পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত তিন কোম্পানিকে এক বছরের মধ্যে ১০ শতাংশ ফ্রি ফ্লোট শেয়ার নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ফলে প্রতিষ্ঠান তিনটিকে ন্যূনতম ১০ শতাংশ শেয়ার পুঁজিবাজারে ছাড়তে হবে।

প্রতিষ্ঠানের তিনটি হলো- সরকারি প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ লিমিটেড (আইসিবি), ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড।

কোম্পানি তিনটির মধ্যে গতবছর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের ফ্রি ফ্লোট শেয়ার রয়েছে মাত্র দশমিক ৯৭ শতাংশ। ১০ শতাংশের বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে হলে কোম্পানিটিকে আরও ৯ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ শেয়ার ছাড়তে হবে।

বাজারে আইসিবির ফ্রি ফ্লোট শেয়ারের পরিমাণ ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। ফলে আরও ৬ দশমিক ৮১ শতাংশ শেয়ার ছাড়তে হবে কোম্পানিটির। বহুজাতিক কোম্পানি বার্জার পেইন্টসের ফ্রি ফ্লোট শেয়ারের পরিমাণ ৫ শতাংশ।

রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) এ সংক্রান্ত একটি চিঠি কোম্পানিগুলোকে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী, বার্জার পেইন্টসকে আরও ৫ শতাংশ শেয়ার ছাড়তে হবে।

কোম্পানিগুলোর উদ্যোক্তা পরিচালকদের ধারণ করা শেয়ার থেকেই এ শেয়ার ছাড়তে হবে। এক্ষেত্রে নতুন করে কোনো শেয়ার ইস্যু করা হবে না। শেয়ার ইস্যুর জন্য কোম্পানিগুলো সর্বোচ্চ এক বছর সময় পাবে। এক্ষেত্রে প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ১ শতাংশ করে শেয়ার ছাড়া যাবে। বিদ্যমান বাজারদরে শেয়ার ছাড়তে হবে। প্রতি মাসে শেয়ার ছাড়ার বিষয়টি প্রতিবেদন আকারে কমিশনকে জানাতে হবে।

বিএসইসির তথ্য মতে, পাবলিক ইস্যু রুলস অনুসারে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে কোম্পানিকে পুঁজিবাজার থেকে ন্যূনতম এর পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশের সমপরিমাণ শেয়ার ইস্যু করতে হয়। এক্ষেত্রে সব কোম্পানির মধ্যে সাম্য বজায় রাখতে যাদের ফ্রি ফ্লোট শেয়ার ১০ শতাংশের কম রয়েছে তাদের শেয়ার ছাড়তে বলা হয়েছে। এতে বাজারে এসব কোম্পানির শেয়ার সরবরাহ বাড়বে। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও তখন এসব ভালো কোম্পানির শেয়ার কিনতে পারবেন।

রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবি ১৯৭৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এর পরিশোধিত মূলধন ৮০৫ কোটি ৮১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ৮০ কোটি ৫৮ লাখ ১৫ হাজার ৫২৭। এর ৬৯ দশমিক ৮১ শতাংশ কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালক, ২৭ শতাংশ সরকার, ১ দশমিক ৮৪ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও বাকি ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে। কমিশনের নির্দেশনা অনুসারে, ৬ দশমিক ৮১ শতাংশ হারে প্রতিষ্ঠানটির ৫ কোটি ৪৮ লাখ ৭৬ হাজার ৩৭টি শেয়ার ছাড়তে হবে।

২০২০ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের পরিশোধিত মূলধন ৩০২ কোটি ৯২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৩০ কোটি ২৯ লাখ ২৮ হাজার ৩৪৩। এর মধ্যে ৯৯ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ শেয়ারই রয়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে দশমিক ৩৯, বিদেশি দশমিক ১০ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে দশমিক ৪৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। কমিশনের নির্দেশনা অনুসারে, ৯ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ হারে ওয়ালটনের উদ্যোক্তা পরিচালকদের ২ কোটি ৭৩ লাখ ৫৪ হাজার ৪২৯টি শেয়ার ছাড়তে হবে।

২০০৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বার্জার পেইন্টসের পরিশোধিত মূলধন ৪৬ কোটি ৩৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৪ কোটি ৬৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮৮০। এর মধ্যে ৯৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ৩ দশমিক ৭১, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে দশমিক ১৪ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ১ দশমিক ১৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। কমিশনের নির্দেশনা অনুসারে, ৫ শতাংশ হারে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের ২৩ লাখ ১৮ হাজার ৮৯৪টি শেয়ার ইস্যু করতে হবে।

এমআই/এসএসএইচ