পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিবেদনের তথ্য দেখে ভয় পেয়ে যাই বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইকোনমিক রিপোটার্স ফোরামের (ইআরএফ) অডিটরিয়ামে ‘এসএমই খাতের উন্নয়নে পুঁজিবাজারের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ উদ্বেগের কথা জানান। এক বছর পূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে বাণিজ্য প্রতিদিন।

অনুষ্ঠানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) পরিচালক ও এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. মাসুদুর রহমান, বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম, ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারিক আমিন ভূঁইয়া, ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) প্রেসিডেন্ট হাসান ইমাম রুবেল বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো দেখভাল কিংবা সুপারভিশন আমরা করি। সুপারভিশন করতে গিয়ে দেখি অনেক কোম্পানির বিশেষ নিরীক্ষার প্রতিবেদনগুলোতে এমন সব তথ্য উঠে আসে, যা দেখে ভয় পেয়ে যাই।

তিনি বলেন, প্রতিনিয়তই আমরা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বর্তমান অবস্থান এবং তাদের কর্মপরিকল্পনাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করি। কোম্পানি কর্তৃপক্ষের ইচ্ছা বা মনোভাব দেখার চেষ্টা করি।

কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কথা বলে দেখেছি, কিছু কোম্পানি ইচ্ছাকৃতভাবে সাধারণ মানুষের টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করছে, বাড়াবাড়ি করছে। অনেক কোম্পানির আবার সত্যিই ব্যবসা খারাপ হওয়ার মতো ঘটনা দেখতে পাই। এক্ষেত্রে যে কোম্পানির জন্য যা পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, তাই নেই। তিনি বলেন, ইচ্ছাকৃতভাবে টাকা পাচারকারীদের শাস্তি দিতে আমরা বদ্ধ পরিকর।

পুঁজিবাজারে ওঠানামা স্বাভাবিক উল্লেখ করে বিশ্বখ্যাত বিনিয়োগকারী ওয়ারেন বাফেটের উক্তির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, পুঁজিবাজার পড়লে শেয়ার কিনবেন আর বাড়লে বিক্রি করবেন। কিন্তু আমাদের দেশের বিনিয়োগকারীদের আচরণ উল্টো।

তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে ২০১০ সালের মতো ধস হবে না। তবে পুঁজিবাজারে সূচক ওঠানামা এটা স্বাভাবিক। আমি বলি, বাজার পড়লে কিনবেন উঠলে বিক্রি করবেন।

তিনি বলেন, কে কোন সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করেন, সেটা আমরা দেখি না। অথচ বিনিয়োগকারীরা লোকসান করলেই আমাদেরকে দোষারোপ করে, কিন্তু লাভ করলে আবার কিছু বলে না। বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, আমরা কঠোরভাবে পুঁজিবাজার মনিটরিং করি। এখানে ২০১০ সালের পুনরাবৃত্তি হওয়ার সুযোগ নেই।

শিবলী রুবাইয়াত বলেন, দেশের অর্থনীতিতে এসএমই খাতের গুরুত্ব অনেক। আমরা এই খাত এগিয়ে নিতে কাজ করছি। এখন পুঁজিবাজার থেকে এসএমই খাতের কোম্পানিগুলো অর্থ সংগ্রহ করতে পারে। এক্ষেত্রে মূল মার্কেটের তুলনায় অনেক ছাড় দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে ভবিষ্যতে আরও সুবিধা দেওয়া হবে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ছায়েদুর রহমান পুঁজিবাজারে এসএমই খাতকে জনপ্রিয় করতে আগামী ২ বছর কোম্পানিগুলোকে লভ্যাংশ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়া এবং আগামী বাজেটে ১৫ শতাংশ করের পরিবর্তে ৫ শতাংশ কর আরোপের প্রস্তাব দেন।

এমআই/জেডএস