দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্যভুক্ত ব্রোকার-হাউজের পাশাপাশি মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর (ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট দিয়ে করা) প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) আবেদনের ফি বেড়েছে পাঁচ গুণ। তবে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আইপিওতে আবেদনের ফি বাড়েনি।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ফি বৃদ্ধির করে গেজেট প্রকাশ করেছে।

নতুন গেজেট অনুসারে, ব্রোকার হাউজগুলোর আইপিওতে আবেদন ৫ হাজার টাকা আর রাইট শেয়ার বিক্রির আবেদনের ফি ১০ হাজার টাকার পরিবর্তে ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আইপিওতে আবেদনের পাশাপাশি স্টক ব্রোকার, মার্চেন্ট ব্যাংকসহ পুঁজিবাজারের মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সব ধরনের লাইসেন্স ও অন্যান্য ফি বাড়িয়েছে বিএসইসি।

এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম বলেন, বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ফি যুগোপযোগী করা হয়েছে। ১৯৯৬ থেকে ২০২১ অর্থাৎ দুই যুগ পর আইনটি যুগোপযোগী করা হয়েছে। এই ২৪-২৫ বছরের পুঁজিবাজারের আকার বেড়েছে। স্টক ব্রোকার, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর আয়ও অনেক বেড়েছে। এখন ফি বাড়িয়ে যেটা নির্ধারণ করা হয়েছে তা বর্তমান সময় বিবেচনায় একেবারে বেশি নয়।

এ বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্রোকারদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকারর্স অ্যাসোসিয়েশনের শরীফ আনোয়ার হোসেন বলেন, বাজারের আকার অনুসারে বিএসইসি চার্জ বাড়াতে পারে। তবে এটা একবারে না বাড়িয়ে ধাপে ধাপে বাড়ালে ভালো হতো। বাজারে তার কোনো প্রভাব পড়তো না।

বিএসইসির নতুন নিয়ম অনুসারে, বিনিয়োগকারীদের শেয়ার এবং বিও হিসাবের তথ্য সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান ডিপোজিটরি পার্টিসিপেন্ড (ডিপি) লাইসেন্স পেতে আবেদন ফি ৫ লাখ টাকা দিতে হবে। আর লাইসেন্সের জন্য ১ কোটি টাকা এবং প্রতি বছর নবায়ন ফি ২০ লাখ টাকা করে দিতে হবে। এর আগের ডিপি) লাইসেন্স পেতে আবেদনে কোনো ফি ছিল না। শুধু বছর প্রতি নবায়ন ফি ছিল ৫০ হাজার টাকা।

এখন থেকে স্টক ব্রোকারের লাইসেন্স পেতে আবেদন ফি দিতে হবে ২ লাখ টাকা। যা আগে ছিল ২০ হাজার টাকা। আগে লাইসেন্স ফি ছিল না, এখন লাইসেন্স পেতে ৫ লাখ টাকা দিতে হবে। নবায়ন ফি ১০ হাজার টাকার পরিবর্তে করা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা।

আবার নিজের বিনিয়োগ করতে স্টক ডিলার লাইসেন্স নিতেও একই হারে ফি দিতে হবে। ডিপোজিটরি সার্ভিস প্রদানেও লাইসেন্স ফি নামমাত্র থাকলেও তা ৪০ গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। শেয়ার কেনাবেচায় সাহায্যকারী কর্মকর্তা বা অনুমোদিত প্রতিনিধির লাইসেন্সের আবেদন ফি ৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। যা আগে ছিল ১ হাজার টাকা। প্রতি বছরের নবায়ন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার টাকা। যা আগে ছিল মাত্র ৫০০ টাকা।

শুধু তাই নয়, ১ হাজার টাকার মার্চেন্ট ব্যাংকের লাইসেন্স পেতে আবেদন ফি’র পরিবর্তে এখন দিতে হবে ১ লাখ টাকা। লাইসেন্স নিতে আগে ফি ছিল ১ লাখ টাকা, এখন ১০ লাখ টাকা। নবায়ন ফি ৫০ হাজার টাকার পরিবর্তে ২ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিলম্ব ফি প্রতি মাসের জন্য ৫০ হাজার টাকা।

এছাড়াও ক্রেডিট রেটিং কোম্পানির লাইসেন্স গ্রহণের জন্য আগে কোনো ফি লাগত না। এখন ২৫ লাখ টাকা দিতে হবে। আগে নবায়ন ফি না লাগলেও এখন দিতে হবে বছরে ৫ লাখ টাকা।

এমআই/এমএইচএস