টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে
দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সুসংহত করতে উচ্চশিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিটি স্তরে সুশাসন ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই।
ইউজিসি সদস্য ও এপিএ (বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি) টিমের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের আজ (সোমবার) জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন (এনআইএস) শীর্ষক প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, দেশে উচ্চশিক্ষা প্রসারের জন্য সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি করা না গেলে শিক্ষার্থীরা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে। ফলে উচ্চশিক্ষা নিয়েও তারা কাঙ্ক্ষিত কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে না। এ অবস্থা এড়াতে এখনই উপযুক্ত পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান কর্মশালায় সূচনা বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইউজিসি সিনিয়র সহকারী পরিচালক ও এনআইএসের বিকল্প ফোকাল পয়েন্ট মো. মামুন।
বিজ্ঞাপন
ইউজিসি সদস্য আরও বলেন, সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমতাভিত্তিক গুণগত শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে ইউজিসি কাজ করে যাচ্ছে। ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করা ও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, একটি দেশের উন্নয়নের জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিগত বছরগুলোতে সরকারের বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। উন্নয়নের এ ধারাকে সুসংহতকরণের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত দেশের কাতারে স্থান করে দিতে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। তাই বিশ্বমানের জনবল তৈরিতে দেশের উচ্চশিক্ষাকে যুগোপযোগী, দক্ষতা ও উদ্দেশ্যমুখী করার কথা তিনি জানান।
দেশের পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে অবশ্যই দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে।
সূচনা বক্তব্যে ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান বলেন, নৈতিকতা, সততা ও আচরণগত মানদণ্ড ঠিক রেখে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেককে দায়িত্ব পালন করতে হবে। তিনি বলেন,স্ব-স্ব কাজ সম্পাদনের ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে পারলেই শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে এসব প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
প্রশিক্ষণের মূল কর্মঅধিবেশনে এপিএ বাস্তবায়ন বিষয়ে বক্তব্য দেন ইউজিসি এপিএ টিমের ফোকাল পয়েন্ট মো. গোলাম দস্তগীর এবং জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল কর্মপরিকল্পনা নিয়ে বিষয়বস্তু উপস্থাপন করেন এপিএ টিমের সদস্য মো. রবিউল ইসলাম।
প্রশিক্ষণের উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন ইউজিসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক ড. দুর্গারানী সরকার, জেনারেল সার্ভিসেস এস্টেট অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক জেসমিন পারভিন, রিসার্চ সাপোর্ট ও পাবলিকেশন বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক নাহিদ সুলতানা, একই বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান ও মো. শাহীন সিরাজ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের উপপরিচালক শাহ মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের উপপরিচালক ড. মো. মহিব্বুল আহসান, অর্থ ও হিসাব বিভাগের উপপরিচালক মোস্তাফিজার রহমান, জেনারেল সার্ভিসেস এস্টেট অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের উপপরিচালক মো. সুলতান মাহমুদ ও মুহাম্মদ মাসুদ হোসেন।
প্রশিক্ষণে ইউজিসির ৪০ জন অতিরিক্ত পরিচালক ও উপপরিচালক এবং সমমানের কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।
এএজে/এনএফ