উচ্চশিক্ষায় প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) শিগগিরই একটি নীতিমালা প্রণয়ন করবে। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পদ্ধতি কী হবে এ নীতিমালায় তার বিস্তারিত দিক তুলে ধরা হবে।

মঙ্গলবার (১৪ জুন) মঞ্জুরি কমিশনের স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং অ্যান্ড কোয়ালিটি এস্যুরেন্স (এসপিকিউএ) বিভাগ আয়োজিত দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়ন সংক্রান্ত দিনব্যাপী এক কর্মশালায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইটি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম. শামিম কায়সার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআর বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পেডিয়াট্রিক নিউরোলজি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. গোপেন কুমার কুন্ডু , ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক মো. ওমর ফারুখ, ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ মনসুর আহমেদ চৌধুরী, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ইংলিশ অ্যান্ড মডার্ন ল্যাঙ্গুয়েজেস বিভাগের প্রভাষক সুমাইয়া তাসনিম হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্লাইন্ড স্টুডেন্টদের প্রশিক্ষক শাহিন আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এসপিকিউএ বিভাগের পরিচালক ড. ফখরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ইউজিসির জ্যেষ্ঠ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

কর্মশালায় ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি বাংলাদেশের সংবিধান, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ও প্রতিবন্ধী সুরক্ষা আইনে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের বিষয়াদি পর্যালোচনা করবে।

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় সুযোগ নিশ্চিত করা এবং কর্মমুখী ও উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় নিয়ে আসার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, এই নীতিমালার মাধ্যমে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা নেওয়ার পথ সুগম হবে।

প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি প্রক্রিয়া সহজ করা, তাদের জন্য বিশেষভাবে পরীক্ষার আয়োজন ও অতিরিক্ত সময় বরাদ্দ দেওয়া, প্রতিবন্ধী সহায়ক অ্যাপস তৈরি ইত্যাদি বিষয় এই নীতিমালায় সংযুক্ত করা হবে বলে তিনি জানান।

কর্মশালায় বক্তারা জানান, বাংলাদেশ ১২ ধরনের প্রতিবন্ধকতা নিয়ে প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে উচ্চশিক্ষা নিতে হয়। প্রতিবন্ধকতা ও নেতিবাচক মানসিকতার কারণে উপযুক্ত মেধা ও যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কাঙ্ক্ষিত সাফল্য থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য একটি পলিসি গঠন করা গেলে উচ্চশিক্ষা নিতে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূর হবে। উপযুক্ত শিক্ষা ও পরিবেশ নিশ্চিত করা গেলে তাদেরকে দক্ষ করে গড়ে তোলা যাবে এবং দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়নে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে।

এএজে/আইএসএইচ