এডহক নিয়োগসহ সকস্বাশিসের ৯ দাবি
আগামী ৩০ জুনের মধ্যে এডহক নিয়োগ দেওয়াসহ নয় দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে সরকারি কলেজ স্বাধীনতা শিক্ষক সমিতি (সকস্বাশিস)।
বুধবার (৯ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
বিজ্ঞাপন
সকস্বাশিসের সভাপতি ড. কিষান মোস্তফার সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. শরীফ উদ্দিন আহমেদ, সহ-সভাপতি অজিত কুমার বিশ্বাস, কমল কান্তি রায়, উল্লাসীনি সরকার, এ টি এম আজরফ প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সকস্বাশিসের নির্বাহী সভাপতি মোফাচ্ছের হোসাইন জীবন।
বিজ্ঞাপন
সকস্বাশিস নেতারা বলেন, বর্তমানে সরকারিকৃত কলেজের শিক্ষকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। প্রায় ৭ বছর ধরে ঝুলে আছে সরকারিকরণের কাজ। তিন বার বিভিন্ন জায়গায় যাচাই-বাছাই হয়েছে কাগজপত্র, তারপরও কোনো ফলাফল নেই। এ অবস্থায় মানসিকভাবে শিক্ষকরা এখন অনেকটাই বিপর্যস্ত। তিন শতাধিক কলেজের মধ্যে ৭ বছরে এডহক নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে মাত্র একটি কলেজের। বাকি কলেজগুলোর শিক্ষকদের দ্রুত এডহক নিয়োগের মাধ্যমে সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে না পারলে শিক্ষায় বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।
তারা বলেন, কলেজগুলোতে সরকারি সাইনবোর্ড লেখা দেখে ভর্তি হয়ে শিক্ষার্থীরা বেসরকারি নিয়মে বেতন ও ফি দিচ্ছে। এতে তারা বিভ্রান্তিতে পড়ছেন। এছাড়াও আমাদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষক-কর্মচারী সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা ছাড়াই অবসরে গেছেন।
তারা আরও বলেন, নতুন সরকারি হওয়া স্কুল-কলেজে প্রায় ৭ বছর ধরে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যার কারণে বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সংকট এখন চরমে। ইংরেজি, আইসিটিসহ বিজ্ঞানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে শিক্ষক পদ খালি থাকায় শিক্ষার্থীরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
সকস্বাশিসের দাবিগুলো হচ্ছে-
১. বৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের আগামী ৩০ জুনের মধ্যে এডহক নিয়োগ প্রদান করতে হবে।
২. শিক্ষক-কর্মচারীদের জ্যেষ্ঠতা এবং পেনশনের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানে যোগদানের তারিখ থেকে চাকরির পুরো সময়কাল গণনা করতে হবে।
৩. চাকরির ৮ বছর পূর্তিতে নবম গ্রেড থেকে টাইমস্কেল পেয়ে যারা সপ্তম গ্রেড-এ বেতন-ভাতা পাচ্ছেন তাদের ‘সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষক ও কর্মচারী আত্তীকরণ বিধিমালা, ২০১৮’ এর ৯ ধারা মোতাবেক সপ্তম গ্রেডেই নিয়োগ দিতে হবে।
৪. যেসব কলেজের নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে সেগুলোর শিক্ষকদের ‘সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষক ও কর্মচারী আত্তীকরণ বিধিমালা, ২০১৮’ এর ৮ ধারা মোতাবেক ক্যাডারভুক্তির জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং ‘বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালা ১৯৮১’ এবং ‘বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (সাধারণ শিক্ষা) কম্পোজিশন অ্যান্ড ক্যাডার বিধিমালা ১৯৮০’ অনুসারে পরবর্তীতে চাকরি স্থায়ীকরণ ও পদোন্নতিসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে হবে।
৫. প্রতিষ্ঠান জিও (GO) জারির সময়ে যাদের বয়স ৫৯ এর মধ্যে ছিল তাদের সরকারি যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে।
৬. জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে যেসব কলেজের শিক্ষকদের বিষয়ে মতামত চাওয়া হচ্ছে সেসব শিক্ষকদের ফাইলের ওপর চাওয়া মতামত সর্বোচ্চ ৭ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে এবং অযাচিত মতামত চাওয়া বন্ধ করতে হবে। আংশিক আটকে থাকা শিক্ষকদের ফাইলের কারণে পুরো কলেজের শিক্ষকদের ফাইল আটকে রাখা যাবে না।
৭. বর্তমান জাতীয় পে-স্কেল অনুসারে টাইম স্কেল/সিলেকশন গ্রেড বাদ দিয়ে ১০ বছর চাকরিকাল অতিক্রান্তের পর পরবর্তী গ্রেডে পদোন্নতির বিধান অনুযায়ী সরকারিকৃত কলেজের শিক্ষকদের পদোন্নতি দিতে হবে।
৮. যারা অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে ইনডেক্স নিয়ে যোগদান করেছেন তাদের পূর্বের প্রতিষ্ঠানের সমুদয় চাকরিকাল গণনা করতে হবে।
৯. এনটিআরসিএ’র নিয়ম অনুযায়ী যিনি যে বিষয়ের শিক্ষক পদে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সিলেক্ট হয়েছেন, তাকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষক পদে নিয়োগ সম্পন্ন করতে হবে।
এএজে/এমএইচএস