে অর্থাৎ ডলারের দাম বেড়ে যাবে। এ অবস্থা বিরাজ করলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তাদের টাকা তুলে নেবেন। যেটা এখন দেখা যাচ্ছে। এছাড়া জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাবে, মানুষের সংসার চালানোর ব্যয়ও বেড়ে যাবে। বাধ্য হয়ে তারা সঞ্চয়ে হাত দেবেন। সঞ্চয়ে হাত পড়লে শেয়ার বিক্রি করে ঘরে টাকা তুলবেন। এর প্রভাব পুঁজিবাজারে পড়বে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান গুজব রটিয়ে বাজার প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন। তাদের থেকে দূরে থাকতে হবে— শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম / ফাইল ছবি

আরও পড়ুন >> বিনিয়োগকারীদের পুঁজি উধাও ১০ হাজার কোটি টাকা
 
ঢাকা পোস্ট : অভিযোগ আছে, এনবিআরসহ আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় না থাকায় পুঁজিবাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। নতুন গভর্নর এসেছেন। সমন্বয়হীনতা কতটুকু দূর করা সম্ভব বলে মনে করেন?

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম : আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কাজ করি। আমাদের কারও মধ্যে কোনো বৈসাদৃশ্য নেই। না চাইতেই তারা (বাংলাদেশ ব্যাংক) সবকিছু করে দিচ্ছে।

ঢাকা পোস্ট : মন্দার সময় দেখা যায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা নিষ্ক্রিয় থাকেন। তাদের সক্রিয় করার কোনো উদ্যোগ আছে কি-না?

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম : প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন। তারা মন্দার সময় শেয়ার কেনা শুরু করেন। ব্যাংকসহ ভালো ভালো প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কেনেন। অন্যদিকে, আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে বোকার মতো অসময়ে শেয়ার বিক্রি শুরু করেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা। এটাই সমস্যা। গুজবে কোনোভাবেই কান দেওয়া যাবে না।

আরও পড়ুন >> পুঁজিবাজারের টাকা যাচ্ছে ডলার মার্কেটে!
 
ঢাকা পোস্ট : আপনার দৃষ্টিতে পুঁজিবাজারের প্রধান প্রতিবন্ধকতা কী কী?

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম : দেশের পুঁজিবাজারে প্রতিবন্ধকতা বলতে কিছু নেই। বাজারে একটাই সমস্যা, সেটা হলো গুজব । বিনিয়োগকারীদের অনুরোধ করব, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান গুজব রটিয়ে অথবা মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে বাজার প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন। তাদের থেকে দূরে থাকতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে সূচক বাড়ানো বা কমানো আমাদের কাজ নয়। এটা বিনিয়োগকারীদের কাজ। স্টক এক্সচেঞ্জ এগুলো দেখে—বলেন বিএসইসি চেয়ারম্যান / ছবি- সংগৃহীত

ঢাকা পোস্ট : বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সুনির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ‘হট আইটেম’ উল্লেখ করে অধিক মূল্যে বিক্রি করা হয়। এ বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন কি-না?

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম : ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গ্রুপ, পেজ ও ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট খুলে পুঁজিবাজার সম্পর্কে বিভিন্ন গুজব ছড়ায় একটি চক্র। চক্রটি ‘হট আইটেম’ শেয়ারের কথা বলে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করে। তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। যারা এসব করছে তাদের অনেকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যারা এসব করবে তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন >> ধার করে ব্যবসা শুরু, সা’দ মুসা গ্রুপের এখন ২৭ প্রতিষ্ঠান
 
ঢাকা পোস্ট : ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীসহ বাজার-সংশ্লিষ্টদের জন্য আপনার পরামর্শ কী হবে?

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম : ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য আমার পরামর্শ হলো, আতঙ্কগ্রস্ত হবেন না। গুজবে কান দেবেন না। অহেতুক ভয় পেয়ে শেয়ার বিক্রি করবেন না। যথাযথভাবে বাজার পর্যবেক্ষণ করুন। যেদিন বাজার ভালো থাকবে সেদিন লাভসহ বিক্রি করুন। খারাপ সময়ে ইনডেক্সের দিকে তাকাবেন না।

এখানে সবাই লাভের জন্য আসেন। স্বার্থান্বেষী মহল লাভের জন্য বাজারে নানা গুজব ছড়ায়, বাজার প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। কেউ উদ্দেশ্য ছাড়া আপনাকে শেয়ার কিনতে কিংবা বিক্রি করতে বলবে না। তাই অন্যের দেওয়া তথ্যের ওপর নির্ভর না করে নিজের বুদ্ধি ও বিবেচনায় শেয়ার কেনাবেচা করবেন। সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সুস্থ ও ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করবেন।

আশা করছি, আগামীতে ভালো একটা বাজার পাব। এটা সম্পূর্ণ আমাদের হাতেই থাকবে— বিএসইসি চেয়ারম্যান / ছবি- সংগৃহীত

আরও পড়ুন >> দুই মাসে ৫১৩ কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন বিদেশিরা
 
ঢাকা পোস্ট : পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত?

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম : আবারও বলছি, আপনার বিনিয়োগ রক্ষা করতে পারে একটা জিনিস। সেটা হলো আতঙ্কগ্রস্ত না হওয়া। দ্বিতীয়ত, পুঁজিবাজারকে দৈনিক লেনদেনের বাজার হিসেবে মনে করবেন না। এখানে দীর্ঘ সময়ের জন্য বিনিয়োগ করতে হবে। একটু ধৈর্য ধরতে হবে। বাজার বাড়বে-কমবে, এটাই স্বাভাবিক। সুবিধাজনক সময়ে বেচাকেনা করুন। নিজের বিনিয়োগ বাঁচাতে শেয়ারের দাম কমছে বলে লোকসানে বিক্রি করা যাবে না।

এটা তো সবজি বা মাছের বাজার নয়। সবজি পচে যাচ্ছে, তাই আপনাকে বিক্রি করে দিতে হবে! মাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, তাই আজই লাভ বা লস যা-ই হোক না কেন বিক্রি করে দিতে হবে! এটা তো বিনিয়োগ। বিনিয়োগ কেন সবজি বা মাছের বাজারের মতো হবে?

একটু অপেক্ষা করুন। যেদিন মার্কেট ভালো থাকবে, লাভ হবে সেদিন বিক্রি করুন। লোকসান করে বাজারকে খারাপ বলা অথবা আরেকজনকে গালাগালি করা, এটা তো ঠিক না। একজনের কারণে অন্যজন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বাজারে আতঙ্ক তৈরি হয়। এমন আতঙ্কগ্রস্ত লোকের সংখ্যা বেড়ে গেলে বাজারের চরিত্র নষ্ট হবেই।

ঢাকা পোস্ট : পুঁজিবাজারের সম্ভাবনার বিষয়ে যদি কিছু বলতেন...

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম : সামনে পুঁজিবাজারে ভালো দিন আসবে। আমরা বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা দিচ্ছি। বাজারের পরিবেশ সুস্থ ও প্রভাবমুক্ত রাখতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আশা করি, আগামীতে ভালো একটা বাজার পাব। এটা সম্পূর্ণ আমাদের হাতেই থাকবে।

এমআই/এমএআর/