প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) অর্থ আত্মসাৎ ও আর্থিক প্রতিবেদনে কারসাজির দায়ে নূরানী ডাইং অ্যান্ড সোয়েটার লিমিটেড, প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তা ও পরিচালক এবং সংশ্লিষ্ট ইস্যু ম্যানেজারের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৮৪০তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, নূরানী ডাইং অ্যান্ড সোয়েটার আর্থিক হিসাবে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। আইপিও ফান্ড আত্মসাৎ করেছে। এ কারণে বিএসইসির এনফোর্সমেন্ট অ্যাকশন ও ফৌজদারি মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি বলেন, আইপিওর অর্থ আত্মসাৎ ও আর্থিক প্রতিবেদন নিয়ে জালিয়াতির ওপর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ একটি তদন্ত করেছে। ডিএসইর তদন্ত রিপোর্টের আলোকে নূরানী ডাইং, উদ্যোক্তা-পরিচালক, সংশ্লিষ্ট ইস্যু ম্যানেজার, নিরীক্ষক ও আইপিও ফান্ড ব্যবহার নিয়ে প্রতিবেদনে সত্যায়িত করা নিরীক্ষকের বিরুদ্ধে শেয়ারহোল্ডারদের বিভিন্নভাবে প্রতারিত করা ও প্রতারণার কাজে সহযোগিতা করায়, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর ধারা ১৭ এর (এ), (বি), (সি) ও (ডি) লঙ্ঘন হয়েছে। এ জন্য কমিশন এনফোর্সমেন্ট অ্যাকশন ও ফৌজদারি মামলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিএসইসির তথ্য মতে, নূরানী ডাইংয়ের ২০১৬ ও ২০১৭ এর নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন ও প্রকাশিত প্রসপেক্টাসে এবি ব্যাংকের প্রদত্ত ঋণ যথাক্রমে ৫৭.২০ কোটি ও ৪২.৯৫ কোটি টাকা উল্লেখ ছিল। কিন্তু ডিএসইর পরিদর্শক ও তদন্ত কমিটির সংগৃহীত ব্যাংক হিসাব অনুযায়ী, ২০১৮ সালে ১৬৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা, ২০১৯ সালে ১৯২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ও ২০২০ সালে ২১৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা দায় ছিল। এতে কোম্পানিটির ২০১৬-২০২০ সালের আর্থিক প্রতিবেদনে প্রকৃত আর্থিক অবস্থা গোপন করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়েছে।

এছাড়া আইপিওর মাধ্যমে উত্তোলিত ৪৩ কোটি টাকার মধ্যে ৪১ কোটি ১৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ, ৩টি ইস্যু ম্যানেজার প্রতিষ্ঠান ডিউ ডিলিজেন্স সার্টিফিকেটের মাধ্যমে প্রকৃত অবস্থা গোপন করেছে। আইপিওকালীন ২০১৭ সালে নিরীক্ষক ক্লিন রিপোর্ট দিয়ে বিভ্রান্ত করেছে এবং ২০১৯ ও ২০২০ সালে জালিয়াতি সত্ত্বেও নিরীক্ষক ক্লিন রিপোর্ট দিয়ে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।

এছাড়া কোম্পানিটির উদ্যোক্তা-পরিচালকেরা তাদের ধারণকৃত ৩০ দশমিক ৯৩ শতাংশ শেয়ার যমুনা ব্যাংক ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের কাছে জামানত রেখে মার্জিন ঋণ গ্রহণ করে তসরুফ করে। যা জামানতের বিপরীতে গৃহীত মার্জিন ঋণ খেলাপি হয়।

এমআই/ওএফ